আনন্দময়ী কালীমন্দির, কৃষ্ণনগর, নদিয়া
শ্যামল কুমার ঘোষ
মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র মহারাজা গিরীশচন্দ্র রাজ্যলাভের ( রাজত্বকাল ১৮০২ - ১৮৪১ ) দু বছর পর কৃষ্ণনগরে, বর্তমান আনন্দময়ীতলায় একটি মন্দির নির্মাণ করে আনন্দময়ী কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল ১৭২৬ শকাব্দ অর্থাৎ ১৮০৪ খ্রিষ্টাব্দ। মন্দিরটি অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত। একটি সমতল ছাদ বিশিষ্ট দালানের উপর একটি উচ্চ শিখর স্থাপিত যা বর্গাকার চারচালা শৈলীর। মন্দিরটি ইঁট নির্মিত। কোন 'টেরাকোটা'র কাজ নেই। তবে পঙ্খের কিছু কাজ আছে। লতাপাতার কাজই বেশি। মন্দিরের ভিতর শায়িত মহাকালের উপর আসীনা দেবী আনন্দময়ী কালীমাতা। মন্দিরটি দক্ষিণমুখী। মন্দির প্রাঙ্গনে আনন্দময়ী কালী ছাড়াও আনন্দময় শিব, অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি ও প্রতিষ্ঠাতা গিরীশচন্দ্রের মূর্তি আছে। মন্দিরটির পাদপীঠ সংলগ্ন প্রস্তরফলকের সংস্কৃত লিপি এখন খুবিই অস্পষ্ট। লিপিটি এইরকম -
বেদাঙ্গেক্ষণগোত্রকৈরবকুলাধীপে শকে শ্রীযুতে
কৈলাশপ্রতিরূপকৃষ্ণনগরে শ্রীমদ্ গিরীশোৎসবে।
নাম্নানন্দময়ী শুভ্যেহনি মহামায়া মহাকালভৃৎ
নাম্নানন্দময়ী শুভ্যেহনি মহামায়া মহাকালভৃৎ
রাজ্ঞা শ্রীলগিরীশচন্দ্রধরণীপালেন সংস্থাপিতা।
শ্লোকটির অর্থ, কৈলাশতুল্য কৃষ্ণনগরে শ্রীমান গিরীশচন্দ্রের শুভ উৎসব দিনে ১৭২৬ শকাব্দে মহাকালধারিনী আনন্দময়ী নামে দেবী মহামায়াকে রাজা গিরীশচন্দ্র স্থাপন করলেন।
মন্দিরটির পরিদর্শনের তারিখ : ০১.০৪.২০১৫
মন্দিরটির পরিদর্শনের তারিখ : ০১.০৪.২০১৫
শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীমন্দির |
প্রবেশদ্বারের খিলানের উপরের কাজ |
মন্দিরের শিখরদেশ |
আনন্দময় শিবলিঙ্গ |
বালগোপালের মূর্তি |
মহারাজ গিরীশচন্দ্রের মূর্তি |
শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীমাতা - ১ |
শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীমাতা - ২ |
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাফলক |
আনন্দময়ী কালীমন্দিরে যেতে হলে শিয়ালদহ থেকে সকালের লালগোলা প্যাসেঞ্জার বা কৃষ্ণনগর লোকালে উঠুন। নামুন কৃষ্ণনগরে। স্টেশন থেকে টোটো বা অটোতে পৌঁছে যান আনন্দময়ী কালীতলার মন্দিরে।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) বাংলার মন্দির স্থাপত্য ও ভাস্কর্য : প্রণব রায়
*******
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন