বুধবার, ১ মে, ২০১৯

Western Side Temple of Char Bangla Temple, Baranagar, Azimganj, Murshidabad


পশ্চিম  দিকের  মন্দির,  চার  বাংলা  মন্দির  চত্বর,  বড়নগর,  আজিমগঞ্জ,  মুর্শিদাবাদ 

                 শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

             রানি  ভবানী  পূর্ব  বাংলার  ( বর্তমানে  বাংলাদেশ )  রাজশাহী  জেলার  অন্তর্গত  ছাতিম  গ্রামের  আত্মারাম  চৌধুরীর  কন্যা।  তাঁর  মাতার  নাম  জয়দুর্গা।  রাজশাহীর ( নাটোর )  জমিদার  রাজা  রামকান্ত  রায়ের  সঙ্গে  তাঁর  বিয়ে  হয়।  রামকান্ত  ১১৫৩  বঙ্গাব্দে  পরলোকগমন  করলে  রানি  ভবানী  তাঁর  সমস্ত  সম্পত্তির  উত্তরাধিকারিণী  হয়ে  বাংলার  জমিদারদের  মধ্যে  শ্রেষ্ঠ  স্থান  অধিকার  করেন।  তাঁর  জমিদারির  আয়  ছিল  প্রায়  দেড়  কোটি  টাকা।  তার  মধ্যে  ৭০  লক্ষ  টাকা  সরকারকে  রাজস্ব  দিতে  হত।  বাকি  টাকার  প্রায়  সমস্তটাই  তিনি  পুণ্যকাজে  ব্যয়  করতেন।  সেই  সময়  বঙ্গের  সমস্ত  জমিদারদের  মধ্যে  নাটোর  বংশের  আয়  ছিল  সবচেয়ে  বেশি

              মুর্শিদাবাদ  জেলার  বড়নগর  ভাগীরথী  নদীর  পশ্চিম  তীরের  একটি  গ্রাম।  এই  গ্রামের  ১  কিমি  দূরের  রেলস্টেশন  আজিমগঞ্জ  সিটি  এবং  ২  কিমি  দূরের  স্টেশন  আজিমগঞ্জ  জংশন।  কলকাতা  থেকে  আজিমগঞ্জ  জংশন  ২১৯  কিমি।  হাওড়া  থেকে  এক্সপ্রেস  ট্রেনে  গেলে  আজিমগঞ্জ  জংশনে  নামতে  হবে।  সেখান  থেকে  টোটোতে   আজিমগঞ্জ  সিটিতে  যাওয়া  যায়।  শিয়ালদহ  থেকে  প্যাসেঞ্জার  ট্রেনে  গেলে  আজিমগঞ্জ  সিটিতে  নামতে  পারেন।  থাকার  জন্য  সিটি  স্টেশনের  পাশে  কয়েকটি  হোটেল  আছে।  শিয়ালদহ-লালগোলা  লাইনের  জিয়াগঞ্জ  স্টেশনে  নেমে  গঙ্গা  পেরিয়েও  বড়নগরে  যেতে  পারেন।

            বড়নগর  রানি  ভবানীর  অতি  প্রিয়  ছিল।  জীবনের  শেষ  ভাগ  তিনি  এখানেই  অতিবাহিত  করেন।  সেকালে  বড়নগর  ছিল  মুর্শিদাবাদের  বারাণসী।  এখানে  তিনি  বেশ  কয়েকটি  মন্দির  নির্মাণ  করেন।  তার  মধ্যে  'চারবাংলা'  মন্দিরগুচ্ছ  অন্যতম।  চারটি  কারুকার্যখচিত  একবাংলা  ( দোচালা )  মন্দির  একটি  অল্পপরিসর  বর্গাকার  প্রাঙ্গণে  অবস্থিত।  এগুলি  রানি  ভবানীর  অক্ষয়  কীর্তি।  এখানে  আমি  পশ্চিম  দিকের  মন্দিরটি  নিয়ে  আলোচনা  করব।  অন্য  তিনটি  মন্দির  আমি  অন্যত্র  আলোচনা  করেছি।  নিচে  সেই  তিনটি  মন্দিরের  লিংক  দিলাম।  

  

            উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত  পূর্বমুখী  মন্দিরটি  এক  বাংলা ( দোচালা ) শৈলীর।  মন্দিরের  সামনে  তিনটি  খিলানযুক্ত  প্রবেশপথ।  মন্দিরটির  সামনের  দেওয়াল  সুন্দর  'টেরাকোটা'  অলংকারে  অলংকৃত।  উত্তর  দিকের  দেওয়ালে  দুই  প্রান্তে  দুটি  কৌণিক  ভাস্কর্য  আছে।  অন্য  কোন  'টেরাকোটা'  ভাস্কর্য  নেই। এই  'টেরাকোটা'র  বিষয় :  রামায়ণ-মহাভারত,  পূরাণের  কাহিনী,  দশাবতার  মূর্তি  এবং  কৃষ্ণলীলার  নানা  দৃশ্য।  মন্দিরের  গর্ভগৃহে  তিনটি  শিবলিঙ্গ  বিরাজিত।

        ( ছবি  বড়  করার  জন্য  ছবির  উপর  ক্লিক  করুন। )


শালভঞ্জিকা ও অন্যান্য চিত্র 

পশ্চিম দিকের মন্দির 

মন্দিরের ত্রিখিলান বিন্যাস 

বাঁ দিকের খিলানের উপরের কাজ 

মাঝের খিলানের উপরের কাজ 

ডান দিকের খিলানের উপরের কাজ 

কৌণিক ভাস্কর্য, সামনের দেওয়াল

কৌণিক ভাস্কর্য, সামনের দেওয়াল

কৌণিক ভাস্কর্য, উত্তর দিকের দেওয়াল
( ময়ূর ও সাপ )

কৌণিক ভাস্কর্য, উত্তর দিকের দেওয়াল
( ময়ূর ও সাপ )

কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ১
কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ২
কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ৩

কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ৪

কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ৫

কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ৬

কুলুঙ্গির মধ্যে কাজ - ৭

মৎস্য, কূর্ম ও বরাহ অবতার  

বামন, বলরাম ও পরশুরাম অবতার 

বলরাম, পরশুরাম ও অন্যান্য চিত্র  

জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা ও অন্যান্য চিত্র 

সপরিবারে দুর্গা 

কালী ও নারদ 

কালী ও নারদ ও অন্যান্য চিত্র 

কিন্নরী ও অন্য দুটি চিত্র 


গরুড়বাহন ও অন্য দুটি চিত্র 

ডান দিক থেকে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর 

ব্রহ্মা ও অন্য দুটি চিত্র 

কৃষ্ণলীলা 

কমলেকামিনী ও গজলক্ষ্মী  

কমলেকামিনী

গজলক্ষ্মী

 শ্রীকৃষ্ণের যমলার্জুন উদ্ধার ও কৃষ্ণের গোষ্ঠলীলা

কৃষ্ণের গোষ্ঠলীলা 

কৃষ্ণলীলা 

নৃসিংহ অবতার - ১

নৃসিংহ অবতার - ২

বামন অবতার 

মারিচ বধ 

সত্যভামার তুলাভরম 

বস্ত্রহরণ 

নানা চিত্র - ১
নানা চিত্র - ২

নানা চিত্র - ৩

নানা চিত্র - ৪

নানা চিত্র - ৫


সিংহমুখ ধনুক 


সহায়ক  গ্রন্থ : 
               ১) বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য :  প্রণব  রায়

               ২) মুর্শিদাবাদ-কাহিনী :  নিখিলনাথ  রায় 


     -------------------------------------------------------------------------------
            আমার  ইমেল :  shyamalfpb@gmail.com   প্রয়োজনে  যোগাযোগ  করতে  পারেন।
--------------------------------------------------------------
                                                     

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন