গোপীনাথ ও শিব মন্দির, বেলমুড়ি, হুগলি
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে বেলমুড়ি একটি রেলস্টেশন। হাওড়া থেকে বেলমুড়ি পঞ্চদশ রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৪৬.৪ কিমি।
বেলমুড়ির পূর্ব নাম ছিল কৃষ্ণরামবাটি। কিংবদন্তি যে মহানাদ থেকে মুসলমানদের অত্যাচারে উৎপীড়িত হয়ে বসুবংশের তিন ভ্রাতা রাজারাম বসু , বিশ্বেশ্বর বসু ও কামদেব বসু বেলমুড়িতে চলে আসেন। তাঁরা এখানে এসে গ্রামের উন্নতিতে মনোনিবেশ করেন। বিশ্বেশ্বর বসুর পুত্র প্রীতরাম ওরফে চিন্তামণি বেলমুড়িতে যাবতীয় দেবালয় স্থাপন করেন। বসুবংশের কুলদেবতা গোপীনাথ জিউর প্রথম মন্দিরটি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। মূল মন্দিরটি বিনষ্ট হয়ে গেল তাঁরই বংশধর বৈকুণ্ঠদাস বসু ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করে দেন। মন্দিরটি সমতল ছাদযুক্ত একটি দালান। ছাদের সামনের দিকের মাঝখানে একটি শিখর বর্তমান। এখানে উল্লেখ্য, প্রীতরাম বসু বর্ধমান রাজের একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী ছিলেন।
গোপীনাথের মন্দির, বেলমুড়ি |
বেলমুড়ির গ্রন্থাগারের কাছে দুটি আটচালা শিবমন্দির আছে। শোনা যায়, এখানে দ্বাদশ শিবমন্দির ছিল। এখন তার দুটি অবশিষ্ট আছে। একটি পূর্বমুখী ও অন্যটি পশ্চিমমুখী। পশ্চিমমুখী মন্দিরটির টেরাকোটা সংস্কারের সময় অপসারিত হয়েছে। পূর্বমুখী মন্দিরটির টেরাকোটা এখনও ভালই আছে। যদিও মন্দিরটিতে অযত্নের ছাপ রয়েছে।
শিবমন্দির, বেলমুড়ি |
শিবমন্দিরের সামনের বিন্যাস |
খিলানের উপরের কাজ |
তিনটি টেরাকোটার ফুল |
টেরাকোটার একটি ফুল ( বড় করে ) |
বেলমুড়ির উপরোক্ত মন্দিরগুলিতে যেতে হলে হাওড়া থেকে হাওড়া-কর্ড লাইনের ট্রেন ধরুন। নামুন বেলমুড়ি স্টেশনে। স্টেশনের দক্ষিণ থেকে বাস বা টোটোতে উঠুন। নামুন স্কুল মোড়ে। সেখান থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরে গেলে প্রথমে পাঠাগারের কাছে পাবেন দুটি শিবমন্দির। আরও এগিয়ে গেলে পাবেন গোপীনাথ মন্দির।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ ( ২ য় খণ্ড ) : সুধীর কুমার মিত্র
-------------------------------------------
আমার ইমেল : shyamalfpb@gmail.com প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
--------------------------------------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন