বিশালাক্ষী ও অন্যান্য মন্দির, দশঘরা, হুগলি
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে গুড়াপ একটি রেলস্টেশন। হাওড়া থেকে গুড়াপ ১৮ তম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৫৭.৪ কিমি। গুড়াপ-তারকেশ্বর বাস রাস্তায় দশঘরা একটি গ্রাম। এই গ্রামের বিশ্বাস পাড়ায় রাধাগোপীনাথের পঞ্চরত্ন শৈলীর মন্দিরটি স্থাপত্য ও 'টেরাকোটা'-অঙ্গসজ্জার জন্য প্রসিদ্ধ। এই মন্দিরের বিবরণ অন্যত্র দিয়েছি। মন্দিরটি সম্বন্ধে জানতে ক্লিক করুন :
গোপীনাথ মন্দির, দশঘরা, হুগলি
এইবার চলুন দশঘরার অন্যান্য মন্দিরগুলি দেখে নিই।
দশঘরার বিশালাক্ষী তলায় বিশালাক্ষী দেবীর 'জোড়বাংলা' মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত। দক্ষিণমুখী এই মন্দিরটির অনেক বার সংস্কার হয়েছে। গর্ভগৃহে শাড়ি পরিহিতা বিশালাক্ষী দেবীর মূর্তি দণ্ডায়মান। গলায় নরমুণ্ডমালা। দেবীর মুখের দন্তপংক্তি বিকশিত, স্মিতহাস্যযুক্ত।
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে গুড়াপ একটি রেলস্টেশন। হাওড়া থেকে গুড়াপ ১৮ তম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৫৭.৪ কিমি। গুড়াপ-তারকেশ্বর বাস রাস্তায় দশঘরা একটি গ্রাম। এই গ্রামের বিশ্বাস পাড়ায় রাধাগোপীনাথের পঞ্চরত্ন শৈলীর মন্দিরটি স্থাপত্য ও 'টেরাকোটা'-অঙ্গসজ্জার জন্য প্রসিদ্ধ। এই মন্দিরের বিবরণ অন্যত্র দিয়েছি। মন্দিরটি সম্বন্ধে জানতে ক্লিক করুন :
গোপীনাথ মন্দির, দশঘরা, হুগলি
এইবার চলুন দশঘরার অন্যান্য মন্দিরগুলি দেখে নিই।
দশঘরার বিশালাক্ষী তলায় বিশালাক্ষী দেবীর 'জোড়বাংলা' মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত। দক্ষিণমুখী এই মন্দিরটির অনেক বার সংস্কার হয়েছে। গর্ভগৃহে শাড়ি পরিহিতা বিশালাক্ষী দেবীর মূর্তি দণ্ডায়মান। গলায় নরমুণ্ডমালা। দেবীর মুখের দন্তপংক্তি বিকশিত, স্মিতহাস্যযুক্ত।
বিশালাক্ষী মাতার মন্দির, দশঘরা, হুগলি |
বিশালাক্ষী মাতা - ১ |
বিশালাক্ষী মাতা - ২ |
এই মন্দিরের পাশে ইঁটের তৈরি শিবের আটচালা মন্দিরটি অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত। পশ্চিমমুখী এই মন্দিরের সামনে ত্রিখিলান প্রবেশপথ। মন্দিরে আগে যে প্রতিষ্ঠালিপি ছিল তা থেকে জানা যায় যে মন্দিরটি ১৭৪৬ খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত। মন্দিরটির ত্রিখিলান প্রবেশ পথের উপরের তিনপ্রস্থে 'টেরাকোটা'র প্রতীক শিবমন্দির ও তার মধ্যে শিবলিঙ্গ, ফুলকারি নকশা, কয়েকটি ফুল ও দু-একটি মূর্তি আছে।
শিবমন্দির, দশঘরা |
মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান বিন্যাস |
এক পাশের খিলানের উপরের কাজ |
মাঝের খিলানের উপরের কাজ |
মাঝের খিলানের উপরের কাজ (বড় করে ) |
টেরাকোটার ফুল |
টেরাকোটার নকশা - ১ |
টেরাকোটার নকশা - ২ |
টেরাকোটার নকশা - ৩ |
এবার চলুন রায় পাড়ায়। পিচের রাস্তার যে দিকে বিশ্বাস পাড়া তার বিপরীত দিকে রায় পাড়া। রায় পরিবার কর্তৃক ঊনিশ শতকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দিরটি স্থাপত্যের দিক থেকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, পশ্চিমমুখী মন্দিরটির শিখরদেশ গম্বুজাকার। সামনের ঢাকা বারান্দার ছাদ চালা ধরনের।
রায়পাড়ার শিবমন্দির |
এখানে উল্লেখ্য, দশঘরার পুরাকীর্তির ক্ষেত্রে বিপিন কৃষ্ণ রায়ের দান অসামান্য। তিনি দশঘরায় রাজভবনের ফটকের ন্যায় বিরাট ক্লক টাওয়ার সমন্বিত ফটক ও বিরাট বাড়ি, ঠাকুরবাড়ি, দূর্গাদালান, মন্দির, চিকিৎসালয় প্রভৃতি নির্মাণ করে তিনি দশঘরা গ্রামটিকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেন। তিনি চারদিকে রেলিং দিয়ে ঘেরা বাগানের মধ্যে একটি ঝিল খনন করে তার পাশে মাননীয় অতিথিদের জন্য একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেন যা 'ব্রাডলি বার্ট' বাংলো নামে পরিচিত। Mr. F. B. Bradly Birt I. C. S. হুগলির তদানীন্তন Magistrate Collector ছিলেন। তিনি বিশ্রামার্থে এই বাংলোতে প্রায়ই এসে বাস করতেন।
রায়বাড়ির ফটক - ১ |
রায়বাড়ির ফটক - ২ |
ফটকের স্তম্ভের কাজ - ১ |
ফটকের স্তম্ভের কাজ - ২ |
দশঘরার গ্রামে যেতে হলে হাওড়া থেকে কর্ড লাইনের বর্ধমান লোকাল ধরুন। নামুন গুড়াপ স্টেশনে। স্টেশন থেকে তারকেশ্বর গামী বাসে বা দশঘরা গামী ট্রেকারে উঠুন। নামুন দশঘরা মোড়ে। সেখান থেকে অন্য একটি গাড়িতে বিশ্বাস পাড়া স্টপেজ। সেখান থেকে হেঁটে বিশালাক্ষী তলা। তারকেশ্বর বা চুঁচুড়া থেকেও দশঘরা যেতে পারেন।
মন্দিরগুলি পরিদর্শনের তারিখ : ১২.০১.২০১৭
সহায়ক গ্রন্থাবলী :
১) হুগলি জেলার পুরাকীর্তি : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
২) বাংলার মন্দির স্থাপত্য ও ভাস্কর্য : প্রণব রায়
৩) হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ ( ৩ য় খণ্ড ) : সুধীর কুমার মিত্র
----------------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
--------------------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন