Pages

রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১

Radhagobinda and Jagannath Temple / Chunimani Dasi Thakurbari, Gobinda Sen Lane, Kolkata

 রাধাগোবিন্দ  ও  জগন্নাথ  মন্দির /  চুনিমণি  দাসী  ঠাকুরবাড়ি,  গোবিন্দ  সেন  লেন,  কলকাতা 

                            শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            কলকাতার  কলেজ  স্ট্রিট  /  পটলডাঙা  অঞ্চলের  গোবিন্দ  সেন  লেনে  রাধাগোবিন্দ  ও  জগন্নাথ  মন্দির  অবস্থিত।  অনেকে  একে  চুনিমণি  দাসীর  ঠাকুরবাড়ি  বলে  থাকেন।   

            অল্প  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  তিনখিলানবিশিষ্ট,  পশ্চিমমুখী,  অলিন্দযুক্ত  মন্দিরটি  সমতলছাদবিশিষ্ট  একটি  দালান  শৈলীর  মন্দির।  অলিন্দের  সামনে  তিনখিলানবিশিষ্ট  ঢালাই  লোহার  সুন্দর  জাফরি।  গর্ভগৃহের  সামনে  তিনটি  খিলানের  উপর  ও  অলিন্দের  সামনের  জাফরির  উপর  অল্প  পঙ্খের  কাজ  আছে।  মন্দিরের  সামনে  ফাঁকা  উঠান  এবং  তাকে  ঘিরে  চকমিলানো  অনেকগুলি  ঘর।  দোতালাতেও  নিচের  মত   চকমিলানো  ঘর  আছে।  দোতালার  বারান্দায়  সুন্দর  ঢালাই  লোহার  রেলিং  আছে।  মন্দিরের  গর্ভগৃহ  ও  অলিন্দের  মেঝে  শ্বেতপাথরের।  ঠাকুরবাড়িটির  বাইরে  সুন্দর  পঙ্খের  কাজ  আছে।  যদিও  বর্তমানে  তা  অনেকটাই  ম্লান।    

            মন্দিরটি  ১৩০৭  বঙ্গাব্দের  ২২ শে  মাঘ  পরমবৈষ্ণব  বৈদ্যনাথ  দের  সহধর্মিণী  চুনিমণি  দাসী  কর্তৃক  প্রতিষ্ঠিত।  মন্দিরে  দুটি  প্রতিষ্ঠাফলক  আছে।  একটি  বাইরের  দরজার  ডান  দিকের  দেওয়ালে  এবং  অপরটি  ঠাকুরবাড়ির  ভিতরের  বাঁ  দিকের  দেওয়ালে।  প্রতিষ্ঠাফলকদুটি  শ্বেতপাথরের। 

             মন্দিরের  গর্ভগৃহে  প্রবেশের  তিনটি  দরজা।  বাঁ  দিকের   দরজার  সামনে  একটি  কাঠের  সিংহাসনে  দারু  নির্মিত  একক  জগন্নাথ  বিগ্রহ  ও  মাঝের  দরজার  সামনে  একটি  কাঠের  সিংহাসনে  দারু  নির্মিত  গোবিন্দ-রাধারানি  বিগ্রহ,  তিনটি  শালগ্রাম  শিলা  ও  একটি  দারু  নির্মিত  গরুড়  মূর্তি  শোভা  পাচ্ছে।  জগন্নাথ  বিগ্রহটি  একটু  অন্যরকম।  গোবিন্দ  ও  রাধারানি  বিগ্রহদুটি  খুবই  মিষ্টি  দেখতে।  গরুড়  মূর্তিটিও  লক্ষণীয়।  বিগ্রহগুলি  নিত্য  পূজিত।

            নিত্য  পূজা  ছাড়াও  এই  ঠাকুর  বাড়িতে  সারা  বছর  নানা  বৈষ্ণব  উৎসব  পালিত  হয়।  যেমন  ফুলদোল,  জন্মাষ্টমী,  রাধাষ্টমী,  চাঁচর,  পঞ্চম  দোল,  রাসযাত্রা,  ইত্যাদি।  অন্যান্য  বৈষ্ণব  অনুষ্ঠানের  সঙ্গে  এই  ঠাকুর  বাড়িতে  সমারোহের  সঙ্গে  রথযাত্রা  পালিত  হয়।  জনশ্রুতি,  একবার  পুরীর  বিগ্রহের  নব  কলেবরের  সময়  বাড়তি  নিমকাঠ  দিয়ে  তৈরি  হয়েছিল  এই  বাড়ির  জগন্নাথ  বিগ্রহটি।  রথযাত্রা  উপলক্ষে  প্রতি  বছর  পুরী  থেকে  পাণ্ডারা  আসেন  এই  ঠাকুরবাড়িতে। ঠাকুরবাড়ির বাইরের দেওয়ালে কে.এম.সি. কর্তৃক হেরিটেজ ফলক লাগানো হয়েছে। 

            তারাপদ  সাঁতরার  লেখা  " কলকাতার  মন্দির-মসজিদ  ( স্থাপত্য-অলংকরণ-রূপান্তর )"  গ্রন্থে  এই  ঠাকুরবাড়ির  উল্লেখ  আছে।  আমার  এই  ঠাকুরবাড়ি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ০২.১২.২০২১  ও ০৭.ও.২০২৪

মন্দিরের সামনের বিন্যাস

অলিন্দের সামনের জাফরি ও তার উপর পঙ্খের কাজ

রাধাগোবিন্দ ও জগন্নাথ মন্দির

দোতালার বারান্দায় সুন্দর ঢালাই লোহার রেলিং

ঠাকুরবাড়ির সামনে পঙ্খের কাজ

ঠাকুরবাড়ির বাইরের প্রতিষ্ঠাফলক

ঠাকুরবাড়ির ভিতরের প্রতিষ্ঠাফল

স্বর্গীয় শ্রী বৈদ্যনাথ দে 

স্বর্গীয়া চুনিমণি দাসী 

জগন্নাথ বিগ্রহ

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ১

গরুড় মূর্তি

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ২

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ২

রথের দিন ফুলের সাজে সজ্জিত গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ 

রথের দিন ফুলের সাজে সজ্জিত জগন্নাথ বিগ্রহ 

কাঠের রথ 

ঠাকুরবাড়ির বাইরে লাগানো হেরিটেজ ফলক

       কী  ভাবে  যাবেন ?

            কলেজ  স্ট্রিটের  মেডিকেল  কলেজের  বিপরীত  দিকে  সুরেন্দ্র  লাল  পাইন  লেন।  এই  রাস্তা  দিয়ে  ঢুকে  কিছুটা  এগুলেই  পড়বে  শ্রীগোপাল  মল্লিক  লেন।  এই  রাস্তার  ডান  দিয়ে  গেলে  পড়বে  গোবিন্দ  সেন  লেন।  ৬/১  গোবিন্দ  সেন  লেনে  কাঙ্ক্ষিত  ঠাকুরবাড়ি। 

            কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির     

          ----------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে। বইটির মুদ্রিত মূল্য - ৫৯৯ টাকা।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

            প্রকাশনীতে বইটি সেরা বইয়ের সম্মান স্বর্ণকলম ২০২৫ পেয়েছে ।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন