বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬

Gopalji Temple, near Siddheshwari Kali Temple, Ambika Kalna, Purba Bardhaman

গোপালজী  মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী  কালী  মন্দিরের  কাছে, অম্বিকা কালনা, বর্ধমান 

            শ্যামল কুমার  ঘোষ 

            অম্বিকা  কালনায়  সিদ্ধেশ্বরী  মন্দিরের  মোড়ের  কাছে  গোপালজীর  সুদৃশ্য  পঁচিশচূড়া  মন্দির  অবস্থিত।  এটি  কালনার  তিনটি  পঁচিশচূড়া  মন্দিরের  একটি।  মন্দিরের  গর্ভগৃহের  সামনের  দেওয়ালের  উপরে  পাথরের  ফলকে  সাত  সারির  একটি  সংস্কৃত  লিপি  আছে।  কিন্তু   লিপিটির  উপর  রঙের  প্রলেপ  দেওয়াতে  লিপিটির  পাঠ  সহজসাধ্য  হলেও  অক্ষরের  ছাঁদ  ভিন্ন  ধরনের  হওয়ায়  শুদ্ধ  পাঠ  সম্ভব  নয়।  উদ্ধারীকৃত  লিপিটির  পাঠ  হল  :

         'শুভমস্তু  শকাব্দাঃ  ১৬৮৮
         শাকাব্দে  শরভাক্তি   রাত্রিপকলা 
         কোটীর মৃক্তজভূসংখ্যে  বাহুজ
         বংশভুকোমলধীঃ  শ্রীকৃষ্ণচন্দ্রঃ
         সুধীঃ।  প্রসাদম্  প্রদদৌ  বিধিয়া  পর
         যা  ভক্ত্যাপরব্রহ্মণে  গোপালায়  সমস্ত 
         বাঙময়  পথাপ্রীতায়  বিশ্বাত্মনে ।।' 

           অর্থাৎ,  ১৬৮৮  শকাব্দে  ( ১৭৬৬ খ্রীষ্টাব্দে )  বাহুজ  বংশভূ  ( ক্ষত্রিয়  বংশজাত )  শুদ্ধবুদ্ধিসম্পন্ন  শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র  নামক  এক  সুধী  গোপালের  নিমিত্ত  এই  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  এটি  রাজা  তিলকচন্দ্রের  রাজত্বকালে  প্রতিষ্ঠিত  হয়। 

            মন্দিরটি  পূর্বমুখী,  উচ্চ  ভিত্তিবেদির  উপর  প্রতিষ্ঠিত।  মন্দিরের  সামনে  রয়েছে  ত্রিখিলান  অলিন্দ।  তার  সামনে  সন্নিবদ্ধ  রয়েছে  একটি  'একবাংলা '  মণ্ডপ।  মণ্ডপটির  মাথায়  লম্বা  একটি  মটকা  বাঁধা  যা  গ্রাম  বাংলার  খোড়ো  চালের  কথা  মনে  করিয়ে  দেয়।

             মন্দিরটির  প্রথম  তলের  ছাদের  চার  কোণে  যে  খাঁজের  সৃষ্টি  হয়েছে  তাতে  তিনটি  করে,  দুটি  চূড়া  সমমাপে  এগোনো,  মাঝেরটা  একটু  পিছানো,  মোট  ১২ টি  চূড়া  স্থাপিত।  তারপর  বেড়  কমিয়ে  খানিকটা  উপরে  অষ্টকোণাকৃতি  ২য়  তল  সৃষ্টি  করা  হয়েছে।  তার  ছাদে  আটকোণে  মোট  ৮ টি  চূড়া।  এরপর  বেড়ের  উচ্চতা  কমিয়ে  ২য়  তলের  চেয়ে  অপেক্ষাকৃত  কম  উচ্চতায়  ৩য়  তল  সৃষ্টি  করা  হয়েছে।  তার  চার  কোণে  ৪ টি  এবং  মাঝে  একটি  বড়  চূড়া।  অর্থাৎ  চূড়াগুলির  সজ্জা  হচ্ছে  ১২+৮+৪+১ ।  মোট  চূড়ার  সংখ্যা  পঁচিশ  এবং  উপরের  তলের  চূড়া  ধরে  মোট  চারতলা।  এই  চূড়াগুলি  চারকোণা  এবং  তাদের  ছাদ  উঁচু-নিচু  কার্নিসের  বিন্যাসে  কিছুটা  পীড়া  শিখরের  অনুরূপ।  

             মন্দিরের  যে  খাঁজ  থেকে   'একবাংলা '  মণ্ডপ  আরাম্ভ  তার  বাইরের  দু  পাশে  টেরাকোটার  কাজ  একতলার   কার্নিস  পর্যন্ত  উঠে  গেছে।  দেওয়ালের  গায়ে  রয়েছে  টেরাকোটার  ফুলকারি  কাজও।  ভাস্কর্যের  ক্ষেত্রে  'কল্পলতা'  বা  'মৃত্যুলতা'কে  দেওয়ালের  কোণে  বা  গায়ে  খাড়াভাবে  লাগানোই  প্রচলিত  রীতি।  এখানেও  তা  একতলার  কার্নিস  পর্যন্ত  উঠে  গেছে।  মন্দিরের  চারটি  দেওয়ালেই  টেরাকোটার  কাজ  আছে।  'কল্পলতা'  বা  'মৃত্যুলতা'  সম্বন্ধে  জানতে  ক্লিক  করুন :  
                 
                          
            স্থাপত্যের  ক্ষেত্রে  এই  গোপালজীর  পঁচিশচূড়া  মন্দির  এক  অনবদ্ধ  পুরাকীর্তি।  এর  সুচারু  খাঁজকাটা  রত্নগুলির  মধ্যে  এক  অপরূপ  সৌন্দর্য  ফুটে  উঠেছে। মন্দিরের  দেওয়ালে  যেসব  টেরাকোটা  ফলক  আছে  তা  খুবই  আকর্ষণীয়।  অবশ্য  সেই  টেরাকোটার  বেশিরভাগই  নষ্ট  হয়ে  গেছে  বা  নষ্ট  হতে  চলেছে।   দেবদেবী  লীলা  তো  আছেই।  সামাজিক  দৃশ্যের  মধ্যে  আছে  যুদ্ধদৃশ্য,  ইউরোপীয়দের  শ্বাপদ  শিকার,  ঢোলবাদক,  ঢাকবাদক,  দণ্ডায়মান  অবস্থায়  সাহেব  ও  এদেশীয়  স্ত্রীলোকের   মিথুনদৃশ্য, হাতির  উপর  মিথুনদৃশ্য  প্রভৃতি।  

            গর্ভগৃহে  রয়েছে  ১ ফুট  ৬  ইঞ্চির ( ৪৬ সেমি ) গোপাল,  দুটি  কৃষ্ণ  ও  দুটি  রাধার  মূর্তি। সদর  দ্বারের  ঢোকার  মুখের  দুপাশে  রয়েছে  দুটি  পশ্চিমমুখী  আটচালা  শিবমন্দির।   

            এখানে  যে  রথের  টান  হতো  তার  নিদর্শন  স্বরূপ  রয়েছে  একটি  ভাঙা  রথ।  তাছাড়া  মন্দিরের  বাইরে  রয়েছে  রাসমঞ্চ।  মন্দিরে  বিগ্রহের  নিত্যপূজা  ছাড়াও  অন্যান্য  উৎসবও  হয়ে  থাকে।


গোপালজী মন্দির, কালনা

ন্দিরের প্রতিষ্ঠালিপি

মন্দিরের দুটি ইমারতি থাম

মন্দিরে একটি খিলানের কাজ

মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটা বিন্যাস- ১

মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটা বিন্যাস- ২

মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটা বিন্যাস- ৩

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ১

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ২

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ৩

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ৪

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ৫

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ৬

কুলুঙ্গির মধ্যে নিবদ্ধ টেরাকোটা মূর্তি - ৭

মন্দিরের কোণে মৃত্যুলতা

মৃত্যুলতার টেরাকোটা মূর্তি - ১

মৃত্যুলতার টেরাকোটা মূর্তি - ২

মৃত্যুলতার টেরাকোটা মূর্তি - ৩

মৃত্যুলতার টেরাকোটা মূর্তি - ৪

মিথুন মূর্তি - ১

মিথুন মূর্তি - ১

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক  - ১ 

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক - ২

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক - ৩ ( কৃষ্ণ লীলা )


মন্দিরে টেরাকোটার ফলক - ৪

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক - ৫

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক - ৬ ( কৃষ্ণ লীলা )

মন্দিরে টেরাকোটার ফলক  - ১ ( কৃষ্ণ লীলা )


গোপালজী ও অন্যান্য বিগ্রহ

             অম্বিকা  কালনার  এই  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  সকাল  ৮ টা  ৬ মিনিটের  কাটোয়া  লোকাল  বা  হাওড়া  থেকে  কাটোয়া  লোকাল  ধরুন।  ব্যাণ্ডেল  থেকেও  অম্বিকা  কালনা  যাওয়ার  গাড়ি  পাবেন।  স্টেশন  থেকে  রিকশা  বা  টোটোতে  মন্দিরে  পৌঁছে  যান।  নদিয়া  জেলার  শান্তিপুর  থেকেও  গঙ্গা  পেরিয়ে  কালনায়  যেতে  পারেন। 

            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ : ০৩.০৭.২০১৬


   সহায়ক  গ্রন্থাবলি   :
      ১) কালনা  মহকুমার  প্রত্নতত্ত্ব  ও  ধর্মীয়  সংস্কৃতির  ইতিবৃত্ত    বিবেকানন্দ  দাস 
      ২)  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 

 ------------------------------------রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

--------------------------------------------------------

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬

Ananta Basudeb Temple, near Siddheshwari Temple, Ambika Kalna, Bardhaman

অনন্ত  বাসুদেব  মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী  কালী মন্দির,  অম্বিকা  কালনা, বর্ধমান 

                             শ্যামল কুমার ঘোষ 

            সিদ্ধেশ্বরী  কালী  মন্দিরের  অদূরে  রাস্তার  বিপরীতে  অনন্ত  বাসুদেব  মন্দির।  উঁচু  ভিত্তি  বেদির  উপর  প্রতিষ্ঠিত  ইঁটের  তৈরি  'আটচালা'  মন্দির।  মন্দিরটি  দক্ষিণমুখী।  মন্দিরটির  সামনের  দেওয়ালের  কার্নিসের  নিচে  কয়েক  সারির  সংস্কৃত  ভাষার  লিপি  :  

                      ' রসাব্ধিরস  চন্দ্রাঙ্কগণিত্যেব্দে  শকাবধি।
                       চক্রে  বৈকুন্ঠনাথস্য  মন্দিরম্  সুমনোহরম্
                       জগদ্রামস্য  মহিষী  কৃত্তিচন্দ্রনৃপ প্রসু 
                       শ্রী  শ্রী  ত্রিলোকচন্দ্রস্য  নৃপতে র্যা  পিতামহী।।'  
   
            অর্থাৎ  রস = ৬,  অব্দি = ৭, রস = ৬, চন্দ্রাঙ্ক = ১ ।  অঙ্কের  বামাগতি  নিয়মানুসারে,  ১৬৭৬  শকাব্দ  বা  ১৭৫৪  খ্রীষ্টাব্দে  জগৎরাম  রায়ের  মহিষী,  কীর্তিচন্দ্রের  জননী   এবং  রাজা  ত্রিলোকচন্দ্রের  পিতামহী  বৈকুন্ঠনাথের  অতিরমণীয়  এই  মন্দির  নির্মাণ  করলেন। 

             অনন্তবাসুদেবের  মূর্তিটি  কালো  পাথরের  একটি  ফলকে  খোদিত  ভাস্কর্য।  মন্দিরটিতে  এখন  ( ২০১৬ )  সংস্কারের  কাজ  চলছে।  সেজন্য  বাসুদেবের  মূর্তি  ঢাকা  আছে।  শুধু  মুখ  খোলা।  অন্যান্য  মূর্তি  গুলি  সামনের  একটি  মন্দিরে  স্থানান্তরিত। 

            মন্দিরের  সামনে  ত্রিখিলান  অলিন্দ।  খিলানের  উপরে  রয়েছে  নানা  ফুলকারি  নকশা,  রথমধ্যস্থ  শিবলিঙ্গ  ইত্যাদি।   কয়েক  সারি   কুলুঙ্গির  মধ্যে  আছে  নানা  টেরারাকোটা  মূর্তি।  এই  টেরাকোটার   কাজ  ছাদের  বাঁকানো  কার্নিস  পর্যন্ত  উঠে  গেছে।  তবে  বারবার  সংস্কারে  রং  ও  সিমেন্টের  প্রলেপে  টেরাকোটার  অলঙ্করণ  অনেকাংশে  ঢাকা  পড়েছে। 

             অনন্ত  বাসুদেব  মূর্তি  ও  অন্যান্য  দেবদেবীর  মূর্তি  নিত্য  পূজিত।  মন্দিরে  নিত্য  পূজা  ছাড়াও  অন্যান্য  উৎসব  পালিত  হয়। 



অনন্ত  বাসুদেব  মন্দির,  কালনা 
মন্দিরের  সামনের  ত্রিখিলান  বিন্যাস 
মন্দিরের  প্রতিষ্ঠা-লিপি 
মন্দিরের  কোনাচ 
মন্দিরের  উপরের  চারচালা 
মন্দিরের  শিখর -দেশ 
মন্দিরের অন্যান্য  বিগ্রহ - ১
মন্দিরের অন্যান্য  বিগ্রহ - ২
অনন্ত  বাসুদেব  বিগ্রহ 


            অম্বিকা  কালনার  এই  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  সকাল  ৮ টা  ৬ মিনিটের  কাটোয়া  লোকাল  বা  হাওড়া  থেকে  কাটোয়া  লোকাল  ধরুন।  ব্যাণ্ডেল  থেকেও  অম্বিকা  কালনা  যাওয়ার  গাড়ি  পাবেন।  স্টেশন  থেকে  রিকশা  বা  টোটোতে  মন্দিরে  পৌঁছে  যান।  নদিয়া  জেলার  শান্তিপুর  থেকেও  গঙ্গা  পেরিয়ে  কালনায়  যেতে  পারেন। 


    সহায়ক  গ্রন্থাবলি   :
                 ১) কালনা  মহকুমার  প্রত্নতত্ত্ব   ও  ধর্মীয়  সংস্কৃতির  ইতিবৃত্ত    বিবেকানন্দ  দাস 
                 ২)  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 
    

----------------------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

--------------------------------------------------------
      

শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬

Siddheshwari Kali Temple, Ambika Kalna, Purba Bardhaman


শ্রীশ্রী  অম্বিকা  সিদ্ধেশ্বরী  মহামায়া  মন্দির, অম্বিকা  কালনা, পূর্ব  বর্ধমান

                                                           শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            অম্বিকা কালনার  'জোড়বাংলা'  শৈলীর  একমাত্র  মন্দিরটি  হল  শ্রী  শ্রী  অম্বিকা  সিদ্ধেশ্বরী  মহামায়ার।  এই  দেবীকে  অনেকেই  মনে  করেন  যে  ইনি  জৈনদেবী।  আর  তাঁরই  নামানুসারে  হয়  শহর  অম্বিকা  কালনার  নামকরণ।  পূর্বে  'অম্বিকা'  ও  'নিজ  কালনা'  নামে  দুটি  আলাদা  অঞ্চল  ছিল।  পরবর্তী  কালে  স্থান  দুটি  একীকরণ  করে  নাম  হয়  'অম্বিকা-কালনা'।     সাধারণের  কাছে  এই  দেবী  'সিদ্ধেশ্বরী  কালী'  নামে  পরিচিত  হলেও  মন্দিরের  প্রবেশদ্বারের  উপরে  যে  শ্বেতপাথরের  ফলক  লাগানো  আছে  তাতে  দেবীকে  ওই  পূর্বোক্ত  নামেই  অভিহিত  করা  হয়েছে।  প্রতিষ্ঠা  কাল  দেওয়া  আছে  ৬৮৮  শকাব্দ।   ইঁটের  তৈরী,  দক্ষিণমুখী  এই  মন্দিরটি  সিদ্ধেশ্বরী  মোড়ের  কাছে  অবস্থিত।  মন্দিরের  সামনে  একটি  প্রতিষ্ঠা-লিপি  থাকলেও  বার  বার  দেওয়া  রঙের  প্রলেপে  তা  ভীষণ  অস্পষ্ট।  তবে  পূর্বে  উদ্ধারীকৃত  লিপিটির  পাঠ  হল ঃ

         " শুভমস্তু  শকাব্দা  ১৬৬১/২/২৬/৬  শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী  দেবীং  শ্রীযুক্ত  মহারাজা  চিত্রসেন রায়স্য।  মিস্ত্রি  শ্রীরামচন্দ্র " 

             অতএব  লিপি  থেকে  জানা  যায়  যে  রাজা  চিত্রসেন  ১৬৬১  শকাব্দে  ( ১৭৩৯  খ্রীষ্টাব্দে )  এই  মন্দির  প্রতিষ্ঠা  করেন।  মন্দিরের  মিস্ত্রি  ছিলেন  শ্রীরামচন্দ্র।  মন্দিরের  সামনে  ত্রিখিলান  অলিন্দ।  খিলানগুলির  উপরে  আছে  টেরাকোটার  প্রতীক  শিবমন্দির  ও  তার  মধ্যে  শিবলিঙ্গ।  পোড়ামাটির  কয়েকটি  ফুলও  আছে।  কিন্তু  বার  বার  দেওয়া  রঙের  প্রলেপে  টেরাকোটার  কাজ  খুবই  অস্পষ্ট। 

            কথিত  আছে,  অম্বরীশ  ঋষি  বর্তমান  মন্দিরের  অনতিদূরে  পশ্চিমদিকে  অম্বিকা-পুকুর  নামে  কথিত  পুকুরের  এক  কোণে  বটগাছের  তলায়  পাথরের  কুলোর  উপর  জমাটবদ্ধ  একটি  ঘট  পান।  ( কুলো  সমেত  ঘটটি  মন্দিরে  রক্ষিত  আছে। )  জায়গাটি  ছিল  গভীর  অরণ্যে  পরিপূর্ণ।  তিনি  ঐ  ঘটকে  বর্তমান  মন্দির  যে  স্থানে  অবস্থিত  সেখানে  বটগাছের  তলায়  প্রতিষ্ঠা  করে  সাধনা  করেন  এবং  সিদ্ধিলাভ  করেন।  তখন  মূর্তি  ছিল  না।  ৪/৫  পুরুষ  শিষ্য  পরম্পরায়  সেবাকার্য  চলে। শেষ  সাধক  ঈশ্বরীশ।  তিনি  দেবীর  স্বপ্নাদেশে  মূর্তি  তৈরি  করান।  নিমগাছের  একটি  কাষ্ঠখণ্ডেই  মূর্তি  তৈরি।  ছোট  বহরকুলির  গাঙ্গুলীদের  পুকুরপাড়ের  যে  তিনটি  নিমগাছ  ছিল  তার  মাঝেরটি  দিয়ে  কলকাতার  নিমতলায়  দারুশিল্পীকে  দিয়ে  মূর্তি  তৈরি  করানো  হয়  এবং  পঞ্চমুণ্ডির  আসনের  উপর  বসানো  হয়।  এর  পিছনে  ছিল  গঙ্গা  ও  শ্মশান।  এখানে  নরবলির  প্রথা  ছিল।  এখনও নরবলির  বিকল্পে  ডাব  বলি  দেওয়া  হয়।  মূর্তিটি  জীর্ণ  হলে  অম্বিকা-পুকুরে  বিসর্জন  দেওয়া  হয়।  বর্তমান  মূর্তিটি  এবং  মন্দিরটি  দ্বিতীয়  সংস্করণ।  রাজা  চিত্রসেন  প্রতিমা  দর্শন  করতে  এলে  মন্দির থেকে  পাথরের  চাঁই  খসে  পরে।  রাজা  মন্দিরটিকে  সংস্কার  করান।  অনেকে  বলেন  রাজা  নতুন  করে  মন্দির  নির্মাণ  করান।  ঈশ্বরীশের  কোন  শিষ্য  ছিল  না। স্বপ্নাদেশে  তিনি  সাতগাছিয়ার  চাটুজ্জে  বাড়ির  একটি  ছেলেকে  আনেন।  সেই  ছেলেই  ঠাকুর  সেবার  অধিকার  পান। তাই  পদবি  হয়  অধিকারী।  তখন  থেকেই  বংশানুক্রমে  দেবীর  সেবাকার্য  চলে  আসছে।
      
            মন্দিরটি  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  প্রতিষ্ঠিত।  মন্দিরটিতে  উঠবার  জন্য  আটটি  ইঁটের  ঢেউখেলানো  সিঁড়ি  ও  একটি  পাথর  বসানো  সিঁড়ি  আছে।  এই  জোড়বাংলা  রীতির  মন্দিরটির  ভিত্তিক্ষেত্ৰ  ২৭ ফুট  ( ৮.২ মি. ) x  ১০ ফুট ( ৩ মি. )।  ভিত্তিবেদির  উপর  এর  উচ্চতা  ১৫ ফুট  ( ৪.৬ মি. )।  মন্দিরবাড়িটি  পাঁচিল  দিয়ে  ঘেরা।  প্রবেশদ্বারের  মাথায়  রয়েছে  একটি  দণ্ডায়মান সিংহ।  গর্ভগৃহের  প্রবেশদ্বারের  মাথায়ও  রয়েছে  ণ্ডায়মান  জোড়া  সিংহ। যাদের  একটি  করে  পা  উপরে  তোলা। 

            মূর্তিটি  দারুনির্মিত।  চতুর্ভুজা।  দক্ষিণ  দুই  হস্তে  বরাভয়  মুদ্রা।  বামের  ঊর্ধ্বহস্তে  খর্পর,  নিম্নহস্তে  নরমুণ্ড।  দেবীর  বামপদ  এগিয়ে।  তাই  তিনি  বামাকালী।  উচ্চতা  প্রায়  ৫ ফুট  ৬ ইঞ্চি ( ১.৭ মি. )।  দেবী  দারুনির্মিত  হলেও  শিবের  মূর্তিটি  কিন্তু  দারু  নির্মিত  নয়। 

            মা  সিদ্ধেশ্বরীর  প্রতি  বছর  অঙ্গরাগ  হয়। অঙ্গরাগ  শুরু  হয়  বার্ষিকী  পূজার  অর্থাৎ  কার্তিকী  অমাবষ্যার  ১০  দিন  আগে।  তখন  মন্দির  বন্ধ  থাকে।  ঘটে  পুজো  হয়।  ভূতচতুর্দশীতে  অর্থাৎ  দেওয়ালির  আগের  দিন  দেবীর  দিগম্বরী  বেশ  জনসমক্ষে  দেখানো  হয়  সন্ধ্যা  ৭ টা  থেকে  রাত  ১২ টা  পর্যন্ত। তারপর  বস্ত্র  পরিয়ে  হয়  দেবীর  পূজা।  বাৎসরিক  পূজায়  বলিদান  হয়।  পূজা  হয়  তন্ত্র  মতে। 

            মন্দিরের  পূর্ব  দিকে  সারিবদ্ধভাবে  রয়েছে  চারটি  শিবমন্দির।  এদের  মধ্যে  তিনটি  'আটচালা'  রীতির।  এদের  মধ্যে  একটি  প্রতিষ্ঠিত  হয়  ১৬৬৮  শকাব্দে ( ১৭৪৬ খ্রীষ্টাব্দে )।  প্রতিষ্ঠা  করেন  তিলকচন্দ্রের  অমাত্য  রামদেব  নাগ।  রাজা  তিলকচন্দ্রের  মাতা  লক্ষ্মীকুমারী  দেবী  যে  শিবমন্দিরটি  নির্মাণ  করেন  তার  প্রতিষ্ঠাকাল  ১৬৮৫  শকাব্দ  ( ১৭৬৩  খ্রীষ্টাব্দ )। 

            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ০১.০৭.২০১৬ 


মন্দিরের  প্রবেশ-দ্বারের  উপরের  সিংহ  মূর্তি

সিদ্ধেশ্বরী  কালী  মন্দির 

মন্দিরের  সামনের  ত্রিখিলান  বিন্যাস

মন্দিরের  প্রতিষ্ঠাফলক 

গর্ভগৃহের  সামনের  জোড়া  সিংহ

সিদ্ধেশ্বরী  কালী  মাতা - ১

সিদ্ধেশ্বরী  কালী  মাতা - ২

শিবমন্দির 

             
অম্বিকা  কালনার  এই  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  সকাল  ৮ টা  ৬ মিনিটের  কাটোয়া  লোকাল  বা  হাওড়া  থেকে  কাটোয়া  লোকাল  ধরুন।  ব্যাণ্ডেল  থেকেও  অম্বিকা  কালনা  যাওয়ার  গাড়ি  পাবেন।  স্টেশন  থেকে  রিকশা  বা  টোটোতে  মন্দিরে  পৌঁছে  যান।  নদিয়া  জেলার  শান্তিপুর  থেকেও  গঙ্গা  পেরিয়ে  কালনায়  যেতে  পারেন। 

           
    সহায়ক  গ্রন্থাবলি   :
                 ১) কালনা  মহকুমার  প্রত্নতত্ত্ব   ও  ধর্মীয়  সংস্কৃতির  ইতিবৃত্ত    বিবেকানন্দ  দাস 
                 ২)  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায় 

                                            ********
           পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কালী মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 


----------------------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

--------------------------------------------------------

মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬

Shyamray Temple, Shyamray Para, Ambika Kalna, Bardhaman

শ্রী শ্রী  শ্যামরায়  মন্দির, শ্যামরায়  পাড়া, অম্বিকা  কালনা, বর্ধমান

                              শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            সিদ্ধেশ্বরী  মন্দিরের  কাছেই  অনন্ত  বাসুদেব  মন্দির।  অনন্ত  বাসুদেব  মন্দিরের  পশ্চিমে  শ্যামরায়  পাড়া। এই  পাড়াতেই  শ্যামরায়  মন্দির  অবস্থিত।  বিগ্রহের  নামেই  পাড়ার  নামকরণ।  মন্দিরটি  সামান্য  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  উত্তরমুখী,  দালান  মন্দির।  এখানে  প্রতিষ্ঠিত  ঠাকুরের  বেদিতে   যে প্রতিষ্ঠা-লিপি  রয়েছে  তা  হল :

                   শ্রী  শ্রী  শোজয়তি 
 স্ববংশ  স্থাপিত  শ্যামরায়স্য  জীর্ণ  মন্দিরম্ । 
 স্বল্পশিষ্টং  সুসংস্কৃত্য  কুমারেশোজ  দিবংগতঃ ।।
 কুমারেশ  কুমারেনারু  কুমার  শর্ম্মণঃ । 
 শেষকৃত্যং  কৃতং  তস্য  পিতুরক্ষায়  তৃপ্তয়ে  ।। 
    
           অর্থাৎ  কুমারেশ  কুমার  দিব্যধামে  গমন  করেন।  তাঁর  পুত্র  নারু  কুমার  শর্ম্মণঃ  পিতার  শেষকৃত্য  করে  পিতার  তৃপ্তির  জন্য  তাঁরই  বংশের  দ্বারা  স্থাপিত  জীর্ণ  হয়ে  যাওয়া  শ্যামরায়ের  মন্দিরটি  সংস্কার  করেন। 

            মন্দিরের  মাঝের  ঘরে  রয়েছেন  দারুনির্মিত  শ্যামরায়  ও  রাধিকা  মূর্তি।  তাঁর  ডান  পাশে  রয়েছেন  রাম-সীতা  এবং  বাম  পাশে  রয়েছেন  শ্রীকৃষ্ণ,  বলদেব  ও  জগন্নাথ  মূর্তি।  সবই  দারু  নির্মিত।  আগে  তিনটি  ঘরে  মূর্তি  থাকত।  কিন্তু  বর্তমানে  লোকাভাবে  সব  মূর্তিই  এক  ঘরে  রাখা  হয়েছে।  মন্দিরের  বর্তমান  সেবায়তরা  বাঘনাপাড়ার  গোস্বামী  পরিবারের  এক  শাখা।  যার  আদি  পুরুষ  শ্রী  রামচন্দ্র  গোস্বামী  বা  রামাই।  এখানে  উল্লেখ্য,  নিত্যানন্দের  পত্নী  জাহ্নবীদেবীর  পালিত  পুত্র  ছিলেন  রামচন্দ্র  গোস্বামী।  তাঁর  পাট  আছে  বর্ধমানের  বাঘনাপাড়ায়। 

            মন্দিরটি  প্রাচীন।  তবে  প্রাচীন  মন্দিরটির  প্রতিষ্ঠা-লিপি  না  থাকায়  কত  প্রাচীন  তা  জানা  যায়  না।  আগে  রাসের  সময়  শ্যামরায়কে  লালজী  মন্দিরে  নিয়ে  যাওয়া  হত  এবং  অন্যান্য  বিগ্রহের  সঙ্গে  লালজী  মন্দিরের  সামনে  অবস্থিত  রাসমঞ্চে  বসানো  হত।  মন্দিরে  নিত্যপূজা  ছাড়াও  অন্যান্য  উৎসব  হয়ে  থাকে।  মন্দিরের  কাছেই  বর্তমান  সেবায়তদের  মধ্যে   আনন্দ  লাল  গোস্বামী  ও  যমুনা  লাল  গোস্বামী  থাকেন।  মন্দিরটি  বন্ধ  থাকলে  ওই  বাড়িতে  গিয়ে  বললে  ওঁরা  আগ্রহের  সঙ্গে  ঠাকুর  দেখিয়ে  দেবেন।  

শ্রীশ্রী  শ্যামরায়  মন্দির

শ্রীশ্রী  শ্যামরায়  ও  অন্যান্য  বিগ্রহ

সংস্কারের  সময়ের  লিপি

রামচন্দ্র  ও  সীতা  মূর্তি 

কৃষ্ণ, বলদেব  ও  জগন্নাথ  মূর্তি

শ্যামরায়  ও   রাধিকা  মূর্তি - ১

শ্যামরায়  ও   রাধিকা  মূর্তি - ২

রামচন্দ্র  গোস্বামী ( রামাই )

              অম্বিকা  কালনার  এই  মন্দিরে  যেতে  হলে  শিয়ালদহ  থেকে  সকাল  ৮ টা  ৬ মিনিটের  কাটোয়া  লোকাল  বা  হাওড়া  থেকে  কাটোয়া  লোকাল  ধরুন।  ব্যাণ্ডেল  থেকেও  অম্বিকা  কালনা  যাওয়ার  গাড়ি  পাবেন।  স্টেশন  থেকে  রিকশা  বা  টোটোতে  মন্দিরে  পৌঁছে  যান।  নদিয়া  জেলার  শান্তিপুর  থেকেও  গঙ্গা  পেরিয়ে  কালনায়  যেতে  পারেন।

              মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ১৩.০৮. ২০১৬ 

   
    সহায়ক  গ্রন্থ  :
                 ১) কালনা  মহকুমার  প্রত্নতত্ত্ব   ও  ধর্মীয়  সংস্কৃতির  ইতিবৃত্ত    বিবেকানন্দ  দাস  

 ------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন। 

--------------------------------------------------------