Pages

বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১

Shri Shri Radhagobinda Temple, Raja Rammohan Sarani ( Amherst Street), Central Kalkata

শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির, রাজা রামমোহন  সরণি ( আমহার্স্ট স্ট্রিট ), মধ্য কলকাতা 

                            শ্যামল কুমার ঘোষ 

            কলকাতার মহাত্মা গান্ধী রোড ও রাজা রামমোহন সরণির  সংযোগস্থলের একটু দূরে ১২ সি, রাজা রামমোহন সরণিতে  রাধাগোবিন্দ জিউ'র মন্দির বা শম্ভু সেনের ঠাকুরবাড়ি অবস্থিত।  প্রতিষ্ঠাফলকে অবশ্য রাধাগোবিন্দ ধাম বলে উল্লেখ আছে। 

            সামান্য উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, পত্রাকৃতি তিন-খিলানবিশিষ্ট, অলিন্দযুক্ত  মন্দিরটি সমতলছাদবিশিষ্ট একটি দালান  শৈলীর মন্দির  মন্দিরের সামনে বর্গাকৃতি ছোট ফাঁকা উঠান এবং  তাকে ঘিরে চকমিলানো অনেকগুলি ঘর। দোতালা ও তিনতলাতেও  নিচের মতো চকমিলানো ঘর আছে।

            মন্দিরের উঠানের চারিদিকে বারান্দার সামনে প্রতিদিকে  তিনটি করে মোট বারোটি খিলান আছে। প্রতিটি খিলানে কৃষ্ণলীলার  এক একটি দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরে কাচের বাক্সে  দশাবতারের কয়েকটি অবতারের মূর্তিও আছে।   

            ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে ( ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত। এই  দেবায়তনের বাইরের ছাদের কাছে পঙ্খ-পলস্তারায় একটি  প্রতিষ্ঠাফলক আছে।  

            গর্ভগৃহে গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ নিত্য পূজিত।

            তারাপদ সাঁতরার লেখা "কলকাতার মন্দির-মসজিদ ( স্থাপত্য-অলংকরণ-রূপান্তর )" গ্রন্থে এই দেবায়তনের উল্লেখ আছে। আমার  এই মন্দির / ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শনের তারিখ : ০২.১২.২০২১

রাধাগোবিন্দ  জিউ'র  মন্দির

শম্ভু সেনের ঠাকুরবাড়ি / রাধাগোবিন্দ ধাম, কলকাতা 

প্রতিষ্ঠাফলক 

রাধাগোবিন্দ  জিউ'র  মন্দির

মন্দিরের সামনের বিন্যাস 

গর্ভগৃহের সামনে 

কৃষ্ণ লীলা - ১

বাঁ দিকে, সংকীর্তন দৃশ্য 
ডান দিকে, কৃষ্ণের গোষ্ঠ লীলা  

ডান দিকে, কংসের কারাগারে দেবকী ও বসুদেব 

বাঁ দিকে, কংসের কারাগারে কৃষ্ণের জন্ম 
ডান দিকে, শিশু কৃষ্ণকে নিয়ে বসুদেবের যমুনা অতিক্রম
 

বাঁ দিকে, শিশু কন্যাকে আছড়ে মারতে উদ্যত কংস  
ডান দিকে, শিশু কন্যা অষ্টভুজা দেবীমূর্তি ধারণ করে আকাশ পথে অন্তর্হিতা হলেন
 

বাঁ দিকে, যমুনার ঘাটে যশোদার কোলে কৃষ্ণ 
ডান দিকে, সকটাসুর বধ 

বাঁ দিকে, ননী চোরা কৃষ্ণ 
ডান দিকে, বকাসুর বধ 



বাঁ দিকে, কৃষ্ণের কালীয় নাগ দমন 
ডান দিকে, কৃষ্ণ কর্তৃক গোপীদের বস্ত্রহরণ
 

বাঁ দিকে, কৃষ্ণের গিরিগোবর্ধনধারণ 
ডান দিকে, সখি পরিবৃত কৃষ্ণ 

বাঁ দিকে, নিধু-বনে কৃষ্ণ ও সখিরা 

বাঁ দিকে, ক্ষীর সাগরে নারায়ণ 
ডান দিকে, কৃষ্ণের মথুরাগমন দৃশ্য
 

ডান দিকে, কংস বধ 

রামরাজা 

বরাহ অবতার 

পরশুরাম 

নৃসিংহ অবতার  

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ১

গোবিন্দ ও রাধিকা বিগ্রহ - ২

 

              কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির
             -------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১

Brindaban Bihari Temple, Nimtala Ghat Street, Nimtala / Jorabagan, Kolkata

 বৃন্দাবন বিহারী মন্দির, নিমতলা ঘাট  স্ট্রিট, নিমতলা / জোড়াবাগান, কলকাতা 

                  শ্যামল কুমার ঘোষ 

            কলকাতার নিমতলা / জোড়াবাগান অঞ্চলের ২২ই, নিমতলা  ঘাট স্ট্রিটে বৃন্দাবন বিহারী মন্দির অবস্থিত। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর  স্থাপিত, পশ্চিমমুখী একটি দেউল ও দুটি আটচালা শিবের মন্দির সংযুক্তভাবে নির্মিত। মন্দিরগুলির সামনে অলিন্দ আছে। দেউল  মন্দিরের গর্ভগৃহে একটি সিংহাসনে বৃন্দাবনবিহারী-রাধিকা ও আর  একটি কৃষ্ণ-রাধিকা মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ও  নিত্য পূজিত। দুটি শিবমন্দিরে  দুটি কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত ও নিত্যপূজিত। মন্দিরের  সামনে কিছুটা ফাঁকা জায়গা  আছে। মন্দিরটি ঘেরা ক্ষেত্রে অবস্থিত। 

            মন্দিরটি ১৩৪১ বঙ্গাব্দের ২রা জ্যৈষ্ঠ বুধবার প্রতিষ্ঠিত হয়।  উপেন্দ্র মোহন চৌধুরীর দুই পুত্র সতীশ চন্দ্র চৌধুরী ও সুরেশ  চন্দ্র চৌধুরী তাঁদের পিতার স্মৃতিরক্ষার্থে এই মন্দির ও বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা  করেন। বিগ্রহের সিংহাসনের নিচে একটি শ্বেতপাথরের প্রতিষ্ঠাফলক আছে।

        সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি। এই মন্দিরের পাশেই চৌধুরীদের একটি বাড়িতে  ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হয়। বাড়িটির সামনে ক্লাবের শতবার্ষিকীর স্মরণে একটি ফলক লাগানো আছে। 

            তারাপদ সাঁতরার লেখা "কলকাতার মন্দির-মসজিদ ( স্থাপত্য-অলংকরণ-রূপান্তর )" গ্রন্থে এই দেবায়তনের উল্লেখ আছে। মন্দিরটি পরিদর্শনের তারিখ : ০২.১২.২০২১

দুটি  শিবমন্দির 

দেউল মন্দির 

গর্ভগৃহের সামনের বিন্যাস 

বৃন্দাবন বিহারী বিগ্রহ - ১

বৃন্দাবন বিহারী বিগ্রহ - ২

প্রতিষ্ঠাফলক 

দুটি শিবলিঙ্গের একটি 

সতীশ চন্দ্র চৌধুরী 

সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী 

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবার্ষিকী-স্মারক

 
        
  কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির

          -------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
 

সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২১

Shridhar Jue and Sharabhuj Gouranga Temple, Atchala goswami Bari, Rabindra Sarani, Kumartuli / Bagbazar, Kolkata

 শ্রীধর জিউ ও ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু  মন্দির, আটচালা গোস্বামী বাড়ি, রবীন্দ্র সরণি,  কুমারটুলি / বাগবাজার, কলকাতা  

                           শ্যামল কুমার ঘোষ 

             কলকাতার কুমারটুলি / বাগবাজার অঞ্চলের ৫৬২/ই, রবীন্দ্র  সরণিতে অবস্থিত শ্রীধর জিউ ও ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ মন্দির।  

            অল্প উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণমুখী, অলিন্দবিহীন  মন্দিরটি সমতলছাদবিশিষ্ট একটি দালান শৈলীর মন্দির। ১৩৪৬  বঙ্গাব্দে ( ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন নিতাই চন্দ্র  গোস্বামীর পুত্র গোবর্দ্ধন গোস্বামী। এই গোবর্দ্ধন গোস্বামী ছিলেন  নিত্যানন্দ প্রভুর বংশধর। গর্ভগৃহে একটি কাঠের সিংহাসনে শ্রীধর  জিউ ( নারায়ণ শিলা ) ও ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ বিগ্রহ নিত্য পূজিত। 

            বাংলার কিছু মন্দিরে ষড়ভুজ গৌরাঙ্গের দারুমূর্তি দেখা যায়।  ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ চৈতন্য মহাপ্রভুর একটি দিব্যরূপ। এই দিব্যরূপের মধ্যে শ্রীরামের ধনুর্বাণ, সন্যাসগ্রহণরূপ  শ্রীচৈতন্যের দণ্ড ও  কমণ্ডলু ও বংশীবাদনরত শ্রীকৃষ্ণের সমন্বয় ঘটেছে। এই দিব্যরূপটি  চৈতন্যচরিতামৃত ও চৈতন্যভাগবত অনুযায়ী যথাক্রমে শ্রীবাস  নবদ্বীপে এবং বাসুদেব সার্বভৌম নীলাচলে দর্শন করেছিলেন। ষড়ভুজ গৌরাঙ্গের এই দিব্যরূপ দর্শন দেওয়ার মধ্যে দিয়ে  শ্রীচৈতন্য বোঝাতে চেয়েছেন যে শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীগৌরাঙ্গ এক  এবং অভিন্ন। 

            ষড়ভুজ গৌরাঙ্গের রূপ-বর্ণনা আমরা পাই, নরোত্তমের  'চৈতন্যমঙ্গলে' :

   'হেনই সময়ে প্রভু ষড়ভুজ শরীর।    

   দেখি সার্বভৌম হইল আনন্দে অস্থির।।

   উর্ধ্ব দুই হাতে ধরে ধনু আর শর। 

   মধ্যে দুই হাতে ধরে মুরলী অধর।।

   নিম্ন দুই হাতে ধরে দণ্ড কমণ্ডল। 

   দেখি সার্বভৌম হইল আনন্দে বিহ্বল।।

            অর্থাৎ, ষড়ভুজ গৌরাঙ্গের উপরের দুটি হাতে থাকে  শ্রীরামচন্দ্রের ধনুর্বাণ, মাঝের দুটি হাত যেন শ্রীকৃষ্ণের বংশীবাদন  রূপ ও নিচের দুটি হাতে ধরা থাকে সন্যাসগ্রহণকারী শ্রীচৈতন্যের  দণ্ড ও কমণ্ডলু। আলোচ্য তিনটি দেবতার গাত্রবর্ণ যে রকম কল্পনা  করা হয় ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ মূর্তির হাতের বর্ণ সেই রঙের করা  হয়।   

             মন্দিরটি পরিদর্শনের তারিখ : ১৭.১২.২০২১

ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ বিগ্রহ 

মন্দিরের সামনের বিন্যাস 

গর্ভগৃহের সামনে 

শ্রীধর জিউ ও ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ বিগ্রহ

ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ বিগ্রহ

প্রতিষ্ঠাফলক 

শ্রীনিত্যানন্দ বংশ লিপি  

মন্দির-বাড়ির সামনের ফলক  

 বড় রাস্তার উপরে লাগানো ফলক 
     

            কী ভাবে যাবেন ?

            কুমোরটুলি থেকে রবীন্দ্র সরণির ডান দিকের ফুটপাত ধরে  বাগবাজারের দিকে হাঁটুন। ৫৫২, রবীন্দ্র সরণির একটি বাড়িতে এই  মন্দিরের একটি ফলক লাগানো আছে। এখানে ডান দিকের গলিতে  ঢুকে একটু এগুলেই বাঁ দিকে পড়বে ৫৬২/ই, রবীন্দ্র সরণিতে  অবস্থিত আমাদের কাঙ্ক্ষিত মন্দির।

 সহায়ক  গ্রন্থ / প্রবন্ধ :

     ১)  বাংলার মন্দির স্থাপত্য ও ভাস্কর্য : প্রণব রায়     

২)  মন্দির ভাস্কর্যে চৈতন্যলীলা : তারাপদ  সাঁতরা 

            কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির

*************************************************

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
 

রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১

Jagannath, Nityananda and Sharabhuj Gouranga Temple, Nimtala Ghat Street, Jorabagan, Kolkata

জগন্নাথ,  নিত্যানন্দ  ও  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গ  মন্দির,  নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিট,  জোড়াবাগান,  কলকাতা 

                           শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

  কলকাতার  নিমতলা  /  জোড়াবাগান  অঞ্চলের  ৬৯/৩,  নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিটে  আশুতোষ  লাহার  বাড়িতে  জগন্নাথ,  নিত্যানন্দ  ও  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গ  মন্দির  অবস্থিত।  

            অল্প  উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  তিন-খিলানবিশিষ্ট,    দক্ষিণমুখী,  অলিন্দযুক্ত  মন্দিরটি  সমতলছাদবিশিষ্ট  একটি  দালান  শৈলীর  মন্দির।  আসলে  এটি  একটি  বাড়ির  এক  তলার  অলিন্দযুক্ত  একটি  ঘর  মাত্র।  মন্দিরের  প্রবেশদ্বারের  উপরের  খিলানে  ব্যবহৃত  হয়েছে  ইউরোপীয়  ভাবধারায়  'ফ্যানলাইট'  ( Fanlight )।  তিনটি  প্রবেশ-দ্বারের  মাঝের  দ্বারের  সামনে  একটি  সিংহাসনে  দারু নির্মিত  জগন্নাথ,  নিত্যানন্দ  ও  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গ  বিগ্রহ  প্রতিষ্ঠিত।  এ  ছাড়া  দামোদর-রাধিকা,  গোপীনাথ-রাধিকা,  মদনমোহন-রাধিকা  ও  এক  সখি,  গোপাল  ও  অন্যান্য  বিগ্রহও  আছেন।  মন্দিরে  সমস্ত  বিগ্রহ  নিত্য  পূজিত। 

            শোনা  যায়,  শ্রীরামকৃষ্ণ  দেব  এই  মন্দিরে  দেব  দর্শনে  আসেন  এবং  দর্শনকালে  সমাধিস্থ  হন।

            বাংলার  কিছু  মন্দিরে  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গের  দারুমূর্তি  দেখা  যায়।  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গ  চৈতন্য  মহাপ্রভুর  একটি  দিব্যরূপ।  এই  দিব্যরূপের  মধ্যে  শ্রীরামের  ধনুর্বাণ,  সন্যাসগ্রহণরূপী  শ্রীচৈতন্যের  দণ্ড  ও  কমণ্ডলু  ও  বংশীবাদনরত  শ্রীকৃষ্ণের  সমন্বয়  ঘটেছে।  এই  দিব্যরূপটি  চৈতন্যচরিতামৃত  ও  চৈতন্যভাগবত  অনুযায়ী  যথাক্রমে  শ্রীবাস  নবদ্বীপে  এবং  বাসুদেব  সার্বভৌম  নীলাচলে  দর্শন  করেছিলেন।  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গের  এই  দিব্যরূপ  দর্শন  দেওয়ার  মধ্যে  দিয়ে  শ্রীচৈতন্য  বোঝাতে  চেয়েছেন  যে  শ্রীরাম,  শ্রীকৃষ্ণ  ও  শ্রীগৌরাঙ্গ  এক  এবং  অভিন্ন। 

            ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গের  রূপ-বর্ণনা  আমরা  পাই,  নরোত্তমের  'চৈতন্যমঙ্গলে' :

   'হেনই  সময়ে  প্রভু  ষড়ভুজ  শরীর।    

   দেখি  সার্বভৌম  হইল  আনন্দে  অস্থির।।

   উর্ধ্ব  দুই  হাতে  ধরে  ধনু  আর  শর। 

   মধ্যে  দুই  হাতে  ধরে  মুরলী  অধর।।

   নিম্ন  দুই  হাতে  ধরে  দণ্ড  কমণ্ডল। 

   দেখি  সার্বভৌম  হইল  আনন্দে  বিহ্বল।।

            অর্থাৎ,  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গের  উপরের  দুটি  হাতে  থাকে  শ্রীরামচন্দ্রের  ধনুর্বাণ,  মাঝের  দুটি  হাত  যেন  শ্রীকৃষ্ণের  বংশীবাদন  রূপ  ও  নিচের  দুটি  হাতে  ধরা  থাকে  সন্যাসগ্রহণকারী  শ্রীচৈতন্যের  দণ্ড  ও  কমণ্ডলু।  আলোচ্য  তিনটি  দেবতার  গাত্রবর্ণ  যে  রকম  কল্পনা  করা  হয়  ষড়ভুজ  গৌরাঙ্গ  মূর্তির  হাতের  বর্ণ  সেই   রঙের  করা  হয়।   

             মন্দিরটি  পরিদর্শনের  তারিখ :  ১৭.১২.২০২১

মন্দিরে গর্ভগৃহের সামনের বিন্যাস

 জগন্নাথ, নিত্যানন্দ, ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ ও অন্যান্য বিগ্রহ

জগন্নাথ, নিত্যানন্দ ও ষড়ভুজ গৌরাঙ্গ বিগ্রহ


দামোদর-রাধিকা বিগ্রহ

গোপীনাথ-রাধিকা বিগ্রহ

মদনমোহন-রাধা ও এক সখির বিগ্রহ


গোপাল বিগ্রহ

            কী  ভাবে  যাবেন ?

            যে  কোন  বাসে  নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিট  ও   বি  কে  পাল  এভিনিউ-এর  সংযোগস্থলে  আসুন।  আমি  আহিরীটোলা  বাসস্ট্যান্ড  থেকে  বি  কে  পাল  এভিনিউ  ধরে  এখানে  এসেছিলাম।  মোড়ের  কাছে  অবস্থিত  স্টেট  ব্যাঙ্ক  অফ  ইন্ডিয়া,  নিমতলা  ব্রাঞ্চের  বিপরীতে  ৬৯/৩,  নিমতলা  ঘাট  স্ট্রিটে  আমাদের  কাঙ্ক্ষিত  মন্দির।

 সহায়ক  গ্রন্থ / প্রবন্ধ :

     ১)  বাংলার  মন্দির  স্থাপত্য  ও  ভাস্কর্য  :  প্রণব  রায়     

২)  মন্দির  ভাস্কর্যে  চৈতন্যলীলা  :  তারাপদ  সাঁতরা 

              কলকাতার অন্যান্য মন্দির সম্বন্ধে জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন / লিংকের উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিন : 

                        কলকাতার  মন্দির

          -------------------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।