রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

Nistarini Kali Temple / Goho Kali Temple, 11 Brindaban Bose Lane, North Kolkata

 নিস্তারিণী  কালীমন্দির / গোহো  কালীমন্দির,  বৃন্দাবন  বসু  লেন,  উত্তর  কলকাতা 

শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            উত্তর  কলকাতার  হেদুয়া  পার্ক  কে  ডান  দিকে  রেখে  বিধান  সরণি'র  বাঁ  ফুটপাত  ধরে  যদি  আপনি  হাতিবাগানের  দিকে  হাঁটতে  থাকেন  তবে  একটি  প্রসিদ্ধ  তেলেভাজার  দোকান  ( লক্ষ্মীনারায়ণ  সাউ  এন্ড  সন্স )  পড়বে।  এই  দোকানের  পাশের  গলি  বৃন্দাবন  বসু  লেন।  গলিতে  ঢুকে  একটু  এগুলেই  ডান  দিকে  দেখতে  পাবেন  নিস্তারিণী  কালীমন্দির  অর্থাৎ  গোহোদের  কালীমন্দির। 

            উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  দক্ষিণমুখী  মন্দিরটি  দালান  শৈলীর।  গর্ভগৃহের  সামনে  অলিন্দ।  গর্ভগৃহে  কষ্টিপাথরে  নির্মিত  'নিস্তারিণী'  কালীর  বিগ্রহ  শ্বেতপাথরের  সিংহাসনে  প্রতিষ্ঠিত  ও  নিত্য  পূজিত।  মন্দিরটি  ১২৫৭  বঙ্গাব্দে ( ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে )  প্রতিষ্ঠিত  হয়।  প্রতিষ্ঠা  করেন  শিবচন্দ্র  গোহো।  মন্দিরের  সামনে  থামগুলির  ফাঁকে  ফাঁকে  কাঠের  'ঝিলমিল' ( Venetian  blind )  লাগানো  আছে।  মন্দিরের  সামনের  দেওয়ালে  একটি  প্রতিষ্ঠাফলক  আছে।  তাতে  শিবচন্দ্রের  জায়গায়  শিবচরণ *  লেখা  হয়েছে।  মন্দিরের  বাঁ  দিকে  একটি  আটচালা  শিবমন্দির  আছে।  গর্ভগৃহে  'শান্তিনাথ'  নামক  কষ্টিপাথরের  শিবলিঙ্গ  নিত্য  পূজিত। 

            দক্ষিণেশ্বরের  ভবতারিণীর  বিগ্রহ  তৈরি  করেছিলেন  পূর্ব  বর্ধমান  জেলার  কাটোয়া  মহকুমার  অন্তর্গত  দাঁইহাটের  শিল্পী  নবীন  ভাস্কর।  সেই  সময়  তিনি  তিনটি  মূর্তি  তৈরি  করেছিলেন।  প্রথম  যে  মূর্তিটি  তিনি  তৈরি  করেন  তা  'নিস্তারিণী'  নামে  এই  মন্দিরে  ১২৫৭  বঙ্গাব্দে ( ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে )  প্রতিষ্ঠিত  হয়।  দ্বিতীয়  মূর্তিটি  'ব্রহ্মময়ী'  কালী  রূপে  প্রতিষ্ঠিত  হয়  বরানগরের  প্রামাণিক  কালীবাড়িতে  ১২৫৯  বঙ্গাব্দে ( ১৮৫৩ খ্রীষ্টাব্দে )।  প্রতিষ্ঠা  করেন  রামগোপাল  দে  ও  দুর্গাপ্রসাদ  দে।  সম্পর্কে  তাঁরা  ছিলেন  কাকা-ভাইপো।  তৃতীয়  মূর্তিটি  'ভবতারিণী'  নামে  দক্ষিণেশ্বরের  মন্দিরে  ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে  প্রতিষ্ঠিত  হয়।  অনেকে  বলেন,  প্রথম  দুটি  মূর্তি  দক্ষিণেশ্বর  মন্দিরের  গর্ভগৃহের  সঙ্গে  মানানসই  না  হওয়ার  জন্য  রানি  রাসমণি  গ্রহণ  করেন  নি। 

            মন্দিরে  তিন  জন  পুরোহিত  আছেন।  হরপ্রসাদ  চক্রবর্তী,  সোমনাথ  ব্যানার্জী  ও  মনোজ  মুখার্জী।  এঁরা  পুরুষানুক্রমে  মন্দিরে  পূজা  করছেন।  মন্দির  খোলা  থাকার  সময় :

                      সকাল  ৪ টা  ৩০ মিনিট  থেকে  দুপুর  ১২ টা এবং  বিকাল  ৪ টা  ৩০ মিনিট  থেকে  রাত   ৯ টা।  

            মন্দিরে  এখনও  পাঁঠাবলি  প্রথা  চালু  আছে। 

            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ১৬.০৯.২০২১

        * কলকাতার  মন্দির-মসজিদ :  তারাপদ  সাঁতরা

 

গোহো কালীমন্দির 

শান্তিনাথ শিবমন্দির ও গোহো কালীমন্দির 
কাঠের  'ঝিলমিল' ( Venetian  blind )

 প্রতিষ্ঠাফলক

নিস্তারিণী মা - ১

নিস্তারিণী মা - ২

নিস্তারিণী মা - ৩


শান্তিনাথ শিবলিঙ্গ

********

                  পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কালী মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                  কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির

---------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
 
---------------------------------------

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন