শিব মন্দির, বাহিরগড়, হুগলি
শ্যামল কুমার ঘোষ
হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথে হরিপাল ১৬ তম রেলস্টেশন। রেলপথে হাওড়া থেকে দূরত্ব ৪৫ কিমি। হরিপাল স্টেশন থেকে হরিপাল-জাঙ্গিপাড়া-জগৎবল্লভপুর রাস্তায়, জাঙ্গিপাড়া ব্লকের একটি গ্রাম বাহিরগড়।
জাঙ্গিপাড়া-কৃষ্ণনগরের অন্তর্ভুক্ত গ্রাম বাহিরগড়। এই অঞ্চল সিংহরায় বংশের গড়বেষ্টিত বাড়ির বহির্ভাগে অবস্থিত বলে ইহা বাহিরগড় নামে খ্যাত হয়। প্রাচীনকালে বারো বিঘা জমির উপর সিংহরায় বংশের প্রাসাদতুল্য বাড়ি ছিল। বর্তমানে তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমে রাজপূত-ক্ষত্রিয় সিংহরায় বংশ মুসলমানদের অত্যাচারে দেশ ত্যাগ করে বাংলায় আসেন এবং ধীরে ধীরে জমিদারি অর্জন করে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। এই সিংহরায়রা বারাণসীর কাছে জৌনপুর জেলার কেশব হাজারী এবং তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজা বিষ্ণুদাসের বংশধরত্ব দাবি করে। কেশবের কনিষ্ঠ পুত্র রাজা ভারামল্ল তারকেশ্বরের নিকট রামনগরে এসে বাস করেন।
বাহিরগড়ে অবস্থিত টেরাকোটা অলংকারযুক্ত দামোদর মন্দিরের বিবরণ আগেই দিয়েছি। মন্দিরটি সম্বন্ধে জানতে ক্লিক করুন : দামোদর মন্দির, বাহিরগড় বাহিরগড়ে অমরেন্দ্রনাথ সিংহরায় প্রতিষ্ঠিত একটি শিবমন্দির আছে। শিবলিঙ্গের নাম বিশ্বেশ্বর। মন্দিরটি উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, পশ্চিমমুখী, একদ্বারবিশিষ্ট, আটচালা শৈলীর। সামনে টিনের ছাউনি। কয়েকবার সংস্কৃত মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাকাল ১১২৬ বঙ্গাব্দ। মন্দিরটির সামনের দিক আগে টেরাকোটা অলংকরণে অলংকৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। গর্ভগৃহে কাল পাথরের শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত। শিবলিঙ্গটি প্রচলিত শিবলিঙ্গের মত নয়, অন্য রকমের।
মন্দিরটি পরিদর্শনের তারিখ : ১৬.১২.২০১৬
বাহিরগড়ের শিবমন্দিরে যেতে হলে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে উঠুন। নামুন হরিপাল স্টেশনে। স্টেশনের পাশ থেকে জগৎবল্লভপুর / বড়গাছিয়া গামী বাস বা ট্রেকারে উঠুন। যদি তা না পান তবে জাঙ্গিপাড়া থানা গামী ট্রেকারে উঠুন। জাঙ্গিপাড়া থানা থেকে বাস বা 'ম্যাজিক' গাড়িতে উঠে পৌঁছে যান বাহিরগড়। সেখান থেকে হেঁটে মন্দির। খাবার সঙ্গে নেবেন।
শিবমন্দির দেখে চলুন কৃষ্ণনগর কালীতলায় আনন্দময়ী কালী মন্দির দেখতে।
সহায়ক গ্রন্থাবলী :
১) হুগলি জেলার পুরাকীর্তি : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন : 9038130757 এই নম্বরে।
![]() |
অমরেন্দ্রনাথ সিংহরায় প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দির |
![]() |
শিবলিঙ্গ |
বাহিরগড়ের শিবমন্দিরে যেতে হলে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে উঠুন। নামুন হরিপাল স্টেশনে। স্টেশনের পাশ থেকে জগৎবল্লভপুর / বড়গাছিয়া গামী বাস বা ট্রেকারে উঠুন। যদি তা না পান তবে জাঙ্গিপাড়া থানা গামী ট্রেকারে উঠুন। জাঙ্গিপাড়া থানা থেকে বাস বা 'ম্যাজিক' গাড়িতে উঠে পৌঁছে যান বাহিরগড়। সেখান থেকে হেঁটে মন্দির। খাবার সঙ্গে নেবেন।
শিবমন্দির দেখে চলুন কৃষ্ণনগর কালীতলায় আনন্দময়ী কালী মন্দির দেখতে।
সহায়ক গ্রন্থাবলী :
১) হুগলি জেলার পুরাকীর্তি : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
----------------------------------------------------------
রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন : 9038130757 এই নম্বরে।
কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।
--------------------------------------------------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন