শ্রী শ্রী বিশ্বমোহন জিউ মন্দির, গোস্বামী ভট্টাচার্য লেন, শান্তিপুর, নদিয়া
শ্যামল কুমার ঘোষ
শান্তিপুরের সর্বশ্রেষ্ঠ পণ্ডিতবর্গের অন্যতম রাধামোহন গোস্বামী ভট্টাচার্য বিদ্যাবাচস্পতি ছিলেন ষড়্দর্শনে পণ্ডিত। তিনি ছিলেন অদ্বৈতপুত্র বলরামের পুত্র মধুসূদনের বংশধর এবং অদ্বৈতাচার্য থেকে অধস্তন সপ্তম পুরুষ।
তিনি নাটোরের মহারাজ বিশ্বনাথ রায়ের সভায় সমস্ত ভারতবর্ষ থেকে আগত দিগ্বিজয়ী পণ্ডিতবর্গকে পরাজিত করেন এবং ব্রাহ্মণ নৃপতিকে শ্রীকৃষ্ণ মন্ত্রে দীক্ষিত করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, মহারাজ পূর্বে শাক্তধর্মাবলী ছিলেন। মহারাজ বিশ্বনাথ রানী ভবানীর পৌত্র এবং নাটোর রাজবংশের 'বড় তরফের' প্রবর্তক। মহারানী নতুন ধর্ম গ্রহণে অস্বীকার করে শ্বশুরদত্ত সম্পতি নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়নগরে গঙ্গাবাসচ্ছলে গিয়ে বাস করেন। তখন মহারাজ মহারানী কৃষ্ণমণিকে বিবাহ করেন। কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে বিশ্বনাথ এক কৃষ্ণ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষ্ণমণি বিশ্বনাথের 'বিশ্ব' ও রাধামোহনের 'মোহন' নিয়ে কৃষ্ণ বিগ্রহের নাম রাখেন বিশ্বমোহন।
রাধামোহন গোস্বামীর পৌত্র হরিনারায়নণ গোস্বামীও ছিলেন নাটোর রাজবংশের গুরু। মহারাজ বিশ্বনাথ ও মহারানি কৃষ্ণমণি শান্তিপুরে আসেন এবং শ্রীশ্রী বিশ্বমোহন জিউকে সেবাকার্য চালানোর জন্য দান করেন। হরিনারায়ণ মহারানি কৃষ্ণমণির সহায়তায় শান্তিপুরের গোস্বামী ভট্টাচার্য লেনের নিজের বাড়িতে শ্রীশ্রী বিশ্বমোহন জিউকে প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিগ্রহ একটি দালান মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত। বিগ্রহের নিত্য পূজা ছাড়াও রাসোৎসব সহ অন্যান্য বৈষ্ণব-পার্বণ এখানে পালন করা হয়।
শ্রীশ্রী বিশ্বমোহন জিউ মন্দির |
শ্রীশ্রী বিশ্বমোহন জিউ ও রাধিকা বিগ্রহ |
শান্তিপুরের শ্রী শ্রী বিশ্বমোহন বিগ্রহ দেখতে হলে শিয়ালদহ থেকে শান্তিপুর লোকাল ধরুন। রেলপথে শান্তিপুরের দূরত্ব ৯৩ কি মি। ট্রেনে সময় লাগে আড়াই ঘন্টা। স্টেশন থেকে রিকশায় বা টোটোতে পৌঁছে যান গোস্বামী ভট্টাচার্য লেন।
সহায়ক গ্রন্থাবলি :
১. শান্তিপুর - পরিচয় ( ২ য় ভাগ ) : কালীকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
২. রাসোৎসব - ২০১৫ উপলক্ষে শান্তিপুর বিগ্রহবাড়ি সমন্বয় সমিতি কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকা সহায়ক গ্রন্থাবলি :
১. শান্তিপুর - পরিচয় ( ২ য় ভাগ ) : কালীকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
-------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।