রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

Annapurna Temple, Sonadanga, Nadia,West Bengal


অন্নপূর্ণা  মন্দির,  সোনাডাঙা,  নদিয়া 

             শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            শিয়ালদহ-লালগোলা  রেলপথে  সোনাডাঙা   একটি  স্টেশন।  শিয়ালদহ  থেকে  দূরত্ব  ১৩৪  কিমি।  স্টেশন  থেকে  ১.৫  কিমি  পশ্চিমে  অন্নপূর্ণা  মন্দির  অবস্থিত।  ৩৪  নং  জাতীয়  সড়ক  সোনাডাঙার  উপর  দিয়ে  গেছে।  তাই  ৩৪  নং  জাতীয়  সড়ক   ধরেও  এই  গ্রামে  যাওয়া  যায়।    

            অন্নপূর্ণার  মন্দির  স্থানীয়  পূর্বতন  জমিদার  সিংহরায়  বংশের  দ্বারা  প্রতিষ্ঠিত।  মন্দিরটি  অল্প  উঁচু  বর্গাকার  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  পঞ্চচূড়াযুক্ত  দ্বিতল  দালান।  এমন  স্থাপত্য  পশ্চিমবঙ্গে  দ্বিতীয়টি  নেই।  মন্দিরের  সামনে  ও  বাঁদিকে  উপর-নিচে  ত্রিখিলান  অলিন্দ।  ডানদিকের  উপরে  ত্রিখিলান  অলিন্দ।  নিচে  তিনটি  খিলানের  দুটি  ভরাট  করা।  সেখান  দিয়ে  উপরে  যাওয়ায়  সিঁড়ি।  পিছনে  উপর-নিচে  তিনটি  করে  ভরাট-করা  খিলান।   চারপাশের  বাইরের  ও  ভিতরের  দেওয়ালে  প্রচুর  Stucco  মূর্তি  ও  নকশা  উৎকীর্ণ।  এর  বেশির  ভাগ  মূর্তি  ও  নকশা  নষ্ট   হয়ে  গেছে।  কিছু  কিছু  নকশায়  অপটু  হাতে  রং  করায়  সৌন্দর্য  নষ্ট  হয়েছে।  মন্দিরের  অবস্থা  খুবই  খারাপ।  মোহিত  রায়ের  লেখা  'নদীয়া  জেলার  পুরাকীর্তি'  গ্রন্থে  পাই,  মন্দিরটি  ১২৪৯  বঙ্গাব্দে  নির্মিত।  মিস্ত্রী  ছিলেন  প্রাণকৃষ্ণ  দাস।  তবে  তার  কোন  প্রতিষ্ঠা-ফলক  নেই।  সম্ভবত  ১৩০৭  বঙ্গাব্দে   মন্দিরটি  সংস্কার  করা  হয়।  মিস্ত্রি  ছিলেন  রজনী  দাস।  মন্দিরের  গায়ে  একটি  সংস্কার-ফলক  লাগানো   আছে।  আগে  মন্দিরের  দোতালার  গর্ভগৃহে  অষ্টধাতুর  অন্নপূর্ণার  মূর্তি  প্রতিষ্ঠিতা  ছিলেন।  এখন  অন্নপূর্ণার  একটি  ফটো  ও  রাধাকৃষ্ণের  মাটির  মূর্তি  আছে।   স্থানীয়  লোকজনের  কাছে  জানা  গেল,  সিংহরায়  বংশের  লোকজন  এখন  অন্যত্র  বসবাস  করছেন।  তাঁরা  যাবার  সময়  তাঁদের  বিগ্রহ  সঙ্গে  নিয়ে  গেছেন।  স্থানীয়  লোকজন  চাঁদা  তুলে  নিজেদের  মত  করে  মন্দিরটি  সংস্কার  করছেন।  কিন্তু  তাদের  আর্থিক  অবস্থাও  ভাল  নয়।         


অন্নপূর্ণার  মন্দির ( সামনে  থেকে  তোলা )

অন্নপূর্ণার  মন্দির ( বাঁ  দিক  থেকে  তোলা )

মহাদেব  

কালী 

কৃষ্ণ 

বলশালী 

সাহেব 

সৈনিক 

দারোয়ান 

লাস্যময়ী  নারী - ১

লাস্যময়ী  নারী - ২

লাস্যময়ী  নারী - ৩

লাস্যময়ী  নারী - ৪

ফুলের  সাজি  হাতে  মহিলা 

হাতি 

মহিষ 

ঘোড়া 

ভিতরের  দেওয়ালের  নকশা - ১

ভিতরের  দেওয়ালের  নকশা - ২

ভিতরের  দেওয়ালের  নকশা - ৩

খিলানের  উপরের  কাজ

খিলানের  উপরের  নকশা 

সংস্কার-ফলক 

সামনের  দেওয়ালের  নকশা 

খিলানের  পাশের  নকশা

সামনের  খিলানের  উপরের  কাজ 


            মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ : ১৩.০৮.২০১৭

     সহায়ক  গ্রন্থ :

           ১)  নদীয়া  জেলার  পুরাকীর্তি :  মোহিত  রায়  ( তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )   
                     ---------------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।                                                           

বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৭

Bilweshwari Temple and Madanmohan Temple, Bilwagram, Nakashipara, Nadia,West Bengal


বিল্বেশ্বরী ও মদনমোহন মন্দির, বিল্বগ্রাম, নদিয়া 
                                 শ্যামল  কুমার  ঘোষ 
          শিয়ালদহ-লালগোলা রেলপথে বেথুয়াডহরী একটি স্টেশন। শিয়ালদহ থেকে দূরত্ব ১২৮ কিমি। স্টেশন থেকে ৬.৫ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত একটি গ্রাম বিল্বগ্রাম। গ্রামটি নাকাশীপাড়া থানার অন্তর্গত।বেথুয়াডহরী স্টেশন থেকে টোটোতে সহজেই এই গ্রামে যাওয়া যায়। গ্রামটি পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালংকারের জন্মস্থান। ৩৪ নং জাতীয় সড়ক বেথুয়াডহরীর উপর দিয়ে গেছে। তাই ৩৪ নং জাতীয় সড়ক  ধরেও এই গ্রামে যাওয়া যায়।    
           গ্রামটি একদা গঙ্গাতীরবর্তী ছিল।  এখন গঙ্গা অনেকটাই পশ্চিমে সরে গেছে।
          এই গ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন বিল্বেশ্বরী। দুর্গামূর্তির অনুরূপ তাঁর প্রস্তরমূর্তি এক দালান-মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত। মূর্তিটি খুবই ছোটো। বর্তমান মন্দিরটি খুবই সাধারণ মানের এবং অসম্পূর্ণ। বিল্বেশ্বরীর নিত্যপূজা ছাড়াও চৈত্র মাসে, বাসন্তী পূজার সময়, বিল্বেশ্বরীর সর্বজনীন পূজা হয়। মন্দিরে দু-তিনটি বড় পাথর ও কয়েকটি  ভগ্ন শিবলিঙ্গও আছে।


বিল্বেশ্বরী মন্দির, বিল্বগ্রাম, নদিয়া 

বিল্বেশ্বরী ও অন্যান্য বিগ্রহ 

বিল্বেশ্বরী মূর্তি 

          গ্রামে আর একটি দালান মন্দিরে মদনমোহন নামে  খ্যাত কালো পাথরের কৃষ্ণ ও অষ্টধাতুর রাধিকা মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ও নিত্যপূজিত। স্থানীয় পণ্ডিত কালিদাস সিদ্ধান্ত এই মন্দির ও বিগ্রহের প্রতিষ্ঠাতা। মন্দিরটির বহুবার সংস্কার করা হয়েছে। ১৪০৬ বঙ্গাব্দে ডঃ অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায় মন্দিরটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেন। নিত্য পূজা ছাড়াও স্নানযাত্রা, জন্মাষ্টমী, রাসযাত্রা, দোল উৎসব ইত্যাদি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।    

মদনমোহন মন্দির - ১

মদনমোহন মন্দির - ২

মদনমোহন বিগ্রহ - ১

মদনমোহন বিগ্রহ - ২

          একদা, এই গ্রামে বহু সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতের বাস ছিল। এখানকার আদি পণ্ডিত বিষ্ণুদাস ঠাকুরের ২৯ তম পুরুষ পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালংকার এই গ্রামের সন্তান। তাঁর জন্মভিটায় তাঁর স্মৃতিতে একটি স্মারক-স্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। তাঁর জন্মদিনে এখানে সভাদি হয়ে থাকে।

গ্রামটি পরিদর্শনের তারিখ : ১৫.০৮.২০১৭ 


মদনমোহন তর্কালংকারেরস্মারক-স্তম্ভ 

স্মৃতি-ফলক 

 সহায়ক গ্রন্থ :

           ১)  নদীয়া জেলার পুরাকীর্তি : মোহিত রায় ( তথ্য-সংকলন ও গ্রন্থনা )   
                                               
                         ---------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।                               

Gopinath Temple, Dharmada, Nadia,West Bengal


গোপীনাথ  মন্দির,  ধর্মদা,  নদিয়া
                   শ্যামল  কুমার  ঘোষ  

             শিয়ালদহ-লালগোলা  রেলপথে  মুড়াগাছা  একটি  স্টেশন।  শিয়ালদহ  থেকে  দূরত্ব  ১১৭  কিমি।  মুড়াগাছা  স্টেশন  থেকে  ৩  কিমি  পশ্চিমে  অবস্থিত  একটি  গ্রাম  ধর্মদহ  বা  ধর্মদা।  মুড়াগাছার  পরের  স্টেশন  বেথুয়াডহরী  থেকে  টোটোতে  বা  কৃষ্ণনগর  থেকে  বাসেও  এখানে  যাওয়া  যায়। 

            ধর্মদা  প্রাচীন  গ্রাম।  কেউ  বলেন,  ধৰ্ম  নামে  জনৈক  নৃপতির  নামানুসারে  এ  গ্রামের  নাম।  আবার  অনেকে  বলেন,  দেবতা  ধর্মরাজের  নাম  থেকেই   গ্রামের  নাম  হয়েছে  ধর্মদহ  বা  ধর্মদা।  এখানে  নদিয়ারাজের  বৃত্তিভোগী  পণ্ডিতদের  বাস  ছিল।  

            ধর্মদা  বাজার  থেকে  কিছু  দূরে  অবস্থিত  গোপীনাথ  মন্দির।  পুরানো  গোপীনাথের  মন্দির  ১২৫৬ বঙ্গাব্দে  রাজেন্দ্র  বিদ্যাবাগীশ  কর্তৃক  স্থাপিত  হয়  এবং  তিনিই  গোপীনাথের  কষ্টিপাথরের  বিগ্রহটি  প্রতিষ্ঠা  করেন।  সেই  মন্দির   ভগ্ন  হয়ে  গেলে  ১৩৪১  বঙ্গাব্দে  তাঁর  বংশের  দুর্গানাথ  বন্দোপাধ্যায়  নতুন  করে  এই  মন্দির  তৈরী  করেন।

            মন্দিরটি  অল্প  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  প্রতিষ্ঠিত,  দক্ষিণমুখী,  একটি  দালান  মাত্র।  দক্ষিণ  দিকে  দুই-খিলানবিশিষ্ট  ও  পূর্ব  দিকে  চার-খিলানবিশিষ্ট  অলিন্দ  আছে।  গর্ভগৃহে  ঢোকার  দুটি  দরজা,  একটি  দক্ষিণ  দিকে  ও  একটি  পূর্ব  দিকে।  পূর্ব  ও  উত্তর  দিকে  দুটি  করে  জানলা  আছে।  গর্ভগৃহে  একটি  কাঠের  সিংহাসনে  কষ্টিপাথরের  গোপীনাথ  বিগ্রহ  প্রতিষ্ঠিত  ও  নিত্য  পূজিত।  এখানে কৃষ্ণ বিগ্রহ একক। কোন রাধিকা মূর্তি নেই। মন্দিরে  নিত্যপূজা  ছাড়াও  রাস,  দোল  ইত্যাদি  উৎসবও  হয়ে  থাকে।  বর্তমানে  বন্দোপাধ্যায়  বংশের  তিন  শরিক  পালা  করে  গোপীনাথের  সেবাকার্য  করে  থাকেন।                 


গোপীনাথ  মন্দির 

প্রতিষ্ঠা-ফলক 

গোপীনাথ  বিগ্রহ  - ১

গোপীনাথ  বিগ্রহ  - ২

গোপীনাথ  বিগ্রহ ( স্নানের  আগে )

সহায়ক  গ্রন্থ :

           ১)  নদীয়া  জেলার  পুরাকীর্তি :  মোহিত  রায়  ( তথ্য-সংকলন  ও  গ্রন্থনা )
  

           -------------------------------------------

            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           --------------------------------------------


বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭

Shib Temple and Buri Ma Temple, Bahirgachhi,Nadia,West Bengal


শিবমন্দির ও বুড়িমার মন্দির, বহিরগাছি, নদিয়া

শ্যামল কুমার ঘোষ 

            শিয়ালদহ-লালগোলা রেলপথে মুড়াগাছা একটি স্টেশন। শিয়ালদহ থেকে দূরত্ব ১১৭ কিমি। মুড়াগাছা স্টেশন থেকে ৩ কিমি পশ্চিমে বহিরগাছি গ্রাম। মুড়াগাছার পরের স্টেশন বেথুয়াডহরী। সেখান থেকেও টোটোতে ধর্মদা হয়ে এই গ্রামে যাওয়া  যায়। কৃষ্ণনগর থেকে বাসেও যেতে পারেন।     

            বহিরগাছি ছিল নদিয়ারাজাদের গুরুর গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে মৃতপ্রায় নদী গুড়গুড়িয়া বা গুড়গুড়ে প্রবাহিত। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র এই নদী পথে গুরুগৃহে আসতেন। রঘুনাথ সিদ্ধান্তবাগীশ ছিলেন নদিয়ারাজ রুদ্র রায়ের গুরুদেব। পণ্ডিত রামভদ্র ন্যায়ালংকার ছিলেন নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের গুরু। তাঁদের আদি নিবাস ছিল যশোহর জেলার সারল গ্রামে। কৃষ্ণনগর থেকে সারল গ্রামের দূরত্বের জন্য মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগরের কাছে, বহিরগাছি গ্রামে, গুরুদেবের জন্য বাসগৃহ, দ্বাদশ শিবমন্দির, দেবালয় ইত্যাদি নির্মাণ করে দেন। 

            বারোটি শিবমন্দিরের মধ্যে এখন একটি চারচালা মন্দির অবশিষ্ট আছে। বহুবার সংস্কৃত এই মন্দিরের সামনে খিলানের উপর সামান্য কাজ আছে। মন্দিরের মধ্যে কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ নিত্যপূজিত। ভট্টাচার্য পাড়ায় এই পণ্ডিত বংশের বিভিন্ন শরিকদের গৃহে পুরানো পুঁথি ও অন্যান্য পুৱাবস্তু আজও বর্তমান। 


শিবমন্দির 

খিলানের উপরের কাজ 

মন্দিরের শিবলিঙ্গ 


            বহিরগাছি গ্রামের গ্রাম্য দেবী বুড়িমা। বুড়িমা কালীরই এক রূপ। বটগাছের নিচে  তাঁর বেদি। পাশেই তাঁর মন্দির। বুড়িমা খুব জাগ্রত দেবী। মাঘ মাসের শেষে খুব ধুমধামের সঙ্গে ব্যৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। 


বুড়িমার নতুন মন্দির 

বুড়িমা 

সহায়ক গ্রন্থ :

           ১)  নদীয়া জেলার পুরাকীর্তি : মোহিত  রায় ( তথ্য-সংকলন ও গ্রন্থনা )

                    --------------------------

            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।                                                                   

সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

Dolmancha of Radhagobinda Jiu, Gurbari, Hooghly, West Bengal


রাধাগোবিন্দের  দোলমঞ্চ,  গুড়বাড়ি,  হুগলি 

শ্যামল  কুমার  ঘোষ


            হাওড়া-বর্ধমান  কর্ড  লাইনে  গুড়াপ  একটি  রেলস্টেশন।  হাওড়া  থেকে  গুড়াপ  ১৮  তম  রেলস্টেশন। রেলপথে  হাওড়া  থেকে  দূরত্ব  ৫৭.৪  কিমি।  গুড়াপ  স্টেশন  থেকে  বাসে  মৌবেশ হয়ে  গুড়বাড়ি  যেতে  হয়।   

             গুড়বাড়ি  গ্রামে  শ্রীশ্রী  রাধাগোবিন্দ  জিউর  বিরাট  মন্দির  ও  দোলমঞ্চ  খুবই  দর্শনীয়।  ১৭১১  শকাব্দে ( ১৭৮৯ খ্রীষ্টাব্দে )  রামনারায়ণ  চৌধুরী  এই  দুটি  প্রতিষ্ঠা  করেন।  বীরভূম  জেলার  কেন্দুবিল্বের  নিকট  সেনপাহাড়ি  গ্রাম  থেকে  এঁরা  এখানে  এসেছিলেন। এই  বংশের  নিধিরাম  রায়  সম্রাট  আকবরের  কাছ  থেকে  চৌধুরী  উপাধি  পান।  তিনি  চার-পাঁচটি  ভাষায়  পারদর্শী  ছিলেন।  তিনি  প্রভূত  সম্পত্তি  রেখে  যান।  রায়চৌধুরীদের  দুটি  বাড়িতে  দুটি  মন্দির।  বড়  বাড়িতে  রামনারায়ণ  প্রতিষ্ঠিত  রাধাগোবিন্দ  ও  ছোট  বাড়িতে  ইন্দ্রনারায়ণ  প্রতিষ্ঠিত  লক্ষ্মীনারায়ণের  মন্দির।  'টেকনো  ইণ্ডিয়া'র  সত্তম  রায়চৌধুরী  ছোট  বাড়ির  বংশধর।  

            রাধাগোবিন্দের  মন্দির  পাঁচ  খিলান  বিশিষ্ট  একটি  দালান।  এই  মন্দিরের  বিবরণ  আগেই  দিয়েছি।  মন্দিরের  বাইরে  আছে  রাধাগোবিন্দের  দোলমঞ্চ।  দোলমঞ্চটি  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত।  উপরে  ওঠার  বাঁকানো  সিঁড়ি।  অষ্টকোণ  ও  আটটি  খিলানযুক্ত।  দোলমঞ্চের  বাইরে  দুই  খিলানের  মধ্যবর্তী  অংশে,  খিলানের  উপরে,  কার্নিশের  নিচে,  স্তম্ভে  ও  ভিতরের  খিলানের  উপরে  অপূর্ব  পঙ্খের  কাজ  আছে।  এমন  সুন্দর  পঙ্খের  কাজযুক্ত  দোলমঞ্চ   কালের  করাল  গ্রাসে  আজ  ধ্বংসের  পথে।  বড়  বাড়ির  এক  প্রতিনিধির  সঙ্গে  আমার  দেখা  হয়ে  ছিল।  তাঁরা  আর্থিক  কারণে  দোল  মঞ্চটির  সংস্কার  করতে  অপারক,  কারো  হাতে  তুলে  দিতে  চান।  রাধাগোবিন্দ  মন্দির  ও  বিগ্রহের  ভার  ইতিমধ্যে  ওঙ্কার  সেবক  সংঘের  হাতে  অর্পণ  করেছেন।

            দোলমঞ্চটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ২১.০৩.২০১৭

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ

রাধাগোবিন্দের  দোলমঞ্চ

দোলমঞ্চের  শিখর

দোলমঞ্চের  মাঝের  অংশের  বিন্যাস

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ - ১

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ - ২

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ - ৩

খিলানের  উপরের  কাজ

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ - ৪

দোলমঞ্চে  পঙ্খের  কাজ - ৫

দোলমঞ্চে  ভিতরের  খিলানের  কাজ 


সহায়ক  গ্রন্থাবলী :
         ১)  হুগলি  জেলার  পুরাকীর্তি :  নরেন্দ্রনাথ  ভট্টাচার্য 
        )  হুগলি  জেলার  দেব  দেউল  :  সুধীর  কুমার  মিত্র

          -------------------------------------------

            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।

           --------------------------------------------