জোড়বাংলা কেষ্টরায় মন্দির, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বঙ্গ
শ্যামল কুমার ঘোষ
গঠন বৈচিত্রে ও উৎকৃষ্ট পোড়ামাটির আলংকারিক কারুকার্যে বিষ্ণুপুরের কেষ্টরায় মন্দিরটি বিখ্যাত। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণ মুখী মন্দিরটি 'জোড়বাংলা' শৈলীর। দুটি 'দোচালা' বা 'এক বাংলা' পাশাপাশি জোড়া থাকলে বলা হয় জোড়বাংলা। এতে মন্দিরের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়। এই স্থায়িত্বকে আরও দৃঢ় করার জন্য আলোচ্য জোড়বাংলা মন্দিরের উপরে একটি চারচালা 'রত্ন' বসানো হয়েছে।
মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ১১.৮ মিটার, প্রস্থে ১১.৭ মিটার ও উচ্চতায় প্রায় ১০.৭ মিটার। বীর হাম্বীরের পুত্র রঘুনাথ সিংহ ৯৬১ মল্লাব্দে ( ১৬৫৫ খ্রীষ্টাব্দে ) এটির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে উল্লেখ্য, বঙ্গাব্দের চেয়ে মল্লাব্দ ১০১ বছর কম। মন্দিরের দক্ষিণ দেওয়ালে নিবদ্ধ চার লাইনের উৎসর্গলিপিটি : "শ্রীরাধিকাকৃষ্ণমুদে সুধাংশু / রসাঙ্কগে সৌধগৃহং শকাব্দি / শ্রীবীর হম্বীর নরেশ সূনু / র্দদৌ নৃপঃ শ্রীরঘুনাথ সিংহঃ / ৯৬১ / "
পোড়ামাটির অলংকরণ বাইরের চারিদিকের দেওয়ালের সর্বত্র ও দালানের দেওয়াল এবং ছাদের নিম্নতলেও ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু প্রাচুর্যই নয়, কারিগরি উৎকর্ষেও এ ভাস্কর্যগুলি খুবই উচ্চাঙ্গের। কৃষ্ণলীলা, রামায়ন-মহাভারতের কাহিনী, পৌরাণিক উপাখ্যান, হিন্দু দেবলোকের অজস্র চিত্র ছাড়াও বন্য প্রাণী, শিকার দৃশ্য এবং স্থল ও নৌযুদ্ধের ভাস্কর্যও এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। মন্দিরের দক্ষিণ দিকে কৃষ্ণলীলা ও পশ্চিম দেওয়ালে আছে রামকথা। রামজন্ম থেকে আরাম্ভ করে তারাকাবধ এবং রামের বিবাহ। পশ্চিমের দেওয়ালে ভয়ঙ্কর দেবীযুদ্ধের নিচে আছে গনেশজননী। অষ্টমাতৃকা মূর্তিও চিত্রিত হয়েছে। পর্তুগিজ যুদ্ধও যেমন চিত্রিত হয়েছে , তেমনিই মোঘল-সামন্তদের আভিজাত্য ও বিলাস ব্যসনও চিত্রিত হয়েছে। মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই। মন্দিরটি 'ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ' - এর রক্ষণাধীন।
|
কেষ্টরায় মন্দির, বিষ্ণুপুর - ১ |
|
কেষ্টরায় মন্দির, বিষ্ণুপুর - ২ |
|
দক্ষিণ দিকের বাঁ দিকের খিলানের উপরের কাজ |
|
দক্ষিণ দিকের মাঝের খিলানের উপরের কাজ |
|
বড় করে |
|
দক্ষিণ দিকের ডান দিকের খিলানের উপরের কাজ |
|
প্রতিষ্ঠাফলক |
|
কৃষ্ণলীলা - ১ |
|
কৃষ্ণলীলা - ২ |
|
কৃষ্ণলীলা - ৩ |
|
কৃষ্ণলীলা - ৪ |
|
শ্রীকৃষ্ণের বস্ত্রহরণ লীলা |
|
নৌকাবিলাস |
|
নৃত্যরত গোপিনীরা |
|
পূর্ব দিকের বিন্যাস |
|
চালার নিচে অলংকৃত কাঠের কাজের অনুকরণ |
|
সম-আয়তন বর্গাকার ফলক সজ্জা |
|
উত্তর দিকের বিন্যাস |
|
উত্তর দিকের ত্রিখিলান বিন্যাস |
|
বড় করে |
|
যুদ্ধের চিত্র |
|
যুদ্ধের চিত্র |
|
জীবনযাত্রা - ১ |
|
জীবনযাত্রা - ২ |
|
জীবনযাত্রা - ৩ |
|
জীবনযাত্রা - ৪ |
|
জীবনযাত্রা - ৫ |
|
পৌরাণিক দৃশ্য |
|
যুদ্ধের চিত্র |
|
সম-আয়তন বর্গাকার ফলক সজ্জা |
|
দেবী যুদ্ধ - ১ |
|
দেবী যুদ্ধ - ২ |
|
দেবী যুদ্ধ - ৩ |
|
রামায়ণ কাহিনী - ১ |
|
রামায়ণ কাহিনী - ২ |
|
রামায়ণ কাহিনী - ৩ |
|
অন্ধমুনির কাহিনী |
|
নিজ নিজ মায়ের কোলে রাম-লক্ষ্মণ-ভরত-শত্রুঘ্ন |
|
পর্তুগীজ রণতরী |
|
পর্তুগীজ রণতরী |
|
শ্রীকৃষ্ণের গোষ্ঠলীলা |
|
বড় করে |
|
শ্রীনিবাস আচার্য |
|
ভীষ্মের শরশয্যা |
সহায়ক গ্রন্থ :
১) বাঁকুড়া জেলার পুরাকীর্তি : অমিয়কুমার বন্দোপাধ্যায়
২) বিষ্ণুপুর : এস. এস. বিশ্বাস
৩) বিষ্ণুপুরের মন্দির টেরাকোটা ( প্রবন্ধ ) : চিত্তরঞ্জন দাসগুপ্ত
******