রাধাশ্যাম মন্দির, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বঙ্গ
শ্যামল কুমার ঘোষ
মৃন্ময়ী মন্দিরের পূর্ব দিকে, ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত, চারিদিকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা রাধাশ্যাম মন্দিরটি বিষ্ণুপুরের প্রতিষ্ঠালিপিযুক্ত দেবালয়গুলির মধ্যে সর্ব কনিষ্ট। মূল মন্দিরটি ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত হলেও মন্দিরের পাঁচিল, প্রবেশতোরণ, ভোগমণ্ডপ, ভগ্ন নাটমন্দির ও তুলসীমঞ্চ সবই ইঁটের তৈরি। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, দক্ষিণমুখী মন্দিরটি একরত্ন শৈলীর। মন্দিরটি ১৬৮০ শকাব্দে ( ১৭৫৮ খ্রীষ্টাব্দে ) মল্লরাজ চৈতন্য সিংহ কর্তৃক নির্মিত। উল্লেখ্য, অন্য মল্লরাজ কর্তৃক নির্মিত মন্দিরগুলিতে প্রতিষ্ঠাকালে 'মল্লাব্দ' ব্যবহার করা হলেও এ দেবালয়ের প্রতিষ্ঠালিপিতে 'শকাব্দ' ব্যবহার করা হয়েছে।
চৈতন্য সিংহ যখন সিংহাসন লাভ করেন তখন নানা কারণে মল্লরাজ্য ও রাজপরিবারের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। কোম্পানিকে সময়মত রাজস্ব না দিতে পারার অপরাধে কারাবাসও করতে হয়েছে তাঁকে। তাও কৃষ্ণের প্রতি অসীম অনুরাগে তিনি রাধাশ্যাম মন্দিরের মত বিশাল ও ব্যয়বহুল মন্দির প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হয়েছিলেন। মন্দিরটি দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ১২.৫ মিটার ও উচ্চতায় প্রায় ১০.৭ মিটার। পঙ্খের আবরণে ঢাকা পাথরের অলংকরণের জন্য এ দেবালয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাথরের জ্যামিতিক ও ফুলকারি নকশা কাজের প্রাচুর্যও মন্দিরে লক্ষ্য করা যায়। কুলুঙ্গিতে নিবদ্ধ মূর্তি-ভাস্কর্য দেওয়ালের দুপাশে ও কার্নিসের নিচে দেখা যায়। মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান দালানের ভিতরের দেওয়ালও অলংকৃত। এদের মধ্যে রাজসভায় রামসীতা, অনন্তশয্যায় বিষ্ণু ইত্যাদি উল্লেখ্য। যদিও কালের করাল গ্রাসে অনেক ভাস্কর্য ও নকশা আজ ভগ্ন বা নিষ্প্রভ। মন্দিরের পূর্ব ও পশ্চিম দিকেও ত্রিখিলান খোলা দালান ও উত্তরে এক ঢাকা বারান্দা আছে। মন্দিরের সামনে একটি প্রবেশতোরণ আছে। এর উপরেই আছে নহবত মণ্ডপ। মন্দিরের পূর্ব দিকে আছে একটি সুদৃশ্য তুলসীমঞ্চ। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, গর্ভগৃহের সামনের মেঝেতে রাধাগোবিন্দের নাম লেখা একটি পাথরের ফলক।
বিষ্ণুপুরের সব পরিত্যক্ত মল্ল মন্দিরের বিগ্রহ এখন এ মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থান পেয়ে রাধাশ্যাম সহ পূজিত হন। ব্যয় সংক্ষেপের জন্যই এই ব্যবস্থা। মন্দিরটি 'ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ' - এর রক্ষণাধীন।
চৈতন্য সিংহ যখন সিংহাসন লাভ করেন তখন নানা কারণে মল্লরাজ্য ও রাজপরিবারের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। কোম্পানিকে সময়মত রাজস্ব না দিতে পারার অপরাধে কারাবাসও করতে হয়েছে তাঁকে। তাও কৃষ্ণের প্রতি অসীম অনুরাগে তিনি রাধাশ্যাম মন্দিরের মত বিশাল ও ব্যয়বহুল মন্দির প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হয়েছিলেন। মন্দিরটি দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ১২.৫ মিটার ও উচ্চতায় প্রায় ১০.৭ মিটার। পঙ্খের আবরণে ঢাকা পাথরের অলংকরণের জন্য এ দেবালয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাথরের জ্যামিতিক ও ফুলকারি নকশা কাজের প্রাচুর্যও মন্দিরে লক্ষ্য করা যায়। কুলুঙ্গিতে নিবদ্ধ মূর্তি-ভাস্কর্য দেওয়ালের দুপাশে ও কার্নিসের নিচে দেখা যায়। মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান দালানের ভিতরের দেওয়ালও অলংকৃত। এদের মধ্যে রাজসভায় রামসীতা, অনন্তশয্যায় বিষ্ণু ইত্যাদি উল্লেখ্য। যদিও কালের করাল গ্রাসে অনেক ভাস্কর্য ও নকশা আজ ভগ্ন বা নিষ্প্রভ। মন্দিরের পূর্ব ও পশ্চিম দিকেও ত্রিখিলান খোলা দালান ও উত্তরে এক ঢাকা বারান্দা আছে। মন্দিরের সামনে একটি প্রবেশতোরণ আছে। এর উপরেই আছে নহবত মণ্ডপ। মন্দিরের পূর্ব দিকে আছে একটি সুদৃশ্য তুলসীমঞ্চ। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, গর্ভগৃহের সামনের মেঝেতে রাধাগোবিন্দের নাম লেখা একটি পাথরের ফলক।
বিষ্ণুপুরের সব পরিত্যক্ত মল্ল মন্দিরের বিগ্রহ এখন এ মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থান পেয়ে রাধাশ্যাম সহ পূজিত হন। ব্যয় সংক্ষেপের জন্যই এই ব্যবস্থা। মন্দিরটি 'ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ' - এর রক্ষণাধীন।
রাধাশ্যাম মন্দির, বিষ্ণুপুর |
মন্দিরের একরত্ন শিখর |
মন্দিরের প্রবেশতোরণ |
মন্দিরের প্রবেশতোরণের খিলানের উপরের কাজ |
মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান বিন্যাস |
প্রতিষ্ঠাফলক |
বাঁকানো কার্নিসের নিচের কাজ - ১ |
বাঁকানো কার্নিসের নিচের কাজ - ২ |
কুলুঙ্গির মধ্যের কাজ - ১ |
কুলুঙ্গির মধ্যের কাজ - ২ |
শ্রীরামচন্দ্র ও অন্য চিত্র |
শ্রীরামচন্দ্র |
বরাহ অবতার |
ষড়ভুজ গৌরঙ্গ |
বস্ত্রহরণ দৃশ্য |
ভিত্তিবেদি সংলগ্ন কাজ |
ফুলকারি নকশা - ১ |
ফুলকারি নকশা - ২ |
অলিন্দের কাজ - ১ |
অলিন্দের কাজ - ২ |
অনন্তশয্যায় বিষ্ণু |
সিংহাসনে রামসীতা |
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর |
অলিন্দে কুলুঙ্গির কাজ - ১ |
অলিন্দে কুলুঙ্গির কাজ - ২ |
গর্ভগৃহের সামনের মেঝের ফলক |
তুলসী-মঞ্চ |
সহায়ক গ্রন্থ :
১) বাঁকুড়া জেলার পুরাকীর্তি : অমিয়কুমার বন্দোপাধ্যায়
২) মল্লভূম বিষ্ণুপুর : মনোরঞ্জন চন্দ্র
******
******
জয় গুরুদেব
উত্তরমুছুন