Pages

বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১

Krishna Balaram Temple / Bhulu Pal's Thakurbari, Sashi Bhusan Dey Street, Kolkata

 কৃষ্ণ  বলরাম  মন্দির  /  ভুলু  পালের  ঠাকুরবাড়ি,  শশী  ভূষণ  দে  স্ট্রিট,  কলকাতা

                      শ্যামল  কুমার  ঘোষ

            কলকাতার  বৌবাজার  /  লেবুতলা  অঞ্চলের  ১১ বি,  শশী  ভূষণ  দে  স্ট্রিটে  কৃষ্ণ  বলরাম  মন্দির  অবস্থিত।  অনেকে  একে  কানাই  বলাই  মন্দির  বা  ভুলু  পালের  ঠাকুরবাড়ি  বলে  থাকেন।

            উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  তিন-খিলানবিশিষ্ট,  পশ্চিমমুখী,  অলিন্দযুক্ত  মন্দিরটি  সমতলছাদবিশিষ্ট  একটি  দালান  শৈলীর  মন্দির।  মন্দিরের  লাগোয়া  বাসগৃহ।  সাধারণত  কৃষ্ণ  মন্দির  পশ্চিমমুখী  হয়  না।  বাড়িটির  পশ্চিম  দিকে  রাস্তা।  সেজন্য  হয়তো  পশ্চিমমুখী  মন্দির  করতে  বাধ্য  হয়েছিলেন।  মন্দিরে  কোন  প্রতিষ্ঠাফলক  নেই।  তাই  মন্দিরটি  কবে  নির্মিত  তা  সঠিক  ভাবে  বলা  সম্ভব  নয়।  মন্দিরটির  অবস্থা  এখন  খুবই  খারাপ। 

            ভুবন  মোহন  পাল  তখনকার  দিনের  একজন  সফল  ব্যবসায়ী  ছিলেন।  ভুলু  পাল  নামেই  তিনি  বেশি  পরিচিত  ছিলেন।  তিনি  ছিলেন  নিঃসন্তান।  তাঁর  গুরুগৃহ  ছিল  পূর্ব  বর্ধমান  জেলার  কালনা-১  ব্লকের  অধীন  বাঘনাপাড়া  গ্রামে।  এই  গ্রামে  রয়েছে  নিত্যানন্দের  পত্নী  জাহ্নবী  দেবীর  পালিত-পুত্র  তথা  শিষ্য  রামচন্দ্র  গোস্বামী  বা  রামাই  পণ্ডিতের  শ্রীপাট।  বৃন্দাবনে  জাহ্নবী  দেবীর  পরলোক  গমনের  পর  রামচন্দ্র  গোস্বামী  তথা  রামাই  পণ্ডিত  কৃষ্ণ-বলরাম  সহ  স্বগ্রামে  প্রত্যাবর্তন  করেন।  এই  শ্রীপাঠের  কৃষ্ণ-বলরাম,  রেবতী-রাধারানি  ও  জগন্নাথ  বিগ্রহগুলির  প্রতি  ভুলু  পালের  অনুরাগ  ছিল  অপরিসীম।  তাই  তিনি  কলকাতার  নিজের  বাড়িতে  এই  বিগ্রহগুলি  প্রতিষ্ঠা  করেন।  

            মন্দিরে  পাশাপাশি  দুটি  দরজা।  বাঁ  দিকের  দরজার  সামনে  একটি  কাঠের  সিংহাসনে  আছে  কৃষ্ণ-বলরামের  দণ্ডায়মান  দারু  বিগ্রহ।  আর  একটি  সিংহাসনে  আছে  একক  জগন্নাথের  দারু  বিগ্রহ।  কৃষ্ণ-বলারমের  বিগ্রহের  সামনে  নৃসিংহ,  লক্ষ্মীজনার্দন  ও  শ্রীধর  নামক  তিনটি  শালগ্রাম  শিলাও  আছে।  ডান  দিকের  দরজার  সামনে একটি  কাঠের  সিংহাসনে  রাধারানি   ও  বলরাম  পত্নী  রেবতীর  দণ্ডায়মান  দারু  বিগ্রহ  বর্তমান।  সবকটি  বিগ্রহই  নিত্যপূজিত।  নিত্যপূজা  ছাড়াও  মাঘী  পূর্ণিমার  সময়  প্রতিষ্ঠা  দিবসের  উৎসব  পালন  করা  হয়।  মন্দিরটি  বর্তমানে  দুর্জয়  চক্রবর্তী  মহাশয়ের  তত্বাবধানে  আছে। 

            এই  মন্দিরের  একটি  বিষয়ের  উল্লেখ  করতে  হয়।  এখানে  কৃষ্ণ-রাধিকা  ও  বলরাম-রেবতীর  দারু  বিগ্রহ  একসঙ্গে  নেই।  যা  মন্দিরে  সাধারণত  দেখা  যায়।  এখানে  কৃষ্ণ-বলরাম  ও  রাধারানি-রেবতীর  দারু  বিগ্রহ  একসঙ্গে  রয়েছেন।  এখানে  বাঘনাপাড়ার  রামাই  পণ্ডিতের  শ্রীপাঠের  অনুসরণ  করা  হয়েছে।

            ঠাকুরবাড়িটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ১৩.১২.২০২১   

মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনের বিন্যাস 

কৃষ্ণ-বলরাম ও জগন্নাথ বিগ্রহ - ১

কৃষ্ণ-বলরাম ও জগন্নাথ বিগ্রহ - ২

কৃষ্ণ-বলরাম বা কানাই-বলাই বিগ্রহ - ১

কৃষ্ণ-বলরাম বা কানাই-বলাই বিগ্রহ - ২

কৃষ্ণ-বলরাম বা কানাই-বলাই বিগ্রহ - ৩

জগন্নাথ বিগ্রহ - ১

জগন্নাথ বিগ্রহ - ২

নৃসিংহ, লক্ষ্মীজনার্দন ও শ্রীধর নামক তিনটি শালগ্রাম শিলা

রাধারানি  ও রেবতী বিগ্রহ - ১ 

রাধারানি  ও রেবতী বিগ্রহ - ২ 

            কী  ভাবে  যাবেন ?

            শিয়ালদহে  নীলরতন  সরকার  মেডিক্যাল  কলেজের  গেটের  বিপরীত  দিকে  অবস্থিত  গোমেজ  লেন  ( কবি  নবীন  সেন  লেন )।  এই  রাস্তা  ধরে  একটু  এগিয়ে  কাউকে  জিজ্ঞাসা  করুন  সার্পেন্টাইন  লেন  কোন  দিকে।  তাঁর  নির্দেশিত  পথে  সার্পেন্টাইন  লেনে  পৌঁছুলে  আবার  কাউকে  জিজ্ঞাসা  করুন  শশী  ভূষণ  দে  স্ট্রিট  কোন  দিকে।  ১১ বি,  শশী  ভূষণ  দে  স্ট্রিটে  আমাদের  কাঙ্খিত  মন্দির  বা  ঠাকুরবাড়ি। 

            কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির 

       -------------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে। বইটির মুদ্রিত মূল্য - ৫৯৯ টাকা।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

         প্রকাশনীতে বইটা বেস্টসেলার হয়েছে।

                                     

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন