অন্নপূর্ণা মন্দির, সোনাডাঙা, নদিয়া
শ্যামল কুমার ঘোষ
শিয়ালদহ-লালগোলা রেলপথে সোনাডাঙা একটি স্টেশন। শিয়ালদহ থেকে দূরত্ব ১৩৪ কিমি। স্টেশন থেকে ১.৫ কিমি পশ্চিমে অন্নপূর্ণা মন্দির অবস্থিত। ৩৪ নং জাতীয় সড়ক সোনাডাঙার উপর দিয়ে গেছে। তাই ৩৪ নং জাতীয় সড়ক ধরেও এই গ্রামে যাওয়া যায়।
অন্নপূর্ণার মন্দির স্থানীয় পূর্বতন জমিদার সিংহরায় বংশের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। মন্দিরটি অল্প উঁচু বর্গাকার ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, পঞ্চচূড়াযুক্ত দ্বিতল দালান। এমন স্থাপত্য পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয়টি নেই। মন্দিরের সামনে ও বাঁদিকে উপর-নিচে ত্রিখিলান অলিন্দ। ডানদিকের উপরে ত্রিখিলান অলিন্দ। নিচে তিনটি খিলানের দুটি ভরাট করা। সেখান দিয়ে উপরে যাওয়ায় সিঁড়ি। পিছনে উপর-নিচে তিনটি করে ভরাট-করা খিলান। চারপাশের বাইরের ও ভিতরের দেওয়ালে প্রচুর Stucco মূর্তি ও নকশা উৎকীর্ণ। এর বেশির ভাগ মূর্তি ও নকশা নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কিছু নকশায় অপটু হাতে রং করায় সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। মন্দিরের অবস্থা খুবিই খারাপ। মোহিত রায়ের লেখা 'নদীয়া জেলার পুরাকীর্তি' গ্রন্থে পাই, মন্দিরটি ১২৪৯ বঙ্গাব্দে নির্মিত। মিস্ত্রী ছিলেন প্রাণকৃষ্ণ দাস। তবে তার কোন প্রতিষ্ঠা-ফলক নেই। সম্ভবত ১৩০৭ বঙ্গাব্দে মন্দিরটি সংস্কার করা হয়। মিস্ত্রি ছিলেন রজনী দাস। মন্দিরের গায়ে একটি সংস্কার-ফলক লাগানো আছে। আগে মন্দিরের দোতালার গর্ভগৃহে অষ্টধাতুর অন্নপূর্ণার মূর্তি প্রতিষ্ঠিতা ছিলেন। এখন অন্নপূর্ণার একটি ফটো ও রাধাকৃষ্ণের মাটির মূর্তি আছে। স্থানীয় লোকজনের কাছে জানা গেল, সিংহরায় বংশের লোকজন এখন অন্যত্র বসবাস করছেন। তাঁরা যাবার সময় তাঁদের বিগ্রহ সঙ্গে নিয়ে গেছেন। স্থানীয় লোকজন চাঁদা তুলে নিজেদের মত করে মন্দিরটি সংস্কার করছেন। কিন্তু তাদের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) নদীয়া জেলার পুরাকীর্তি : মোহিত রায় ( তথ্য-সংকলন ও গ্রন্থনা )
-------------------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
--------------------------------------------
খুব সুন্দর একটা মন্দিরের খোঁজ দিলেন, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ।
মুছুন