ডাকাত  কালী  মন্দির,  সিঙ্গুর,  হুগলি 
             শ্যামল কুমার  ঘোষ 
হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথে হাওড়া থেকে সিঙ্গুর দ্বাদশ রেলস্টেশন। শেওড়াফুলি থেকে তৃতীয় স্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৩৩ কিমি।
প্রাচীনকালে সিঙ্গুর সরস্বতী নদী তীরে মহারাজা সিংহবাহুর রাজধানী সিংহপুর বলে প্রসিদ্ধ ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ অব্দে মহারাজ সিংহবাহু সিংহপুরে রাজত্ব করতেন। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র বিজয়সিংহ পিতার অবাধ্য হওয়ায় পিতা কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে সাতশত যুদ্ধকুশল অনুচর নিয়ে সমুদ্রযাত্রা করেন এবং তাম্রপর্ণি দ্বীপে অবতরণ করে সেখানকার অধিবাসীদের পরাস্ত করে লঙ্কাদ্বীপ অধিকার করেন। তিনি তাম্রপর্ণি বা লঙ্কাদ্বীপ অধিকার করে সেখানকার রাজকন্যাকে বিবাহ করেন এবং সেখানকার রাজা হন। রাজা হওয়ার পর তিনি ওই দ্বীপের নাম রাখেন সিংহল।
সিঙ্গুরের ডাকাত কালীমন্দির দেখতে হলে তারকেশ্বর লোকালে উঠে সিঙ্গুর স্টেশনে নামুন। স্টেশনের দক্ষিণ দিকে এস. এন. মল্লিক রোডে এসে নসিবপুর গামী বাস, অটো বা টোটোতে উঠে ডাকাত কালী মন্দিরে নামুন।
            ডাকাত  কালী  মন্দিরটি  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  প্রতিষ্ঠিত,  দক্ষিণমুখী,  আটচালা  মন্দির।  গর্ভগৃহের  সামনে  ত্রিখিলান  প্রবেশদ্বারযুক্ত  অলিন্দ।  অলিন্দের  সামনে  রোয়াক। গর্ভগৃহে  ঢোকার  একটিই  প্রবেশদ্বার।  আগে  মন্দিরের  সামনের  দিকে  টেরাকোটা  অলংকরণে  অলংকৃত  ছিল।  কিন্তু  এখন  সেই  টেরাকোটার  সামান্যই  অবশিষ্ট  আছে।  মন্দিরের  সামনে  চাঁদনি  আকৃতির  নাটমন্দির  আছে।  মন্দির  চত্বর  পাঁচিল  দিয়ে  ঘেরা। 
বহু পূর্বে ডাকাতির জন্য এই অঞ্চল প্রসিদ্ধ ছিল এবং এই স্থানের ডাকাত-কালীর নিকট প্রতি অমাবস্যায় নরবলি দেওয়া হত। তখন এই অঞ্চলে ডাকাত গগন সর্দারের দাপট ছিল। কথিত আছে, মা সারদা একবার অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন। পথে ডাকাতরা তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। পরে মায়ের মুখে কালীর মুখের প্রতিচ্ছবি দেখে ডাকাতরা ক্ষমা চায়। রাত্রি হয়ে যাওয়ায় মা সারদা ডাকাতদের ডেরায় থাকতে বাধ্য হন। রাতে মা সারদাকে খেতে দেওয়া হয় চাল ও কড়াই ভাজা। তাই কালীপুজোর সময় ভোগে অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে চাল ও কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। সেই প্রথা এখনও চলে আসছে।
গর্ভগৃহে ভীষণ মূর্তি কালী মাতা প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত। ডাকাতরাই এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে। পরে স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটির মোড়লরা এই মন্দির নির্মাণ করে দেন। তাই কালীপুজোর দিন মোড়লদের পুজো আগে হয়। কোন প্রতিষ্ঠাফলক না থাকায় মন্দিরটি কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। সম্ভবত অষ্টাদশ শতাব্দীতে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরের বর্তমান সেবায়েতবৃন্দ : স্বর্গীয় কৃষ্ণধন ব্যানার্জীর দুই পুত্র, স্বর্গীয় কালীপদ চট্টোপাধ্যায়ের দুই পুত্র ও স্বর্গীয় শংকরনাথ সিমলাই- এর দুই পুত্র। এঁরাই পালাক্রমে পূজাকার্য সম্পাদন করেন। এ ছাড়া মন্দিরের উন্নয়ণের জন্য আছে "ডাকাতকালী মন্দির উন্নয়ণ কমিটি"। ডাকাত কালী মন্দিরের রাস্তার বিপরীত দিকে একটি শিবমন্দির আছে। শিবমন্দিরটি কালীমন্দিরের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই মন্দির দেখা শেষ করে অটো করে সিঙ্গুর বা সিঙ্গুরের আগের স্টেশন নসিবপুর আসুন। সেখান থেকে ফিরতি ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরুন।
বহু পূর্বে ডাকাতির জন্য এই অঞ্চল প্রসিদ্ধ ছিল এবং এই স্থানের ডাকাত-কালীর নিকট প্রতি অমাবস্যায় নরবলি দেওয়া হত। তখন এই অঞ্চলে ডাকাত গগন সর্দারের দাপট ছিল। কথিত আছে, মা সারদা একবার অসুস্থ রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন। পথে ডাকাতরা তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। পরে মায়ের মুখে কালীর মুখের প্রতিচ্ছবি দেখে ডাকাতরা ক্ষমা চায়। রাত্রি হয়ে যাওয়ায় মা সারদা ডাকাতদের ডেরায় থাকতে বাধ্য হন। রাতে মা সারদাকে খেতে দেওয়া হয় চাল ও কড়াই ভাজা। তাই কালীপুজোর সময় ভোগে অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে চাল ও কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। সেই প্রথা এখনও চলে আসছে।
গর্ভগৃহে ভীষণ মূর্তি কালী মাতা প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত। ডাকাতরাই এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে। পরে স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটির মোড়লরা এই মন্দির নির্মাণ করে দেন। তাই কালীপুজোর দিন মোড়লদের পুজো আগে হয়। কোন প্রতিষ্ঠাফলক না থাকায় মন্দিরটি কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। সম্ভবত অষ্টাদশ শতাব্দীতে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরের বর্তমান সেবায়েতবৃন্দ : স্বর্গীয় কৃষ্ণধন ব্যানার্জীর দুই পুত্র, স্বর্গীয় কালীপদ চট্টোপাধ্যায়ের দুই পুত্র ও স্বর্গীয় শংকরনাথ সিমলাই- এর দুই পুত্র। এঁরাই পালাক্রমে পূজাকার্য সম্পাদন করেন। এ ছাড়া মন্দিরের উন্নয়ণের জন্য আছে "ডাকাতকালী মন্দির উন্নয়ণ কমিটি"। ডাকাত কালী মন্দিরের রাস্তার বিপরীত দিকে একটি শিবমন্দির আছে। শিবমন্দিরটি কালীমন্দিরের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়।
![]()  | 
| ডাকাত কালী মন্দির ( পূর্ব দিক থেকে তোলা ) | 
![]()  | 
| ডাকাত কালী মন্দির ( সামনে থেকে তোলা ) | 
![]()  | 
| মন্দিরের সামনের বিন্যাস | 
![]()  | 
| মন্দিরের খিলান | 
![]()  | 
| মন্দিরের শিখর দেশ | 
![]()  | 
| ডাকাত কালী মাতা - ১ | 
![]()  | 
| ডাকাত কালী মাতা - ২ | 
![]()  | 
| শিবমন্দির | 
![]()  | 
| শিবমন্দিরে শিবলিঙ্গ ও অন্যান্য বিগ্রহ | 
এই মন্দির দেখা শেষ করে অটো করে সিঙ্গুর বা সিঙ্গুরের আগের স্টেশন নসিবপুর আসুন। সেখান থেকে ফিরতি ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরুন।
            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ২৪.১১.২০১৬ 
সহায়ক গ্রন্থ :
১) হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ ( ৩ য় খণ্ড ) : সুধীর কুমার মিত্র
*********
            পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কালী মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন : 
              সিঙ্গুরের  অন্যান্য  মন্দির  সম্বন্ধে  জানতে  নিচের  লিঙ্কে  ক্লিক  করুন :
----------------------------------------------------------
রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।
 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 
কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন। 
            প্রকাশনীতে বইটি সেরা বইয়ের সম্মান স্বর্ণকলম ২০২৫ পেয়েছে।











কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন