রায় পরিবারের ঠাকুর বাড়ি, খোর্দা বিষ্ণুপুর,
দাসপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
শ্যামল কুমার ঘোষ
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার অধীন একটি গ্রাম খোর্দা বিষ্ণুপুর। শিলাবতী নদী যখন বেশ নাব্য ছিল তখন এই নদীর তীরে অনেক বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। খোর্দা বিষ্ণুপুর, সুরতপুর ও তার পাশের গ্রাম গুঁডলি সেই সময় রেশম উৎপাদনের কেন্দ্ররূপে পরিগণিত ছিল। সুরতপুর ও তার পাশের গ্রাম গুঁডলিতে ইংরেজ বণিকরা রেশমকুঠি তৈরি করেছিল। খোর্দা বিষ্ণুপুরও সেই সময়ে জনপদ ছিল।
খোর্দা বিষ্ণুপুর গ্রামে রায় পরিবারের প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণমুখী একটি পঞ্চরত্ন রঘুনাথ মন্দির ও তারই দুপাশে দুটি শিখর শিব মন্দির এখানকার উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি। সুরা নয়নপুর থেকে সুরতপুরে যাওয়ার পথের ডান দিকে চাষের জমির পাশে, ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে মন্দিরগুলি দেখা যায়। পঞ্চরত্ন মন্দিরটির সামনের দেওয়াল জুড়ে আছে টেরাকোটা অলংকরণ। কিন্তু সেগুলির বেশীর ভাগ এখন ভগ্ন। আগে এই মন্দির চত্বর প্রাচীরবেষ্টিত ছিল। রায়দের অট্টালিকা এই ঠাকুরবাড়ির সংলগ্ন ছিল। পরে কোন কারণে গ্রাম লোকালয়শূন্য হয়ে গেলে এই ঠাকুরবাড়ি পরিত্যক্ত হয় এবং জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে যায়। ১৯৭৯ খ্রীষ্টাব্দে ঠাকুরবাড়ির জঙ্গল অপসারিত করে, পাঁচিল ও রায়দের বাড়ি বিলুপ্ত করে চাষবাস শুরু হয়। মন্দিরগুলি রয়ে যায়। মন্দিরে এখন কোন প্রতিষ্ঠালিপি নেই। কিন্তু জানা যায় যে এটি ১৮৪৯ খ্রীষ্টাব্দে নির্মিত।
|
পঞ্চরত্ন ও দুপাশে দুটি শিখর শিব মন্দির |
|
মন্দিরের ত্রিখিলান বিন্যাস |
|
বাঁ দিকের খিলানের উপরের কাজ |
|
মাঝের খিলানের উপরের কাজ |
|
ডান দিকের খিলানের উপরের কাজ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ২ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৩ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৪ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৫ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৬ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৭ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৮ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ৯ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১০ |
|
কুলুঙ্গির কাজ - ১১ |
কী ভাবে যাবেন ? হাওড়া থেকে মেদিনীপুর গামী ট্রেনে উঠে পাঁশকুড়া স্টেশনে নামুন। স্টেশনের কাছেই পাঁশকুড়া বাস স্ট্যান্ড। সেখান থেকে ঘাঁটালগামী বাসে উঠে ( পাঁশকুড়া-ঘাটাল বাস রাস্তায় ) বকুলতলা স্টপেজে নামুন। সেখান থেকে বাসে বা অটোতে নাড়াজোল মুখী বাস রাস্তায় সুরানয়নপুর। সেখান থেকে টোটোতে বা হেঁটে সুরতপুরে যাওয়ার পথের ডান দিকে চাষের জমির পাশে মন্দিরগুলি।
সহায়ক গ্রন্থ :
১) পুরাকীর্তি সমীক্ষা - মেদিনীপুর : তারাপদ সাঁতরা
২) মেদিনীপুর জেলার প্রত্ন-সম্পদ : প্রণব রায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন