শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বর মন্দির, কোটালপুর, জাঙ্গিপাড়া, হুগলি
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথে হরিপাল ১৬ তম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৪৫ কিমি। হরিপাল স্টেশন থেকে হরিপাল-জাঙ্গিপাড়া-জগৎবল্লভপুর রাস্তার উপর একটি গ্রাম সীতাপুর। এই গ্রাম থেকে কিছুটা দূরের একটি গ্রাম কোটালপুর। এই গ্রামে ১৬৯৪ খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বরের ( শালগ্রাম শিলা ) মন্দির উল্লেখযোগ্য।
উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, দক্ষিণমুখী, ত্রিখিলানযুক্ত, টেরাকোটা সমৃদ্ধ মন্দিরটি বর্তমানে পরিত্যক্ত। কিন্তু টেরাকোটার অনেক ফলক এখনও বেশ ভাল অবস্থায় আছে। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোন এক 'হাজারি' উপাধি ধারী ব্যক্তি। তিনি বর্ধমান রাজের সৈন্যবাহিনীতে উচ্চ পদে চাকরি করতেন। সম্ভবত তাঁর অধীনে হাজার সৈন্য ছিল তাই তিনি 'হাজারি' উপাধি পেয়েছিলেন। এই হাজারি বংশে ঘর-জামাই হয়ে এসে ছিলেন ফটিকদাস বাকুলি। পরে এই বাকুলিরাই মন্দিরের সেবায়েত হন। কারণ ফটিকদাসের শ্বশুরের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। ফটিকদাস বাকুলির নাতি প্রবীণ বাসুদেব বাকুলি পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করলেন।
মন্দিরের সামনের দেওয়ালে, খিলানের উপর, স্তম্ভের গায়ে, প্রচুর টেরাকোটার অলংকরণ আছে। এই টেরাকোটার অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু যা অবশিষ্ট আছে তা দেখে বোঝা যায় এই টেরাকোটা উচ্চ শ্রেণীর। 'টেরাকোটা'গুলির মধ্যে রামরাবনের যুদ্ধ, দুর্গা, কালী, হর-গৌরী, লক্ষ্মী-নারায়ণ, মৎস্যাবতার, নারদ ইত্যাদি পৌরাণিক চিত্র, শিবিকায় গমন, সংকীর্তন, কলসি কাঁকে মহিলা, বীরাঙ্গনা ইত্যাদি সামাজিক চিত্র উল্লেখযোগ্য। সরকারের প্রত্নত্বত্ত বিভাগ থেকে মন্দিরটি সংরক্ষণের অনেক বার কথা হয়েছে। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয় নি।
এই মন্দিরের সামনে একটি নতুন মন্দির নির্মিত হয়েছে। পরিত্যক্ত মন্দিরের শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বর ( শালগ্রাম শিলা ) নতুন মন্দিরে অন্যান্য দেবদেবীর সঙ্গে এখন নিত্য পূজিত হন। পুরানো মন্দিরের দরজাটি যেটি বাকুলিদের বাড়িতে গোয়ালঘরের মাচায় দীর্ঘ দিন তোলা ছিল সেটি নতুন মন্দিরে লাগানো হয়েছে। কাঠের দরজাটি সুন্দর সুন্দর মূর্তি ও নকশা খচিত। যদিও রঙের প্রলেপে সেই কারুকার্য অনেকটাই এখন ম্লান।
কোতলপুরের মন্দিরে যেতে হলে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে উঠুন। নামুন হরিপাল স্টেশনে। স্টেশনের পাশ থেকে জগৎবল্লভপুর / বড়গাছিয়া গামী বাসে উঠুন। যদি এই বাস না পান তবে জাঙ্গিপাড়া থানা গামী ট্রেকারে উঠুন। জাঙ্গিপাড়া থানা থেকে বাস বা 'ম্যাজিক' গাড়িতে উঠুন। নামুন সীতাপুর। সেখান থেকে হেঁটে মন্দির।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) হুগলি জেলার পুরাকীর্তি : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথে হরিপাল ১৬ তম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৪৫ কিমি। হরিপাল স্টেশন থেকে হরিপাল-জাঙ্গিপাড়া-জগৎবল্লভপুর রাস্তার উপর একটি গ্রাম সীতাপুর। এই গ্রাম থেকে কিছুটা দূরের একটি গ্রাম কোটালপুর। এই গ্রামে ১৬৯৪ খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বরের ( শালগ্রাম শিলা ) মন্দির উল্লেখযোগ্য।
উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, দক্ষিণমুখী, ত্রিখিলানযুক্ত, টেরাকোটা সমৃদ্ধ মন্দিরটি বর্তমানে পরিত্যক্ত। কিন্তু টেরাকোটার অনেক ফলক এখনও বেশ ভাল অবস্থায় আছে। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোন এক 'হাজারি' উপাধি ধারী ব্যক্তি। তিনি বর্ধমান রাজের সৈন্যবাহিনীতে উচ্চ পদে চাকরি করতেন। সম্ভবত তাঁর অধীনে হাজার সৈন্য ছিল তাই তিনি 'হাজারি' উপাধি পেয়েছিলেন। এই হাজারি বংশে ঘর-জামাই হয়ে এসে ছিলেন ফটিকদাস বাকুলি। পরে এই বাকুলিরাই মন্দিরের সেবায়েত হন। কারণ ফটিকদাসের শ্বশুরের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। ফটিকদাস বাকুলির নাতি প্রবীণ বাসুদেব বাকুলি পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করলেন।
মন্দিরের সামনের দেওয়ালে, খিলানের উপর, স্তম্ভের গায়ে, প্রচুর টেরাকোটার অলংকরণ আছে। এই টেরাকোটার অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু যা অবশিষ্ট আছে তা দেখে বোঝা যায় এই টেরাকোটা উচ্চ শ্রেণীর। 'টেরাকোটা'গুলির মধ্যে রামরাবনের যুদ্ধ, দুর্গা, কালী, হর-গৌরী, লক্ষ্মী-নারায়ণ, মৎস্যাবতার, নারদ ইত্যাদি পৌরাণিক চিত্র, শিবিকায় গমন, সংকীর্তন, কলসি কাঁকে মহিলা, বীরাঙ্গনা ইত্যাদি সামাজিক চিত্র উল্লেখযোগ্য। সরকারের প্রত্নত্বত্ত বিভাগ থেকে মন্দিরটি সংরক্ষণের অনেক বার কথা হয়েছে। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয় নি।
শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বরের মন্দির |
মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান বিন্যাস |
মাঝের খিলানের উপরের কাজ |
এক পাশের খিলানের উপরের কাজ |
অন্য পাশের খিলানের উপরের কাজ |
দুর্গা ও কালী মূর্তি ( খিলানের উপরের কাজ ) |
খিলানের উপরের কাজ ( বড় করে ) |
রাম-লক্ষণ ও অন্যান্য চিত্র |
রাম-লক্ষণ ও অন্য চিত্র |
রাবণ ও অন্যান্য চিত্র |
'শালভঞ্জিকা' ও বামনাবতার |
হর-গৌরী |
রাম-সীতা |
মহিষমর্দিনী |
মৎস্যাবতার |
নারদ |
বিষ্ণু ও গরুড় |
ভিত্তিবেদি সংলগ্ন টেরাকোটার কাজ |
অভিবাদন |
শিবিকায় গমন |
সংকীর্তন |
রণসাজে - ১ |
রণসাজে- ২ |
দ্বারপাল |
শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলা |
ঘোড়-সওয়ার |
কলসি কাঁকে মহিলা |
কেশী বধ ও অশ্বারোহী |
কেশী বধ |
অশ্বারোহী |
বীরাঙ্গনা |
বক রাক্ষস বধ |
মন্দিরের কোনাচ |
এই মন্দিরের সামনে একটি নতুন মন্দির নির্মিত হয়েছে। পরিত্যক্ত মন্দিরের শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বর ( শালগ্রাম শিলা ) নতুন মন্দিরে অন্যান্য দেবদেবীর সঙ্গে এখন নিত্য পূজিত হন। পুরানো মন্দিরের দরজাটি যেটি বাকুলিদের বাড়িতে গোয়ালঘরের মাচায় দীর্ঘ দিন তোলা ছিল সেটি নতুন মন্দিরে লাগানো হয়েছে। কাঠের দরজাটি সুন্দর সুন্দর মূর্তি ও নকশা খচিত। যদিও রঙের প্রলেপে সেই কারুকার্য অনেকটাই এখন ম্লান।
রাজরাজেশ্বর ও অন্যান্য দেবদেবী |
দরজার তক্ষণ-ভাস্কর্য |
কালী ও অন্য চিত্র |
গণেশ ও কার্তিক |
মকরবাহিনী ও অন্য চিত্র |
মহিষমর্দিনী ও অন্য চিত্র |
বৃষবাহন ও অন্য চিত্র |
দধিমন্থন ও অন্য চিত্র |
ব্রম্ভা ও অন্য চিত্র |
অশ্বারোহী |
তীরন্দাজ অন্য চিত্র |
রণসাজে ও অন্য চিত্র |
কোতলপুরের মন্দিরে যেতে হলে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে উঠুন। নামুন হরিপাল স্টেশনে। স্টেশনের পাশ থেকে জগৎবল্লভপুর / বড়গাছিয়া গামী বাসে উঠুন। যদি এই বাস না পান তবে জাঙ্গিপাড়া থানা গামী ট্রেকারে উঠুন। জাঙ্গিপাড়া থানা থেকে বাস বা 'ম্যাজিক' গাড়িতে উঠুন। নামুন সীতাপুর। সেখান থেকে হেঁটে মন্দির।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) হুগলি জেলার পুরাকীর্তি : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
-------------------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
--------------------------------------------
Darun
উত্তরমুছুনDhanyabad.
মুছুনexcellent informative writing
উত্তরমুছুন