গোপীনাথ মন্দির, শ্রীধর বংশীধর রোড, নবাবগঞ্জ, ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
শ্যামল কুমার ঘোষ
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার উত্তর ব্যারাকপুর পৌরসভার অধীন একটি পৌর শহর নবাবগঞ্জ। শিয়ালদহ-নৈহাটি রেলপথে ইছাপুর স্টেশনে নেমে অটো বা টোটোতে এখানে যাওয়া যায়।
নবাবগঞ্জের শ্রীধর বংশীধর রোডে গঙ্গার কাছাকাছি অবস্থিত দুটি রাধাকৃষ্ণের মন্দির আছে। একটি গোপীনাথ মন্দির ও অপরটি রাধাগোবিন্দ মন্দির। এখানে আমরা গোপীনাথ মন্দির নিয়ে আলোচনা করব। এখানে উল্লেখ্য, শ্রীধর বংশীধর রোডটি তৎকালীন বারাসতের ম্যাজিস্ট্রেটের অনুরোধে শ্রীধর মণ্ডল ও বংশীধর মণ্ডল তৈরী করে দিয়েছিলেন।
গোপীনাথ মন্দিরটি সমতল ছাদ বিশিষ্ট, পূর্বমুখী একটি দালান শৈলীর মন্দির। মন্দিরের সামনে অলিন্দ। অলিন্দের সামনে টিনের ছাউনি। মন্দিরের সামনে ফাঁকা উঠোন এবং তাকে ঘিরে চকমিলানো অনেকগুলি ঘর। গোপীনাথজিউর মন্দিরটি বাংলা ১২৫৭ সালের ২৭ শে আষাঢ় স্থানীয় শ্রীধর ও বংশীধর মণ্ডল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। গর্ভগৃহে গোপীনাথ ও রাধিকার যুগল মূর্তি নিত্য পূজিত। গোপীনাথ বিগ্রহ কষ্টিপাথরের ও রাধারানি অষ্টধাতুর। গর্ভগৃহের মেঝে শ্বেতপাথরের। সামনের অলিন্দের মেঝে নকশা কাটা পাথরের। মন্দিরটির আশু সংস্কার প্রয়োজন।
নিত্য পূজা ছাড়াও মন্দিরে অন্যান্য বৈষ্ণব উৎসব পালন করা হয়। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় ঝুলন সমারোহের সঙ্গে পালন করা হয়। উৎসবের সময় মন্দির প্রাঙ্গণে বিভিন্ন মাটির পুতুল দিয়ে প্রদর্শনী করা হয়। যদিও আগের তুলনায় এই উৎসব এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। পূর্বে ঝুলন উৎসব উপলক্ষে গোপীনাথজিউকে কেন্দ্র করে মহা সমারোহ হত। আগে মন্দিরের সামনের রাস্তার দুপাশে একমাস ব্যাপী মেলা বসতো। মন্দিরের প্রবেশদ্বারের ডান দিকের দেওয়ালে স্থাপিত একটি শিলালিপি থেকে জানা যায় যে ইং ১৯০৬ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি ভারতের গভর্নর জেনারেল গিলবার্ট জন এলিয়ট ও তাঁহার পত্নী এই মন্দির পরিদর্শনে আসেন। এর থেকেই বোঝা যায় যে এই মন্দির আগে কত প্রসিদ্ধ ছিল।
কী ভাবে যাবেন ?
শিয়ালদহ- নৈহাটি রেলপথে ইছাপুর স্টেশনে নেমে অটো বা টোটোতে এই মন্দিরে যাওয়া যায়। পলতা স্টেশনে নেমেও যেতে পারেন।
মন্দিরটি পরিদর্শনের তারিখ : ১০.১১.২০২১
গোপীনাথ মন্দিরের সামনে ঝুলনের মাটির মূর্তি |
গোপীনাথ মন্দির, নবাবগঞ্জ |
শ্রীশ্রী গোপীনাথ ও রাধিকা বিগ্রহ - ১ |
শ্রীশ্রী গোপীনাথ ও রাধিকা বিগ্রহ - ২ |
শ্রীশ্রী গোপীনাথ ও রাধিকা বিগ্রহ - ৩ |
সহায়ক গ্রন্থ :
১) পশ্চিমবঙ্গের পূজা-পার্বণ ও মেলা : অশোক মিত্র সম্পাদিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন