বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩

Temple of Radha Gobinda Jiu, 142 Mahatma Gandhi Road, Burrabazar, Kolkata

 রাধা  গোবিন্দ  জিউর  মন্দির,  ১৪২  মহাত্মা  গান্ধী  রোড,  বড়বাজার,  কলকাতা

                         শ্যামল  কুমার  ঘোষ

            কলকাতার  বড়বাজারের  ফলপট্টির  কাছে  ১৪২,  মহাত্মা  গান্ধী  রোডে  বড়বাজারের  মল্লিক  পরিবারের  শ্রীশ্রী রাধা  গোবিন্দ  জিউর  মন্দির  অবস্থিত।

            সংক্ষিপ্ত  পরিচয় : বড়বাজারের  এই  মল্লিক  বংশের  রাজারামের  পুত্র  দর্পনারায়ণ  মুসলিম  শাসকের  ভয়ে  খুড়তুতো  ভাই  সুখরামকে  সঙ্গে  নিয়ে  হুগলির  ত্রিবেণী  থেকে  কলকাতায়  চলে  আসেন।  তাঁর  একমাত্র  পুত্র  নয়নচাঁদ।  নয়নচাঁদের  তিন  পুত্র :  গৌরচরণ,  নিমাইচরণ  ও  রাধাচরণ।  গৌরচরণের  চার  পুত্র :  বিশ্বম্ভর,  রামলোচন,  জগমোহন  ও  রূপলাল।  মধ্যম  পুত্র  রামলোচনের  স্ত্রী  চিত্রা  দাসী  এই  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  তাঁদের  পুত্র  কাশীনাথ  মল্লিক।  নয়নচাঁদের  মধ্যম  পুত্র  নিমাইচরণ  বড়বাজারে  ১৭৩৬  খ্রিস্টাব্দে  জন্মগগ্রহণ  করেন।  তখন  বড়বাজারের  নাম  ছিল  কমল  নয়নের  বেড়।  এখানে  উল্লেখ্য,  নয়নচাঁদ  ১১৬২  বঙ্গাব্দে ( ১৭৫৫  খ্রিস্টাব্দে )  হুগলি  জেলার  মাহেশে  শ্রী  জগন্নাথ  দেবের  মন্দির  নির্মাণ  করেন  এবং  তাঁর  পুত্র  নিমাইচরণ  ১৮৩৭  খ্রিস্টাব্দে  বিগ্রহের  নিত্য  সেবার  ব্যবস্থা  করেন।  ১৪০৩  বঙ্গাব্দে ( ১৯৯৬  খ্রিস্টাব্দে )  নয়নচাঁদ  মল্লিকের  পৌত্র  রামমোহন  মল্লিকের  স্মৃতির  উদ্দেশ্যে  জগন্নাথ  মন্দিরের  সিংহদ্বার  সংস্কার  করেন  কাশীনাথ  মল্লিকের  সেই  সময়ের  বংশধরগণ।  নয়নচাঁদ  ও  তাঁর  পুত্র  গৌরচরণ  ১৭০৮  শকাব্দে ( ১৭৮৬  খ্রিস্টাব্দে )  নদিয়া  জেলার  কল্যাণীর  রথতলার  কাঞ্চনপল্লীতে  কৃষ্ণরাইয়ের  মন্দির  নির্মাণ  করেন।             

            রাস্তার  উপর  রয়েছে  দুটি  সিংহের  মূর্তি  যুক্ত  একটি  বড়  দ্বার।  দ্বারের  পাশে  একটি  শ্বেতপাথরের  ফলকে  লেখা  রয়েছে  যে  দ্বারটি  সকাল  ৭ টা  থেকে  রাত  ৯ টা  ৩০  মিনিট  পর্যন্ত  খোলা  থাকবে।  কিন্তু  বর্তমানে  এই  দ্বারটি  আর  খোলা  হয়  না।  তার  ডান  পাশে  রয়েছে  আর  একটি  ছোট  দ্বার।  এই  দ্বারটি  দিয়ে  প্রবেশ  করলে  দেখা  যাবে  বেশ  খানিকটা  ফাঁকা  জায়গা।  সেটা  পেরোলে  ডান  দিকে  দেখা  যাবে  একটি  দ্বার।  দ্বারের  মাথায়  আছে  মন্দিরের  প্রতিষ্ঠাফলক।  এই  দ্বার  দিয়ে  ঢুকলে  পড়বে  মন্দির  চত্বর।  মন্দির  চত্বরে  ঢুকলে  সামনে  চোখে  পড়বে  বড়  বড়  থামওয়ালা  ও  কড়ি-বরগাযুক্ত  বিশাল  নাটমন্দির।  তবে  নাটমন্দিরটি  বর্তমানে  জীর্ণ  হয়ে  পড়েছে।  নাটমন্দিরের  ছাদে  শালের  খুঁটি  দিয়ে  ঠেকনা  দেওয়া  হয়েছে।  নাটমন্দিরের  সামনে  মূল  মন্দির।  অল্প  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  পশ্চিমমুখী  মন্দিরটি  দালান  শৈলীর।  গর্ভগৃহের  সামনে  একটি  বড়  অলিন্দ।  ঠাকুর  দালানটি  সুসংস্কৃত।  গর্ভগৃহ  ও  অলিন্দের  মেঝে  পাথরের।  গর্ভগৃহের  সামনে  তিনটি  কলাপসিবল  গেট।  বাঁ  দিকের  গেটের  সামনে  একটি  ধাতুময়  সিংহাসনের  উপর  শ্বেতপাথরের  বলরাম,  অষ্টধাতুর  রেবতী,  নারায়ণ ( শিলা )  ও  লক্ষ্মী ( কুনকে )  বিরাজমান।  মাঝের  গেটের  সামনে  আর  একটি  ধাতুময়  সিংহাসনের  উপর  অষ্টধাতুর  গোবিন্দ  ও  রাধিকা  বিগ্রহ  বিরাজমান।  সিংহাসনের  পায়াগুলোতে  নয়নাভিরাম  সিংহের  মাথা।  সিংহাসনের  নিচে  দুটি  শ্বেতপাথরের  গাই-বাছুরও  খুব  সুন্দর।  ডান  দিকের  গেটের  সামনে  রয়েছে  শ্রীশ্রী  সিংহবাহিনী  মাতার  ফটো।  এখানে  উল্লেখ্য,  এই   শ্রীশ্রী  সিংহবাহিনী  মা  মল্লিকদের  বিভিন্ন  শরিকদের  বাড়িতে  ঘুরে  ঘুরে  পূজিত  হন।  এই  মন্দিরেরও  তিনি  আসেন  পর্যায়ক্রমে।  তাই  অন্যত্র  তোলা  শ্রীশ্রী  সিংহবাহিনী  মাতার  ছবি  এখানে  যুক্ত  করলাম।  আরও  উল্লেখ্য,  ঠাকুর  রামকৃষ্ণ  শ্রীশ্রী  সিংহবাহিনী  মাকে  দেখতে  এই  বাড়িতে  এসেছিলেন।  মন্দির  চত্বরের  উঠানের  মাঝখানে  রয়েছে  একটি  গরুড়  মূর্তি।  এই  গরুড়  মূর্তির  সামনে,  নাটমন্দিরের  বিপরীত  দিকে  একটি  পৃথক  ঘরে  তিনটি  খাটের  একটির  উপর  আছেন  দারু  নির্মিত  জগন্নাথ,  নারায়ণ ( শিলা ),  লক্ষ্মী ( কুনকে ),  পিতলের  সরস্বতী  মূর্তি  ও  একটি  ছোটো  কষ্টিপাথরের  শিবলিঙ্গ।  দ্বিতীয়  খাঠের  উপর  আছেন  দারু  নির্মিত  জগন্নাথ  ও  একটি  কষ্টিপাথরের  রাধা-কৃষ্ণ।  তৃতীয়  খাঠের  উপর  আছেন  দারু  নির্মিত  কানাই-বলাই।  দণ্ডায়মান।  সকল  বিগ্রহের  নিত্য  পূজা  ছাড়াও  মন্দিরে  দোলযাত্রা,  স্নানযাত্রা, রথযাত্রা,  ঝুলন,  জন্মাষ্টমী  ইত্যাদি  অনুষ্ঠানে  বিশেষ  পূজা  অনুষ্ঠিত  হয়।  ইসকনের  প্রতিষ্ঠাতা  শ্রী শ্রী  প্রভুপাদ  ভক্তিবেদান্ত  স্বামী  ছেলেবেলায়  এই  মন্দিরের  কাছেই  থাকতেন  এবং  তখন  তিনি  প্রায়ই  এই  মন্দিরে  আসতেন।  তাই  মন্দিরের  সামনের  দেওয়ালে  তাঁর  একটি  ছবি  টাঙানো  আছে।  

            আগে  যে  প্রতিষ্ঠাফলকের  উল্লেখ  করা  হয়েছে  তা  থেকে  জানা  যায়,  রামলোচন  মল্লিকের  সহধর্মিনী  চিত্রা  দাসী  ১২২৮  বঙ্গাব্দের  ৩০ শে  মাঘ  ( ১৮২১  খ্রিস্টাব্দে )  এই  মন্দির  প্রতিষ্ঠা  করেন।  নাটমন্দিরের  গায়ে  লাগানো  একটি  সংস্কার  ফলক  থেকে  জানা  যায়,  ১৩৯৬  বঙ্গাব্দের  ২৫ শে  বৈশাখ  ( ১৯৮৯  খ্রিস্টাব্দে )  মন্দিরটির  সংস্কার  করা  হয়।

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ১

রাধাগোবিন্দ মন্দিরের প্রতিষ্ঠাফলক

গরুড় মূর্তি ও নাটমন্দির

মন্দিরের সংস্কারফলক

মন্দিরের সামনের  বিন্যাস

বলরাম, রেবতী, নারায়ণ শিলা ও লক্ষ্মী ( কুনকে )

বলরাম, রেবতী, নারায়ণ শিলা ও লক্ষ্মী ( কুনকে )

শ্বেতপাথরের বলরাম ও অষ্টধাতুর রেবতী

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ২

শ্বেতপাথরের গাই-বাছুর ও সিংহাসনের পায়া

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ৩

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ৪

মন্দিরের শ্রীশ্রী সিংহবাহিনী মাতার ছবি

অন্যত্র তোলা শ্রীশ্রী সিংহবাহিনী মাতা

জগন্নাথ, নারায়ণ শিলা ও লক্ষ্মী ( কুনকে ), সরস্বতী ও শিবলিঙ্গ

জগন্নাথ ও কষ্টিপাথরের রাধা-কৃষ্ণ

দারু নির্মিত কানাই-বলাই

মাহেশের মন্দিরের ফলক - ১

মাহেশের মন্দিরের ফলক - ২

কৃষ্ণরাই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাফলক

    সহায়ক  গ্রন্থ :

           ১)  কলকাতার  বাবু  বৃত্তান্ত :  মূল লেখক : লোকনাথ  ঘোষ ( অনুবাদক :  শুদ্ধধন  সেন )

  ----------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

--------------------------------------------------------                    

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩

Dayamayi Durga Temple, Sitaram Ghosh Street, Kolkata

 দয়াময়ী দুর্গা মন্দির, সীতারাম ঘোষ স্ট্রিট,  কলকাতা 

                    শ্যামল কুমার ঘোষ

            মধ্য কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের কাছে ১৪, সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে দয়াময়ী দুর্গা মন্দির অবস্থিত। সাদামাটা মন্দির। দুটি বাড়ির মাঝখানে একটি একটি ছোটো দালান শৈলীর একতলা মন্দির। গর্ভগৃহের সামনে একটি ঢাকা অলিন্দ আছে। অলিন্দের সামনে একটি কলাপসিবল গেট। গর্ভগৃহে ঢোকার একটিই কাঠের দরজা। মন্দিরে পুরোহিত না থাকলে গর্ভগৃহের দরজা খোল  থাকে। কিন্তু কলাপসিবল গেট টানা থাকে যাতে জনসাধারণ বাইরে থেকে মাকে দর্শন করতে পারেন। পুরোহিত উপস্থিত থাকলে কলাপসিবল গেট খোলা থাকে। তখন যাঁরা পুজো দিতে ইচ্ছুক তাঁরা পূজা দিতে পারেন। তবে কাছাকাছি কোনো পুজোর সামগ্রীর দোকান নেই। পুজো দিতে হলে নিজেকেই সব কিছু নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত সকাল ১০ টা পর্যন্ত মন্দিরে পুরোহিত উপস্থিত থাকেন।         

            গর্ভগৃহে শ্বেতপাথরের বেদির উপর কষ্টিপাথরের দয়াময়ী দুর্গা বিরাজিত। দয়াময়ী দুর্গা মূর্তি হল একক দশভুজা মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গামূর্তি। এখানে দুর্গার সঙ্গে তাঁর পুত্রকন্যারা অনুপস্থিত। দেবীর বাহন ঘোড়ামুখো সিংহ। শ্বেত বর্ণের। মহিষাসুরের বর্ণ সবুজ। মূর্তিটি মাঝে মাঝে অঙ্গরাগ করা হয়। গর্ভগৃহে দুর্গা মূর্তির সঙ্গে আছেন নারায়ণ শিলা এবং শিবলিঙ্গ।

            মন্দিরের সামনের উপরের প্রতিষ্ঠাফলক থেকে জানা যায়, মন্দিরটি ১২৫৭ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী নীলকমল মিত্র দাস এবং মন্দিরটির সেবায়েত স্থানীয় ঘোষাল পরিবার। তবে জানা গেল যে বর্তমানে মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষন ও নিত্য পূজার দেখাশোনা করেন মন্দিরের পাশের দত্ত পরিবার। নিত্য পূজা ছাড়াও দুর্গা পূজার সময় বিগ্রহের বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।                    

দয়াময়ী দুর্গা - ১

দয়াময়ী দুর্গা মন্দির

প্রতিষ্ঠাফলক

প্রতিষ্ঠা ও অন্য একটি ফলক 

দয়াময়ী দুর্গা - ২

দয়াময়ী দুর্গা - ৩

            কী ভাবে যাবেন? 

            মহাত্মা গান্ধী রোড ও রাজা রামমোহন সরণির সংযোগস্থলের কাছে রাজা রামমোহন সরণি পোস্ট অফিস। এই পোস্ট অফিসের বিপরীত দিকের রাস্তার উপর একটি শিব মন্দির আছে। এই শিব মন্দিরের পাশের রাস্তার নাম সীতারাম ঘোষ স্ট্রিট। এই রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই পেয়ে যাবেন মন্দির।  

                                         **********

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
        

সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩

Radha Binod Kishore Jiu Temple, 43/3 Raja Rajballav Street, North kolkata

রাধা বিনোদ কিশোর জিউ মন্দির, ৪৩/৩  রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিট, উত্তর কলকাতা

                          শ্যামল কুমার ঘোষ

            উত্তর কলকাতার ৪৩/৩, রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটে রাধা বিনোদ কিশোর জিউ মন্দিরটি অবস্থিত। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণমুখী মন্দিরটি দালান শৈলীর। গর্ভগৃহের সামনে অলিন্দ। অলিন্দটি ঢালাই গ্রিল ও কলাপসিবল গেট দিয়ে ঘেরা। মন্দিরের সামনে একটু জায়গা আছে। তাতে একটি সিংহের মূর্তি। গেট দিয়ে ঢুকলে সামনেই গর্ভগৃহ। গর্ভগৃহের সামনে একটি কলাপসিবল গেট। গর্ভগৃহে একটি কাঠের সিংহাসনে ধাতুময় বিনোদ কিশোর (কৃষ্ণ),  ধাতুময়ী রাধা, ধাতুময় গোপাল, দারু নির্মিত একক জগন্নাথ বিগ্রহ বিরাজমান। পাশের আর একটি সিংহাসনে আরও একটি রাধা-কৃষ্ণ বিগ্রহ বর্তমান। গর্ভগৃহের বাইরের দেওয়ালে শ্বেতপাথরের হনুমান মূর্তি আছে। মন্দিরের সমস্ত বিগ্রহই নিত্য পূজিত।          

          ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের ১৭ই বৈশাখ সোমবার শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে  ( ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১ লা মে ) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন  শ্রীযুক্তেশ্বরী মাতা ঠাকুরাণী। মন্দিরের অলিন্দের বাইরের দিকের বাঁ  দিকে একটি শ্বেতপাথরের প্রতিষ্ঠাফলক লাগানো আছে। শ্রী শ্রী রাধা বিনোদ কিশোর জিউ ট্রাস্ট মন্দিরটি পরিচালনা করেন। 

রাধা বিনোদ কিশোর জিউ মন্দির
( পাশ থেকে তোলা )

রাধা বিনোদ কিশোর জিউ মন্দির
( সামনে থেকে তোলা )

গর্ভগৃহের সামনের বিন্যাস 

গর্ভগৃহের সকল বিগ্রহ 

একক জগন্নাথ 

গোপাল 

আর একটি রাধা-কৃষ্ণ বিগ্রহ 

হনুমান মূর্তি 

বিনোদ কিশোর ( কৃষ্ণ ) ও রাধিকা বিগ্রহ 

প্রতিষ্ঠাফলক 

           কী ভাবে যাবেন ?

            উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড়ে যে পাঁচটি রাস্তা এসে মিলিত হয়েছে তার একটি রাস্তার নাম ভূপেন্দ্র বসু এভেন্যুউ। এই রাস্তা ধরে এগুলে রাস্তাটি যেখানে যতীন্দ্র মোহন এভেন্যুয়ে মিশেছে সেখানে বিবেকানন্দের একটি মূর্তি আছে। এই  মূর্তির একটু আগে ভূপেন্দ্র বসু এভেন্যুয়ের বাঁ দিকে রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটের একটি কাটা অংশ আছে যা মূল রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিট থেকে বিচ্ছিন্ন। এখানে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই ৪৩/৩, রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটে পেয়ে যাবেন কাঙ্খিত মন্দির।  

                                              *******

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩

Annapurna, Bameshwar and Bamdev shib Temples, Raja Rajballav Street, Bagbazar, Kolkata

 মা অন্নপূর্ণা, বামেশ্বর ও বামদেব শিব মন্দির, 

রাজা রাজবল্লব স্ট্রিট, বাগবাজার, উত্তর কলকাতা 

                     শ্যামল কুমার ঘোষ

            উত্তর কলকাতার বাগবাজারের ১৮/ ৮, রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটে অবস্থিত মা অন্নপূর্ণা, বামেশ্বর ও বামদেব নামক শিব মন্দির।  

            মন্দিরের প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করলে বাঁ দিকে দেখা যাবে  তিনটি মন্দির। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণমুখী তিনটি  আটচালা শৈলীর মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। একটি টিনের ছালা  দিয়ে মন্দির তিনটিকে সংযুক্ত করা হয়েছে যেটা মন্দিরের সামনে ও পাশে ঢাকা অলিন্দের কাজ করছে। তিনটি মন্দিরেরই আছে একটি করে প্রবেশদ্বার। মন্দির তিনটির মধ্যে মাঝের মন্দিরের গর্ভগৃহে  কাঠের বাক্সের উপর ধাতুময়ী মা অন্নপূর্ণা উপবিষ্টা। অন্নদানে রতা মাতৃমূর্তি। তাঁর ডান হাতে অন্নদান করার হাতা এবং বাঁ হাতে অন্নপাত্র। দেবীর ডানপাশে দণ্ডায়মান ধাতুময় মহাদেব, কাঁধে রাখা ধাতুর ত্রিশূল, দু হাতে ধরা ভিক্ষাপাত্র। পাশেই রাখা আছে একটি ভিক্ষার ঝুলি। দেবীর নিত্য পূজা ছাড়াও চৈত্র মাসে অন্নপূর্ণা পুজোর সময় বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দু পাশের মন্দিরের মধ্যে বাঁ দিকের মন্দিরের গর্ভগৃহে বামেশ্বর নামক কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ ও ডান দিকের মন্দিরের গর্ভগৃহে বামদেব নামক কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত। উভয় শিবলিঙ্গই নিত্য পূজিত।

           মন্দিরটি ১২৯৯ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় মুখার্জী পরিবার। মন্দিরের প্রবেশ-দ্বারের ডান দিকের দেওয়ালে একটি শ্বেতপাথরের প্রতিষ্ঠাফলক আছে। মন্দিরের ওঠার সিঁড়ির একটি ধাপে হাতে লেখা একটি নাম উল্লেখ আছে শ্রী অঘর চন্দ্র মিস্ত্রি  এবং সাল উল্লেখ আছে ১২৯৯ এবং এটি নিশ্চয় বঙ্গাব্দ। নামটি সম্ভবত মন্দিরের নির্মাতা-কারিগর অথবা সংস্কারের সময়ের মিস্ত্রির। মন্দির তিনটির সামনে টিনের চাল দেওয়া চারিদিক খোলা একটি  নাটমন্দির আছে। মন্দির চত্বর গাছপালা পরিবেষ্টিত ও পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। মন্দিরগুলির আশু সংস্কার প্রয়োজন।          

অন্নপূর্ণা ও মহাদেব মূর্তি - ১

মন্দিরের  প্রবেশ-দ্বার

তিনটি আটচালা মন্দির 

অন্নপূর্ণা মন্দিরের সামনের বিন্যাস 

সিঁড়ির উপর লেখা 

বামেশ্বর শিবলিঙ্গ

বামেদেব শিবলিঙ্গ

অন্নপূর্ণা ও মহাদেব মূর্তি - ২

            কী ভাবে যাবেন?

            উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড়ে যে পাঁচটি  রাস্তা এসে মিলিত হয়েছে তার একটি রাস্তার নাম ভূপেন্দ্র বসু এভেন্যুউ। এই রাস্তা ধরে এগুলে রাস্তাটি যেখানে যতীন্দ্র  মোহন এভেন্যুয়ে মিশেছে সেখানে বিবেকানন্দের একটি মূর্তি আছে। এবার এই মোড়ের ডান দিকে যতীন্দ্র মোহন এভেন্যুউ ধরে একটু এগুলেই বাঁ দিকে পড়বে রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিট। এই রাস্তায় ঢুকে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই পেয়ে যাবেন কাঙ্খিত মন্দির।
                              ******

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
 

শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩

Radha Shyamsundar Jiu Temple, Durga Charan Mukherjee Street, Bagbazar, Kolkata

 রাধা শ্যামসুন্দর জিউ মন্দির,  

দুর্গা চরণ মুখার্জী স্ট্রিট, বাগবাজার, কলকাতা

                     শ্যামল কুমার ঘোষ

            উত্তর কলকাতার বাগবাজারের ক্ষীরোদ প্রসাদ বিদ্যাবিনোদ  এভেন্যুয়ের উপর অবস্থিত সারদা তোরণের কাছে ৩০/১, দুর্গা চরণ  মুখার্জী স্ট্রিটে রাধা শ্যামসুন্দর জিউ মন্দির অবস্থিত।

            বাড়ির প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করলে সামনেই মন্দিরটি দেখা যায়। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত মন্দিরটি  সমতলছাদবিশিষ্ট  একটি দালান শৈলীর একতলা মন্দির। মন্দিরের সামনে আছে অলিন্দ। অলিন্দের নিচে বর্গাকৃতি ছোট ফাঁকা উঠান এবং তাকে  ঘিরে অনেকগুলি ঘর। দোতালা ও তিনতলাতেও নিচের মত ঘর আছে। গর্ভগৃহের দুপাশে দুটি কৃষ্ণলীলার দুটি চিত্র অঙ্কন করা আছে। মন্দিরের সামনের উঠানে চারটি মর্মর মূর্তি আছে। চারটি মূর্তির মধ্যে দুটি মূর্তি মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হরিদাস সাহা ও তাঁর পুত্র বঙ্কু বিহারী সাহার। অপর দুটি মূর্তি হরিদাস সাহা ও তাঁর পুত্র বঙ্কু বিহারী সাহার পত্নী যথাক্রমে মঞ্জরী দাসী ও নবকুমারী দাসীর।      

          ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ১৩ই ফাল্গুন শুক্রবার পূর্ণিমা তিথিতে ( ১৯৩৮  খ্রিস্টাব্দের ২৫শে ফেব্রুয়ারি ) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন  স্বর্গীয় হরিদাস সাহা। মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের বাঁ দিকে একটি  শ্বেতপাথরের প্রতিষ্ঠাফলক আছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে শ্যামসুন্দর ও রাধিকা বিগ্রহ নিত্য পূজিত।

শ্যামসুন্দর ও রাধিকা মূর্তি - ১

মন্দিরের প্রবেশদ্বার  

মন্দিরের গর্ভগৃহ 

কৃষ্ণলীলার চিত্র - ১

কৃষ্ণলীলার চিত্র - ২

প্রতিষ্ঠাফলক 

শ্যামসুন্দর ও রাধিকা মূর্তি - ২

শ্যামসুন্দর ও রাধিকা মূর্তি - ৩

             কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন : 

                             কলকাতার  মন্দির

        ----------------------------------

 রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।