গঙ্গেশ্বর জোড় বাংলা শিবমন্দির, বড়নগর, আজিমগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ
শ্যামল কুমার ঘোষ
রানি ভবানী পূর্ব বাংলার ( বর্তমানে বাংলাদেশ ) রাজশাহী জেলার অন্তর্গত ছাতিম গ্রামের আত্মারাম চৌধুরীর কন্যা। তাঁর মাতার নাম জয়দুর্গা। রাজশাহীর ( নাটোর ) জমিদার রাজা রামকান্ত রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রামকান্ত ১১৫৩ বঙ্গাব্দে পরলোকগমন করলে রানি ভবানী তাঁর সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারিণী হয়ে বাংলার জমিদারদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। তাঁর জমিদারির আয় ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা। তার মধ্যে ৭০ লক্ষ টাকা সরকারকে রাজস্ব দিতে হত। বাকি টাকার প্রায় সমস্তটাই তিনি পুণ্যকাজে ব্যয় করতেন। সেই সময় বঙ্গের সমস্ত জমিদারদের মধ্যে নাটোর বংশের আয় ছিল সবচেয়ে বেশি।
মুর্শিদাবাদ জেলার বড়নগর ভাগীরথী নদীর পশ্চিম তীরের একটি গ্রাম। এই গ্রামের ১ কিমি দূরের রেলস্টেশন আজিমগঞ্জ সিটি এবং ২ কিমি দূরের স্টেশন আজিমগঞ্জ জংশন। কলকাতা থেকে আজিমগঞ্জ জংশন ২১৯ কিমি। হাওড়া থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনে গেলে আজিমগঞ্জ জংশনে নামতে হবে। সেখান থেকে টোটোতে আজিমগঞ্জ সিটিতে যাওয়া যায়। শিয়ালদহ থেকে প্যাসেঞ্জার ট্রেনে গেলে আজিমগঞ্জ সিটিতে নামতে পারেন। থাকার জন্য সিটি স্টেশনের পাশে কয়েকটি হোটেল আছে। শিয়ালদহ লালগোলা লাইনের জিয়াগঞ্জ স্টেশনে নেমে গঙ্গা পেরিয়েও বড়নগরে যেতে পারেন।
বড়নগর রানি ভবানীর অতি প্রিয় ছিল। জীবনের শেষ ভাগ তিনি এখানেই অতিবাহিত করেন। সেকালে বড়নগর ছিল মুর্শিদাবাদের বারাণসী। এখানে তিনি বেশ কয়েকটি মন্দির নির্মাণ করেন। তার মধ্যে গঙ্গেশ্বর শিবমন্দিরটি উল্লেখযোগ্য।
প্রায় ভূমিসমতলে অবস্থিত ইঁটের তৈরি 'জোড়বাংলা' মন্দিরটি পশ্চিমমুখী ও ত্রিখিলান প্রবেশপথবিশিষ্ট। দুটি 'দোচালা' বা 'এক বাংলা' জোড়া দিয়ে এ ধরণের মন্দির তৈরি হয় বলে এই স্থাপত্য শৈলীর নাম 'জোড়বাংলা'। মন্দিরের সামনের দোচালাটি পরিদর্শন কক্ষ বা জগমোহন হিসাবে এবং পিছনের দোচালাটি গর্ভগৃহ হিসাবে ব্যবহৃত হোত। এখন অবশ্য সামনের দিকটি খোলা হয় না। মন্দিরের সামনের দিকে গর্ভগৃহে ঢোকার তিনটি দরজা। দক্ষিণ দিকে আর একটি দরজা আছে। মন্দিরের সামনের দেওয়াল টেরাকোটা অলংকারে অলংকৃত। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অল্প টেরাকোটা অলংকার আছে। যদিও কালের করালগ্রাসে অনেক 'টেরাকোটা' ফলক এখন ভগ্ন। 'টেরাকোটা'র বিষয় : রামায়ণের কাহিনী, কৃষ্ণলীলার নানা দৃশ্য ও সমকালীন সমাজচিত্র। সামনের দেওয়ালের বাঁকানো কার্নিসের নিচের এক সারি কুলুঙ্গির মধ্যে 'টেরাকোটা'র কালী মূর্তি আছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে তিনটি শিবলিঙ্গ বিরাজিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মন্দিরটি আনুমানিক ১৭৫৩ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত।
প্রায় ভূমিসমতলে অবস্থিত ইঁটের তৈরি 'জোড়বাংলা' মন্দিরটি পশ্চিমমুখী ও ত্রিখিলান প্রবেশপথবিশিষ্ট। দুটি 'দোচালা' বা 'এক বাংলা' জোড়া দিয়ে এ ধরণের মন্দির তৈরি হয় বলে এই স্থাপত্য শৈলীর নাম 'জোড়বাংলা'। মন্দিরের সামনের দোচালাটি পরিদর্শন কক্ষ বা জগমোহন হিসাবে এবং পিছনের দোচালাটি গর্ভগৃহ হিসাবে ব্যবহৃত হোত। এখন অবশ্য সামনের দিকটি খোলা হয় না। মন্দিরের সামনের দিকে গর্ভগৃহে ঢোকার তিনটি দরজা। দক্ষিণ দিকে আর একটি দরজা আছে। মন্দিরের সামনের দেওয়াল টেরাকোটা অলংকারে অলংকৃত। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অল্প টেরাকোটা অলংকার আছে। যদিও কালের করালগ্রাসে অনেক 'টেরাকোটা' ফলক এখন ভগ্ন। 'টেরাকোটা'র বিষয় : রামায়ণের কাহিনী, কৃষ্ণলীলার নানা দৃশ্য ও সমকালীন সমাজচিত্র। সামনের দেওয়ালের বাঁকানো কার্নিসের নিচের এক সারি কুলুঙ্গির মধ্যে 'টেরাকোটা'র কালী মূর্তি আছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে তিনটি শিবলিঙ্গ বিরাজিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মন্দিরটি আনুমানিক ১৭৫৩ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত।
গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির, বড়নগর, মুর্শিদাবাদ |
মন্দিরের সামনের বিন্যাস |
মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান বিন্যাস |
বাঁ দিকের খিলানের উপরের কাজ |
মাঝের খিলানের উপরের কাজ |
ডান দিকের খিলানের উপরের কাজ |
কৌণিক ভাস্কর্য, সামনের দেওয়াল |
কৌণিক ভাস্কর্য, সামনের দেওয়াল |
কৌণিক ভাস্কর্য, উত্তর দিকের দেওয়াল ( ময়ূর ও সাপ ) |
কৌণিক ভাস্কর্য, উত্তর দিকের দেওয়াল ( ময়ূর ও সাপ ) |
বাঁ দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ |
বনবাসের পথে রাম-লক্ষণ-সীতা, সারথি সুমন্ত্র |
রামকে অযোধ্যায় ফিরিয়ে আনতে ভরত ও শত্রুঘ্ন |
পঞ্চবটি বনে কুটির নির্মাণ |
বাঁ দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ |
তাড়কা বধ ও অন্যান্য চিত্র |
বাঁ দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ (আংশিক ) |
রাম কর্তৃক অহল্যা-উদ্ধার ও অন্য চিত্র |
বাঁ দিকের পূর্ণ স্তম্ভের কাজ |
ডান দিকের পূর্ণ স্তম্ভের কাজ |
নবনারীকুঞ্জর |
ডান দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ |
ডান দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ ( বড় করে ) |
কৃষ্ণের এক আঙুলে গিরিগোবর্ধন ধারণ |
যশোদার দধিমন্থন কালে কৃষ্ণ-বলরামের ননীপাত্রে হস্থপ্রবেশ |
ডান দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ ( বড় করে ) |
উপরে : শিয়াল প্রদর্শিত পথে বাসুদেবের যমুনা অতিক্রমের দৃশ্য ও নিদ্রিত প্রহরীরা
নিচে : শিকার
|
সীতার বিবাহ |
মারীচ বধ |
বাঘের সঙ্গে লড়াই |
কালী |
বিভিন্ন টেরাকোটা চিত্র - ১ |
বিভিন্ন টেরাকোটা চিত্র - ২ |
বিভিন্ন টেরাকোটা চিত্র - ৩ |
বিভিন্ন টেরাকোটা চিত্র - ৪ |
রাম-রাবণের যুদ্ধ ( এখানে রাবণ জোড়হস্থে ) |
যুদ্ধরত রাম |
কালী |
কালী ও অন্য চিত্র |
চতুর্মুখ ব্রহ্মা ও অন্য চিত্র |
চতুর্মুখ ব্রহ্মা |
আর একটি টেরাকোটা চিত্র |
দশভুজা কর্তৃক শিবপূজা |
অমিততেজ পুরুষ |
কৃষ্ণ লীলা - ১ |
কৃষ্ণ লীলা - ২ |
কৃষ্ণ লীলা - ৩ |
রাম-রাবণের যুদ্ধ ( রাম এখানে হনুমানের কাঁধে ) |
রাম কর্তৃক মহিষমর্দিনীর আবাহন |
গর্ভগৃহের মাঝের দরজার উপরে ( শুম্ভ-নিশুম্ভের সঙ্গে চণ্ডীর যুদ্ধ ) |
বড় করে |
নকশা - ১ |
নকশা - ২ |
সহায়ক গ্রন্থ / প্রবন্ধ :
১) মুর্শিদাবাদ-কাহিনী : নিখিলনাথ রায় ----------------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
'অমিততেজ পুরুষ' (তারাপদ সাঁতরা অনুযায়ী) আসলে গন্দাবেরুন্দা। দাক্ষিণাত্যে এই মূরতি যথেষ্ট পাওয়া যায়। টেরাকোটাতেও বেশ কইয়েক জায়গায় আছে। রূপ বিবরণ পাবেন 'শরভ উপনিষদে'এ। এই মন্দিরের একটি খিলানে আছে সহস্রভূজ দুর্গা, টেরাকোটা শুধু নয়, যেকোনো ভাস্কর্যেই এটি বিরল।। কৌণিক ভাস্কর্য গুলির বেশিরভাগ কোনো না কোনো ভায়লা। এর বিবরণ অনেক শিল্পশাস্ত্রেই পাওয়া যায়, যার নানা মুখ। সেই অনুযায়ী নাম।
উত্তরমুছুনএত পরিশ্রম করে photo গুলো সাজিয়েছেন, খুব ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন