কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির, শহর বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান
শ্যামল কুমার ঘোষ
বর্ধমান রেল স্টেশন থেকে আট কিমি পশ্চিমে কাঞ্চননগরে রয়েছে কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। টোটোতে শেয়ারে যেতে হলে বর্ধমান রেল স্টেশন থেকে প্রথমে একটি টোটোতে রাজবাড়ির উত্তর ফটক। সেখান থেকে আর একটি টোটোতে কাঞ্চননগর। কাঞ্চননগর পল্লী আগেকার বর্ধমানের বাণিজ্য স্থান ছিল। তখন কাঞ্চনগরের ছুরি-কাঁচি খুবই প্রসিদ্ধ ছিল।
কঙ্কালেশ্বরী দেবী মূর্তি খুব প্রাচীন। অদ্ভুত এই কালীমূর্তি। মা এখানে কঙ্কালরূপিণী। এটি একটি অষ্টভুজা চামুণ্ডা মূর্তি। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় ১.৮ মিটার। কালীর এই চামুণ্ডা মূর্তিটি অনেকে বৌদ্ধ চামুণ্ডার রূপ বলেন। আবার অনেকের মতে এটি বৌদ্ধ আমলে তৈরি। মূর্তিটি দেখলে মনে হবে পাথরের উপরে মানুষের দেহের যেন কঙ্কাল-রূপ। কঙ্কালসার মূর্তিতে মানব দেহের শিরা-উপশিরা-ধমনীর প্রত্যেকটি খুব নিখুঁতভাবে খোদাই করা। যে শিল্পী পাথরের উপর এই মূর্তি খোদায় করেছিলেন তাঁর মানব দেহ সম্পর্কে নিশ্চয়ই গভীর জ্ঞান ছিল। তা না হলে এই রকম মূর্তি খোদাই করা সম্ভব হত না। মূর্তির গলায় নরমুন্ডের মালা। কালো পাথরের খোদাই করা এই মূর্তির পদতলে শায়িত অবস্থায় আছেন মহাদেব। মূর্তির উপরে ডান দিকে আছে হস্তি মুণ্ড। মূর্তির নিচে ডান দিকে আছে এক উলঙ্গ পুরুষের কাঁধে শবদেহ। বাঁ দিকে এক নগ্ন নারী মূর্তি। মায়ের এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে ভক্তরা ভয়ার্ত চিত্তে মাকে ভক্তি জানায়। স্থাপত্য শিল্পের দিক থেকে মা কঙ্কালেশ্বরী মূর্তি সত্যই অপূর্ব। এখানে উল্লেখ্য, এই মূর্তির বাঁ দিকে আছে আর একটি চামুন্ডা মূর্তি।
কঙ্কালেশ্বরী মূর্তি সম্বন্ধে জনশ্রুতি, ১৩২০ সালে বর্ধমানে ভয়ঙ্কর বন্যা হয়। এই বন্যায় মায়ের মূর্তি ভেসে এসে মুসলমান অধ্যুষিত চৌধুরী দহে ( বর্তমান নাম কালীদহ ) এসে উল্টোভাবে পড়েছিল। তারপর রজকেরা ওই পাথর কে কাপড় কাচার 'পাটা' হিসাবে ব্যবহার করে কাপড় কাচতে থাকে। এই ভাবে ওই মূর্তির উপর কাপড় কাচা চলতে থাকে। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে আষাঢ় মাসের ভূমিকম্পে ওই দহের ভূমি ধ্বসে পড়ে ওই পাথর উল্টে গিয়ে মায়ের মূর্তি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। তখন মুসলমান পাড়া, তেলি পাড়া, মালি পাড়া ও তালবোনার বাসিন্দাগণ এই সংবাদ বর্ধমান মহারাজের গোচরে আনেন। বর্ধমান মহারাজা সপারিষদ ওই স্থানে উপস্থিত হন এবং মায়ের ওই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আশ্চর্য হন। তারপর তিনি আষাঢ় মাসের উল্টোরথের দিন মায়ের মূর্তিটি এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। মহারাজ ওই অঞ্চলের কিছু জমি, বাগান ইত্যাদি স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়ে তাঁদেরই মায়ের সেবায়েত করে দেন।
কঙ্কালেশ্বরী দেবী মূর্তি খুব প্রাচীন। অদ্ভুত এই কালীমূর্তি। মা এখানে কঙ্কালরূপিণী। এটি একটি অষ্টভুজা চামুণ্ডা মূর্তি। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় ১.৮ মিটার। কালীর এই চামুণ্ডা মূর্তিটি অনেকে বৌদ্ধ চামুণ্ডার রূপ বলেন। আবার অনেকের মতে এটি বৌদ্ধ আমলে তৈরি। মূর্তিটি দেখলে মনে হবে পাথরের উপরে মানুষের দেহের যেন কঙ্কাল-রূপ। কঙ্কালসার মূর্তিতে মানব দেহের শিরা-উপশিরা-ধমনীর প্রত্যেকটি খুব নিখুঁতভাবে খোদাই করা। যে শিল্পী পাথরের উপর এই মূর্তি খোদায় করেছিলেন তাঁর মানব দেহ সম্পর্কে নিশ্চয়ই গভীর জ্ঞান ছিল। তা না হলে এই রকম মূর্তি খোদাই করা সম্ভব হত না। মূর্তির গলায় নরমুন্ডের মালা। কালো পাথরের খোদাই করা এই মূর্তির পদতলে শায়িত অবস্থায় আছেন মহাদেব। মূর্তির উপরে ডান দিকে আছে হস্তি মুণ্ড। মূর্তির নিচে ডান দিকে আছে এক উলঙ্গ পুরুষের কাঁধে শবদেহ। বাঁ দিকে এক নগ্ন নারী মূর্তি। মায়ের এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে ভক্তরা ভয়ার্ত চিত্তে মাকে ভক্তি জানায়। স্থাপত্য শিল্পের দিক থেকে মা কঙ্কালেশ্বরী মূর্তি সত্যই অপূর্ব। এখানে উল্লেখ্য, এই মূর্তির বাঁ দিকে আছে আর একটি চামুন্ডা মূর্তি।
কঙ্কালেশ্বরী মূর্তি সম্বন্ধে জনশ্রুতি, ১৩২০ সালে বর্ধমানে ভয়ঙ্কর বন্যা হয়। এই বন্যায় মায়ের মূর্তি ভেসে এসে মুসলমান অধ্যুষিত চৌধুরী দহে ( বর্তমান নাম কালীদহ ) এসে উল্টোভাবে পড়েছিল। তারপর রজকেরা ওই পাথর কে কাপড় কাচার 'পাটা' হিসাবে ব্যবহার করে কাপড় কাচতে থাকে। এই ভাবে ওই মূর্তির উপর কাপড় কাচা চলতে থাকে। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে আষাঢ় মাসের ভূমিকম্পে ওই দহের ভূমি ধ্বসে পড়ে ওই পাথর উল্টে গিয়ে মায়ের মূর্তি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। তখন মুসলমান পাড়া, তেলি পাড়া, মালি পাড়া ও তালবোনার বাসিন্দাগণ এই সংবাদ বর্ধমান মহারাজের গোচরে আনেন। বর্ধমান মহারাজা সপারিষদ ওই স্থানে উপস্থিত হন এবং মায়ের ওই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আশ্চর্য হন। তারপর তিনি আষাঢ় মাসের উল্টোরথের দিন মায়ের মূর্তিটি এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। মহারাজ ওই অঞ্চলের কিছু জমি, বাগান ইত্যাদি স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়ে তাঁদেরই মায়ের সেবায়েত করে দেন।
দক্ষিণমুখী মন্দিরটি নবরত্ন শৈলীর। সামনের দেওয়ালে টেরাকোটা ফলক বর্তমান। মনে হয়, সংস্কারের সময় এই টেরাকোটা লাগানো হয়। মন্দিরের পশ্চিমে আছে একটি বেলগাছ। তার তলায় একটি কালো পাথরের শিবলিঙ্গ। বেলগাছের পাশে আছে পঞ্চমুন্ডির আসন। বহু তান্ত্রিক সাধক সিদ্ধি লাভের জন্য এখানে এসে তন্ত্র সাধনা করতেন। ১৩২৪-২৫ বঙ্গাব্দে কমলানন্দ স্বামী নামে একজন স্বামিজী এসেছিলেন। তিনি বর্ধমান শহরের বেশ কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে মন্দিরের সংস্কার করেন। তিনি কিছু সেবা মূলক কাজেও যুক্ত ছিলেন।
মায়ের নিত্যপূজা ছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। কালীপূজার দিন ধুম-ধাম করে মায়ের বাৎসারিক পূজা হয় । সেদিন মন্দিরে প্রচুর জন সমাগম হয়ে থাকে।
মন্দিরটি পরিদর্শনের তারিখ : ১২.১২.১৯১৯
কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির, কাঞ্চননগর, বর্ধমান শহর |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ১ |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ২ |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ৩ |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ৪ |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ৫ |
মন্দিরের টেরাকোটা ফলক - ৬ |
কঙ্কালেশ্বরী কালী ও অন্যান্য মূর্তি |
কঙ্কালেশ্বরী কালী মূর্তি - ১ |
কঙ্কালেশ্বরী কালী মূর্তি - ২ |
আর একটি চামুণ্ডা মূর্তি |
এই মন্দিরের দক্ষিণে একটি পঞ্চরত্ন টেরাকোটা মন্দির আছে। মন্দিরে একটি বিষ্ণু মূর্তি নিত্য পূজিত।
১) নগর বর্ধমানের দেবদেবী : নীরদবরণ সরকার
*******
পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কালী মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন :
খুব ভালো লাগলো, আরো নতুন কালী মন্দির সমন্ধে জানার ইচ্ছে প্রকাশ করলাম, ধন্যবাদ,
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনখুব সুন্দর দাদা ধন্যবাদ কোথাও মন হতে যেতে চেয়েও যেতে পারিনা সময়ের অভাবে ।🙏 🙏 🙏❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️👌👌👌👌👌👌
উত্তরমুছুন