Pages

মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২

Patbari of Ramkanai Thauur, Muluk, Bolpur, Birbhum

 

শ্রীশ্রী রামকানাই  ঠাকুরের পাটবাড়ি,  মুলুক, বোলপুর,  বীরভূম  

শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            বীরভূম  জেলার  বোলপুর  থানার  অন্তর্গত,  বোলপুর-পালিতপুর  সড়কে  অবস্থিত  এবং  বোলপুর  থেকে  ৪  কিমি  দূরের  একটি  গ্রাম  মুলুক।  এখানে  শ্রীরামকানাই  ঠাকুরের  পাটবাড়ি  ও  সমাধি  আছে।  শ্রীচৈতন্য  মহাপ্রভুর  অন্যতম  পার্শ্ব  সহচর  পণ্ডিত  ধনঞ্জয়ের  কনিষ্ঠ  সহোদর  সঞ্জয়ের  পৌত্র  এবং  যদুচৈতন্যের  পুত্র  শ্রীরামকানাই  ঠাকুর  শ্রীচৈতন্যদেবের  প্রায়  শত  বৎসর  পরে  আবির্ভূত  হন। কথিত  আছে,  একনিষ্ঠ  সাধক  শ্রীরামকানাই  ঠাকুরের  গুণাবলী  এবং  অলৌকিক  ক্ষমতার  বিষয়ে  জানতে  পেরে  রাজনগর  রাজ  এই  সাধু সন্দর্শনে  আসেন।  ঠাকুরের  ক্ষমতায়  মুগ্ধ  হয়ে  দেবসেবার  জন্য  জমি  দান  করতে  ইচ্ছা  প্রকাশ  করলে  শ্রীরামকানাই  ঠাকুর  ভোগের  অন্ন  যতদূর  পর্যন্ত  ছড়াতে  পেরেছিলেন  সেই  সীমা  পর্যন্ত  সমস্ত  জমি  রাজনগর  রাজ  দেবসেবার  জন্য  দান  করেছিলেন। 

            এখানে  শ্রীরামকানাই  বৃন্দাবনের  গুপ্ত  অস্তিস্ত  অনুভব  করে  মুলুক  শ্রীপাটের  প্রতিষ্ঠা  করেন।  ঠাকুবাড়িতে  পাঁচখিলানবিশিষ্ট  একটি  দালান  মন্দিরে   কষ্টিপাথরের  শ্রীশ্রীরাধাবল্লভ  জিউর  ও  অষ্টধাতুর  শ্রীমতীর  মূর্তি  এবং  দারু  নির্মিত  শ্রীচৈতন্য  বিগ্রহ  প্রতিষ্ঠা  করেন।  দেবী  অপরাজিতা  ও  রামেশ্বর  শিবমন্দিরও  এখানে  অবস্থিত।

            রাধাবল্লভ  মন্দিরের  সামনে  একটি  চাঁদনি  আকৃতির  নাটমন্দির  বর্তমান।  মন্দিরে  কোন  অলঙ্করণ  নেই।  শ্রীরামকানাই  ঠাকুরের  আবির্ভাব  কালে  সমাজে  শাক্ত  ও  বৈষ্ণব  ধর্মাবলম্বীদের  মধ্যে  তীব্র  বৈরীভাব  বিদ্যমান  ছিল।  রামকানাই  ঠাকুর  ধর্মের  মধ্যে  সংকীর্ণতার  কোন  প্রশয়  না  দিয়ে  সমন্বয়  সাধন  করেন।  একদিকে  তিনি  যেমন  শ্রীচৈতন্য  বিগ্রহ  ও  রাধাকৃষ্ণের  যুগল-বিগ্রহ  প্রতিষ্ঠা  করেন  তেমনি  শ্রীরামেশ্বর  শিব  এবং  অপরাজিতা  দেবীর  মূর্তি  স্থাপন  করে  শিব  ও  শক্তি  আরাধনার  ব্যবস্থা  করেন।  

            গোষ্ঠাষ্টমীর  সময়  চারদিনব্যাপী  মুলুকে  মেলা  হয়।  ওই  মেলায়  অন্যতম  আকর্ষণ  রসপর্যায়ের  কীর্তন  গান।  মেলায়  বিভিন্ন  স্থান  থেকে  আগত  অনেক  বাউলের  সমাবেশ  ঘটে। 


শ্রীরামকানাই ঠাকুরের পাটবাড়ির তোরণ-দ্বার   

পাটবাড়ির প্রবেশ-দ্বার 

শ্রীশ্রীরাধাবল্লভ মন্দির 

নাটমন্দির 

ফলক 

শ্রীরামকানাই ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত তমাল বৃক্ষ 

শ্রীরামকানাই ঠাকুরের কন্যার প্রতিষ্ঠিত অশ্বত্থ গাছ 

শ্রীরামকানাই ঠাকুরের সমাধি 

শ্রীশ্রীরাধাবল্লভ ও  অন্যান্য বিগ্রহ 

শ্রীশ্রীরাধাবল্লভ ও শ্রীমতি বিগ্রহ

            কলকাতা  থেকে  কী  ভাবে  যাবেন ?

            কলকাতা   থেকে  ট্রেনে  বোলপুর-শান্তিনিকেতন।  বোলপুরের  জামবুনি  বাসস্ট্যান্ড  থেকে  বাসে  উঠে  মুলুক  স্টপেজে  নামুন।  কাছেই  শ্রীরামকানাই  ঠাকুরের  পাটবাড়ি।

সহায়ক  গ্রন্থ :

               ১)  বীরভূম  জেলার  পুরাকীর্তি :  দেবকুমার  চক্রবর্তী 

 -------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।

                                

Chandranath Shib Temple, Hetampur, Birbhum

 

চন্দ্রনাথ  শিব  মন্দির,  হেতমপুর,  বীরভূম 

শ্যামল  কুমার  ঘোষ 

            বীরভূম  জেলার  দুবরাজপুর  থানার  অন্তর্গত  এবং  দুবরাজপুর  থেকে  ৩.৬  কিমি  পূর্বে  অবস্থিত  হেতমপুর  একটি  সমৃদ্ধিশালী  গ্রাম।  গ্রামে  হেতমপুরের  তৎকালীন  রাজা  কৃষ্ণচন্দ্র  কর্তৃক  ১২৫৪  বঙ্গাব্দে  অর্থাৎ  ১৮৪৭  খ্রীষ্টাব্দে  প্রতিষ্ঠিত  চন্দ্রনাথ  শিব  মন্দিরটি  উল্লেখযোগ্য।  শোনা  যায়,  বাংলার  মন্দির  গবেষণার  পথিকৃৎ  ডেভিড  ম্যাককাচ্চান  প্রখ্যাত  চলচিত্রকার  সত্যজিৎ  রায়ের  আহ্বানে  এই  হেতমপুরে  আসেন  এবং  এই  চন্দ্রনাথ  শিব  মন্দিরের  কারুকার্য  দেখে  বাংলার  মন্দির  গবেষণার  কাজে  ব্রতী  হন। 

            উঁচু  ভিত্তিবেদির  উপর  স্থাপিত,  পূর্বমুখী  মন্দিরটি  রাসমঞ্চের  আকৃতিবিশিষ্ট,  অষ্টকোণাকৃতি  ও  নয়টি  চুড়াযুক্ত।  মন্দিরের  সামনের  তিনটি  দিক  টেরাকোটা  অলংকারে  অলংকৃত।  টেরাকোটা  ফলকে  গণেশজননী, জগদ্ধাত্রী,  nude woman,  সিংহবাহিনী  প্রভৃতি  হিন্দু  পৌরাণিক  ও  সামাজিক  দৃশ্যাবলী   রূপায়ণ  ছাড়াও  ইউরোপীয়  প্রভাবে  মন্ডিত  শিল্পশৈলীর  সার্থক  রূপায়ণ  এই  মন্দিরে  প্রকাশ  হয়েছে।  মন্দিরে  ইউরোপীয়  প্রভাবে  উৎকীর্ণ  বিভিন্ন  জননায়ক,  কবি,  রানি  ভিক্টোরিয়া  ইত্যাদির  প্রতিকৃতি  ছাড়াও  ইউরোপীয়  অলংকার  শৈলীও  সুন্দরভাবে  মৃৎফলকে  রূপায়িত  দেখা  যায়।  মন্দির  চূড়ায়  প্রতিষ্ঠিত  মূর্তিগুলি  দেবদূত  দেবকন্যাগণকে  সূচিত  করে।  ইউরোপীয়  নরনারীর  মুখাবয়বগুলি  মৃৎফলকে  সুন্দরভাবে  প্রতিফলিত  হয়েছে।  ইংরেজ  শাসকদের  সুনজরে  থাকার  জন্যই  সম্ভবত  মন্দিরটি  এমনভাবে  মন্ডিত  করা  হয়েছিল।  ১৮৪৭  খ্রীষ্টাব্দে  মন্দিরটি  প্রতিষ্ঠিত  হয়  এবং  ২০১৬  খ্রীষ্টাব্দে  মন্দিরটির  পূর্ণ  সংস্কার  করা হয়।  মন্দিরে  একটি  শ্বেতপাথরের  ফলক  লাগানো  আছে।  গর্ভগৃহে  শ্বেতপাথরের  শিবলিঙ্গ  নিত্য  পূজিত।  বাংলার  টেরাকোটা  মন্দিরগুলির  মধ্যে  এই  চন্দ্রনাথ  শিব  মন্দিরটি  সত্যই  অনন্য।  মন্দিরটি  রাজ্যসরকার  কর্তৃক  সংরক্ষিত।

চন্দ্রনাথ শিব মন্দির, হেতমপুর, বীরভূম  

বাঁ দিকের দেওয়ালের বিন্যাস 

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ২

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৩

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৪

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৫

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৬

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৭

বাঁ দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৮
( দেবী জগদ্ধাত্রী )

মাঝের দেওয়ালের বিন্যাস

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক -

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ২

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৩
( রানি  ভিক্টোরিয়া )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৪
( দেবী সিংহবাহিনী )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৫
( Coat of Arms )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৬

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৭
রানি  ভিক্টোরিয়া ) 

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৮
( মুখের সারি )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৯
( মুখের সারি )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১০

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১১
( Coat of Arms )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১২

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৩
( দুই ইংরেজ রমণী )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৪
( কমলে কামিনী মূর্তি )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৫
( Coat of Arms )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৬

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৭

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৮

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১৯
( Coat of Arms )

মাঝের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ২০
( শিব শিশু গণেশকে পার্বতীর কোল থেকে নিজের কোলে নিচ্ছেন )

ডান দিকের দেওয়ালের বিন্যাস

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ২

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৩

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৪
( কৃষ্ণ-রাধিকা )

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৪

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৫
( nude woman )


ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৬
( চিন্তামগ্ন ইংরেজ রমণী )

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৭

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৮

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ৯
রানি  ভিক্টোরিয়া )

ডান দিকের দেওয়ালের টেরাকোটা ফলক - ১০

মন্দিরের চূড়া 
চন্দ্রনাথ শিবলিঙ্গ 

প্রতিষ্ঠাফলক

             কলকাতা  থেকে  কী  ভাবে  যাবেন ?

            কলকাতা   থেকে  ট্রেনে  বোলপুর-শান্তিনিকেতন।  বোলপুরের  জামবুনি  বাসস্ট্যান্ড  থেকে  দুবরাজপুর  গামী  বাসে  হেতমপুর  মোড়ে  নামুন।  সেখান  থেকে  টোটোতে  বা  হেঁটে  মন্দির।

সহায়ক  গ্রন্থ :

               ১)  বীরভূম  জেলার  পুরাকীর্তি :  দেবকুমার  চক্রবর্তী 

 -------------------------------

রামায়ণের ৭টি খণ্ডের ৬৪ টি উপাখ্যান ও ১৮৫ টি টেরাকোটা ফলকের আলোকচিত্র সংবলিত আমার লেখা এবং 'রা প্রকাশন' কর্তৃক প্রকাশিত বই 'বাংলার টেরাকোটা মন্দিরে রামায়ণ' প্রকাশিত হয়েছে।


 বইটি ডাক যোগে সংগ্রহ করতে হলে যোগাযোগ করুন :  9038130757 এই নম্বরে। 

কলকাতার কলেজস্ট্রিটের মোড়ে দুই মোহিনীমোহন কাঞ্জিলালের কাপড়ের দোকানের মাঝের রাস্তা ১৫, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিটের উপর অবস্থিত বিদ্যাসাগর টাওয়ারের দু'তলায় 'রা প্রকাশনে'র দোকান। ওখান থেকে বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। কোনও অসুবিধা হলে উপরোক্ত নম্বরে ফোন করতে পারেন।