শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-ব্যাণ্ডেল রেলপথে চন্দননগর ত্রয়োদশতম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৩২.৬ কিমি। চন্দননগরের বারাসাতের দশভুজাতলায় দেবী দশভুজা দুর্গার নামানুসারে দশভুজা মন্দির অবস্থিত। মন্দিরটি চন্দননগরে অবস্থিত হলেও চন্দননগরের আগের স্টেশন মানকুণ্ড স্টেশন থেকে কাছে।
উচ্চ ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, ত্রিখিলানযুক্ত এই আটচালা মন্দিরের সম্মুখভাগ একদা টেরাকোটা অলংকরণে অলংকৃত ছিল। কিন্তু লাল রঙের প্রলেপে সেই টেরাকোটা সৌন্দর্যের সামান্যই আজ অবশিষ্ট আছে।
আটচালা শৈলীর মন্দিরের বৈশিষ্ট চালের কমনীয় বক্রাকৃতি, দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ও উচ্চতার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান এবং প্রথম চারচালার সঙ্গে সমতা রক্ষা করে দ্বিতীয় চারচালার গঠন। এই তিনটি স্থাপত্য বৈশিষ্ট দশভুজা মন্দিরে বিদ্যমান। কিন্তু মন্দিরের সামনে, প্রায় মন্দির সংলগ্ন করে একটি নাটমন্দির নির্মাণ করায় মন্দিরের সামনের দিকটা ঢাকা পরে গেছে। ফলে মন্দিরটির সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট হয়েছে।
মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ষাট ফুট। পশ্চিমমুখী। তবে দক্ষিণ দিকেও একটি প্রবেশ পথ আছে। কোন প্রতিষ্ঠাফলক না থাকায় মন্দির নির্মাণের তারিখ সঠিক ভাবে বলা যায় না। সম্ভবত অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে মন্দিরটি নির্মিত।
মন্দিরে দশভুজা দুর্গার অষ্টধাতু নির্মিত মূর্তি নিত্য পূজিত। খুবই ছোট মূর্তি। মন্দিরে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহও দেবী দশভূজার সঙ্গে নিত্য পূজিত হন। মন্দির প্রাঙ্গণে একটি দুর্গা দালান আছে।
মন্দিরের চূড়ায় একটি গাছ জন্মেছে। গাছটি মন্দিবের কিছুটা ক্ষতি করেছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে মন্দিরটির আরো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্খা থাকছে।
![]() |
নাটমন্দিরসহ শ্রীশ্রী দশভুজা মন্দির |
![]() |
শ্রীশ্রী দশভুজা মন্দির |
![]() |
মন্দিরের সামনে ত্রিখিলান বিন্যাস |
![]() |
খিলানের উপরের টেরাকোটা কাজ, রামরাবনের যুদ্ধ |
![]() |
শ্রীশ্রী দশভুজা মাতা বিগ্রহ |
![]() |
রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ |
সহায়ক গ্রন্থ :
১) হুগলি জেলার দেব দেউল : সুধীর কুমার মিত্র
----------------------------------------------------------
রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন : 9038130757 এই নম্বরে।
--------------------------------------------------------