রাধা দামোদর মন্দির, সোনাতোড়পাড়া, সিউড়ি, বীরভূম
শ্যামল কুমার ঘোষ
বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি। এই শহরের দক্ষিণাংশে সোনাতোড়পাড়ায় অবস্থিত রাধা দামোদর মন্দিরটি বীরভূম জেলার সবচেয়ে সুন্দর ও প্রাচীন আটচালা মন্দির।
মাকড়া পাথরে নির্মিত অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, ইঁটের তৈরি দক্ষিণমুখী ও ত্রিখিলান প্রবেশপথযুক্ত মন্দিরটি আটচালা শৈলীর। মন্দিরটি 'ঘুনসা'র মন্দির নামেও পরিচিত। গর্ভগৃহের সামনে অলিন্দ আছে। গর্ভগৃহে ঢোকার একটিই দরজা,সামনে। গর্ভগৃহে কোন বিগ্রহ নেই। মন্দিরের সামনের দেওয়ালে ফুলপাথরের উপর অলংকরণ আছে। ফুলপাথর খুব নরম প্রকৃতির পাথর। লালচে রং। এই পাথর রাত্রিতে জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেনি দিয়ে কুঁদে যে কোন অলংকরণ ফুটিয়ে তোলা যায়। এই পাথরের মধ্যে দানা না থাকার জন্য ফুলপাথরের উপর কাজ পোড়ামাটির কাজের মতোই হয়ে থাকে। দুটোর পার্থক্য করা শক্ত।
মন্দিরের বাঁ দিকের খিলানের উপর কালীয়দমন ও নৃত্যরত কৃষ্ণ, মধ্যের খিলানের উপর রাসমণ্ডল, বস্ত্রহরণ, রাধাকৃষ্ণ ও সংকীর্তনের দৃশ্য এবং ডান দিকের খিলানের উপর অনন্তশায়ী বিষ্ণু, বাহনোপরি ব্রহ্মা, বায়ু, ইন্দ্র, কার্তিক ও গণেশ ইত্যাদির প্রতিকৃতি উৎকীর্ণ আছে। এ ছাড়াও দেওয়ালের অন্যান্য স্থানে নানা দেবদেবীর মূর্তি আছে। মন্দিরটি কোন সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় তা জানা যায় না, তবে শিল্প-শৈলী দেখে মনে হয় যে মন্দিরটি সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে বা অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমে নির্মিত হয়। মন্দিরটি ভারতীয় প্ৰত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার সংরক্ষণাধীনে থাকলেও বর্তমানে তার কোন চিহ্ন দেখলাম না। সর্বত্রই অবহেলা চোখে পড়ল।
|
বাঁ দিক থেকে, গণেশ, কার্তিক, বায়ু, ইন্দ্র, ব্রহ্মা ও অনন্তশয়ানে বিষ্ণু |
|
রাধা দামোদর মন্দির, সিউড়ি, বীরভূম |
|
মন্দিরের সামনের বিন্যাস |
|
মন্দিরের ত্রিখিলান বিন্যাস |
|
বাঁ দিকের খিলানের উপরের কাজ ( কালীয়দমন ও নৃত্যরত কৃষ্ণ ) |
|
কৃষ্ণ কর্তৃক কালীয়দমন |
|
মধ্যের খিলানের উপরের কাজ ( রাসমণ্ডল, রাধাকৃষ্ণ, সংকীর্তনের দৃশ্য ও বস্ত্রহরণ ) |
|
রাসমণ্ডল |
|
রাধাকৃষ্ণ ও রাসমণ্ডল |
|
বস্ত্রহরণ
|
|
ডান দিকের খিলানের উপরের কাজ ( গণেশ, কার্তিক, বায়ু, ইন্দ্র, ব্রহ্মা ও অনন্তশয়ানে বিষ্ণু ) |
|
গণেশ, কার্তিক, বায়ু, ইন্দ্র, ব্রহ্মা ও অনন্তশয়ানে বিষ্ণু |
|
দুই খিলানের মাঝের কাজ - ১ |
|
দুই খিলানের মাঝের কাজ - ২ |
|
বাঁ দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ |
|
বাঁ দিকের পূর্ণ স্তম্ভের কাজ |
|
ডান দিকের পূর্ণ স্তম্ভের কাজ |
|
ডান দিকের অর্ধ স্তম্ভের কাজ |
|
বাঁ দিকের কৌণিক ভাস্কর্য |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১ ( বরাহ ও কূর্ম অবতার ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ২ ( কূর্ম ও মৎস্যাবতার ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৩ ( মৎস্যাবতার ও গজেন্দ্রমোক্ষ ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৪ ( গজেন্দ্রমোক্ষ ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৫ ( হরগৌরী ও শিব ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৬ ( হরগৌরী ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৭ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৮ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৯ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১০ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১১ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১২ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১৩ ( গান্ধর্বী ) |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১৪ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১৫ ( ঢেঁকিবাহন নারদ ) |
|
সেতু বন্ধনে বানরদের শিলা বহন |
|
গর্ভগৃহের সামনের খিলানের উপরের কাজ |
কীভাবে যাবেন ?
হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে সিউড়ি। স্টেশনে নেমে টোটোতে সোনাতোড়পাড়ায় মন্দিরে যাওয়া যায়। কলকাতা থেকে বাসেও সিউড়ি যেতে পারেন। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে বা টোটোতে মন্দিরে যাওয়া যায়।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) বীরভূম জেলার পুরাকীর্তি : দেবকুমার চক্রবর্তী
------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন